ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চলে গেলেন কবি আল মাহমুদ

প্রকাশিত: ১৩:২৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 চলে গেলেন  কবি  আল মাহমুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে, জনপ্রিয় এ কবিতার রচয়িতা কবি আল মাহমুদ শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর শংকরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিলাহি...রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর খবরে সাহিত্যাঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। পারিবারিক বন্ধু ও অনুরাগী আবিদ আজম আল মাহমুদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে আল মাহমুদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। রাত ১১টা ৫ মিনিটে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তিনি নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে জাতীয় ঈদগাহে জানাজা এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। তার জন্ম ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মৌড়াইলে। তার পিতা আব্দুর রব মীর ও মা রৌশন আরা বেগম। আল মাহমুদের প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দির সাধনা হাই স্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকু- হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। সংবাদপত্রে লেখালেখির সূত্র ধরে ১৯৫৪ সালে আল মাহমুদ ঢাকায় আসেন। আল মাহমুদ একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৬৩ সালে লোক লোকান্তর কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি পাঠক মহলে সাড়া ফেলেন। এরপর কালের কলস (১৯৬৬), সোনালি কাবিন (১৯৬৬), মায়াবী পর্দা দুলে উঠো (১৯৬৯) কাব্যগ্রন্থগুলো তাকে বাংলা ভাষার অন্যতম কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় অধ্যায়ে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাকভঙ্গিতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন।। ১৯৬৮ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সহপরিচালক পদে নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি পরিচালক হন। ১৯৯৩ সালে পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। কবি হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত হলেও ছাত্র শিবিরের কর্মীদের প্রশংসা করে তিনি বিভিন্ন সময় বিতর্কিত হয়েছেন।
×