ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল আবার সচল

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল আবার  সচল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সাময়িক বন্ধ থাকার পর শুক্রবার বিকেল থেকে পুরোপুরি চালু হয়েছে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চিকিৎসাসেবাসহ সার্বিক কার্যক্রম। তবে অগ্নিকান্ডে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আপাতত শিশু ও গাইনি রোগীদের এই হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হচ্ছে। গ্যাসের সংযোগ না থাকায় এখনও শুরু হয়নি আইসিইউ রোগী ভর্তি কার্যক্রম। তবে শীঘ্রই আইসিইউ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর অগ্নিকান্ডের উৎপত্তির কারণ উদ্ঘাটনে সাত সদস্য বিশিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে হাসপাতালে ৮০ শতাংশের বেশি রোগীকে ফিরে আসতে দেখা গেছে। কিছুসংখ্যক নতুন রোগীও ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অগ্নিকান্ডের পর হাসপাতাল ছেড়েছে এমন রোগীদের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ফিরতে দেখা গেছে। নতুন রোগীরা যেমন আসছেন তেমনি হাসপাতাল ছাড়ছেনও কেউ কেউ। ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও গাইনি ওয়ার্ড সিলগালা করে দেয়া হলেও বাকি ওয়ার্ডগুলোতে শিশু ও গাইনি রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। হাসপাতালের কিছু কিছু জায়গায় পোড়াগন্ধ ও পানি রয়ে গেছে। হাসপাতালের এনআইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, জরুরী বিভাগ এবং বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড পুরোদমে চালু হয়েছে। তবে প্রস্তুত থাকার পরও সিজারিয়ান রোগী না থাকায় গাইনি ওয়ার্ডে কোন অপারেশন হয়নি। হাসপাতাল ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, কেউ এ্যাম্বুলেন্সে করে, কেউ সিএনজি বা রিক্সায় করে রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে ফিরে আসছেন। তাদের একজন আলাউদ্দিন হাওলাদার (৪৫) দৈনিক জনকণ্ঠ সংবাদদাতাকে জানান, কিডনিজনিত সমস্যা নিয়ে তিনি গত সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে অগ্নিকান্ড দেখা দিলে তিনি দারুস সালাম এলাকার বাসায় চলে যান। তারপর বিভিন্ন খবর মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার সংবাদ পেয়ে তিনি শুক্রবার দুপুরে এসে হাসপাতালে কিডনি ওয়ার্ডে ভর্তি হন বলে জানান আলাউদ্দিন হাওলাদার। দুপুর চারটার দিকে ১নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে ৮৭ শয্যাবিশিষ্ট ওই ওয়ার্ডে ৮৪ জন রোগী ফিরে এসেছেন। তবে ১০ নং ওয়ার্ডের ৪৫ জন রোগীর মধ্যে ২৭ জন এবং ১২ নং ওয়ার্ডের ৬৪ জনের মধ্যে ৪৪ জন রোগী ভর্তি ফিরেছে। ১২ নং ওয়ার্ডের গাইনি চিকিৎসক অধ্যাপক ড. ফাতেমা আশরাফ জানান, গাইনি ওয়ার্ডে ডেলিভারি রোগী কম থাকার আজ কোন অপারেশন হয়নি। আর ডেলিভারি ব্যাপারে কেউ ঝুঁকি না নিয়ে অন্য হাসপাতাল থেকে কম ফিরছে। তবে অপারেশনের পুরো টিম প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান ড. ফাতেমা। ৭ নং ওয়ার্ডের ৫৮ জন রোগীর মধ্যে ভর্তি আছেন ৪২ জন। হাসপাতালের অন্য সব ওয়ার্ডেও একই চিত্র দেখা গেছে। এদিকে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ উত্তম কুমার বডুয়া সকাল থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেছেন। হাসপাতালে জরুরী বিভাগে অন্য দিনের তুলনা শুক্রবার রোগী ভর্তি কম ছিল। অন্যান্য দিনে যেখানে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি হতো শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ১৮ জন রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার হাসপাতালে মোট রোগী ছিল ১ হাজার ১৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৩২ জন, মহিলা ৫৭২ জন এবং শিশু ৭৪ জন। রাতে সবাইকে বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলেও ফিরে আসা রোগীদের আবারও চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
×