ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি জায়গা দখল করে দোকানপাট

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সরকারি জায়গা দখল করে দোকানপাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা ॥ বেড়া উপজেলার পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের হরিরাথপুর গ্রামের পুকুরচালা হিন্দু পাড়ায় চলাচলের রাস্তা না রেখে দোকানপাট ও অফিস নির্মাণ করায় বসবাসরত দেড় শতাধিক হিন্দু পরিবারের প্রায় ৫০০ সদস্য প্রতিদিন নানা দুর্ভোগের শিকার হয়ে বাড়িতে যাতয়াতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারি জায়গা দখল করে এসব স্থাপনা নির্মাণ করায় এসব পরিবার দেড় ফুট রাস্তা দিয়ে বাড়িতে ঢুকতে হচ্ছে। একজন ঢুকতে গেলে অন্যজনকে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নমহলে ধর্ণা দিলেও কোন সুরাহা হচ্ছে না। জানা যায়, বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড হরিরাথপুর গ্রামের পুকুরচালা পাড়ায় একটি প্রভাবশালি মহল এলকাবাসির যাতায়াতের রাস্তা না রেখে দোকানঘর, গুদামঘর ও অফিস ঘর নির্মাণ করেছে। এতে ওই এলাকার দেড় শতাধিক হিন্দু পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষের বসবাস। এলাকাবাসির অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালীরা সরকারি জায়গা দখল করে দোকান, গুদামঘর ও অফিস নির্মাণ করায় তারা বাড়িতে স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করতে পারছে না। ভ্যান চলাচলের রাস্তা না থাকায় তারা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করতে হাট-বাজারেও যেতে পারে না। দেড় ফুট রাস্তা দিয়ে একজন কোন রকমে বের হতে পারলেও কোন আসবাবপত্র অথবা একসাথে একাধিক ব্যক্তি চলাচল করা যাচ্ছে না। কোন মানুষ অসুস্থ বা মারা গেলে তাকে তিন জন মিলে মাথার উপরে করে এলাকা থেকে বের করতে হয়।এলকাবাসীর অভিযোগ সবাই বিষয়টি জানলেও দখলকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। ওই পাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা তারাপদ দাস জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে দেখেছি এখানে ১০ফিটের একটি মুল রাস্তা ছিল কিন্তু পর্যায়ক্রমে প্রভাবশালীরা সেই রাস্তা দখলে নিয়ে কয়েকটি আধা পাকা ও পাকা ইমারত নির্মাণ করেন। একশত ফিট লম্বা রাস্তা বর্তমানে দখল করায় চওরায় দেড় ফিটে দাড়িয়েছে। ওদের (প্রভাবশালিদের) জায়গা তো দুই শতাংশ করে কিন্তু দখলে নিয়ে আছে ছয়-সাত শতাংশ । একই পাড়ার বাসিন্দা মানিক মিয়া,রিপন কুন্ডু, রবিন্দ্রনাথ ঘোষসহ কয়েকজন জানান, জন্মের পর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছি। কিন্তু প্রভাবশালীরা দিনের পর দিন রাস্তাটি দখল করায় তারা এখন বাড়ি থেকে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছেন না। এর আগে পাবনা-২ আসনের সাবেক এমপি আজিজুল হক আরজুকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি আশ্বাস দিলেও কোন কাজে আসেনি। স্থাপনা নির্মাণকারি নজরুল ইসলাম জানান,পিছনে যারা বাস করেণ তাদেরতো নিজের জায়গা না ওরা সবাই অন্যের জায়গায় থাকে। তবে যাতায়াতের বিষয়টা আমাকে অনেক আগেই বলেছে কিন্তু এখন তা সম্ভব না। পুনরায় যদি ঘর নির্মাণ করি তবে একটু জায়গা রেখে দেব । আর এক স্থাপনা নির্মাণকারি আব্দুুল আউয়াল জানান, এই রাস্তার বিষয়ে ওরা সবাই সাবেক এম.পি সাহেবের কাছে বলেছিল তাই আমি তার কথা মতই আধাফিট জায়গা রেখেই ঘর তুলেছি । পাশের জায়গার মালিক যদি জায়গা না রাখে তাহলে আমার কিছু করার নেই। পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর কোরবান আলী জানান, যাদের জমি তারা যদি রাস্তায় জায়গা না দেয় তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই । ভুমি অফিস তথ্য মতে, নজরুল ইসলামের ১০৮/১১৪ নম্বর দাগে ০.০৩শতাংশ এবং ২১৫/১৯১ দাগে ০.১০শতাংশ জমি রয়েছে। অন্য জমির মালিক আব্দুল আউয়াল ২১৫/১৯১ নম্বর দাগে ০.০২শতাংশ এবং ২১৬/১৯০ নম্বর দাগে ০.০০ শতাংশ জমি রয়েছে। তবে এরা তাদের জায়গার চেয়েও একটু বেশি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মান করেছে। এ বিষয়ে পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে এম রফিকুল্লাহ বলেন, পুকুরচালা এলাকায় বসবাসরত হিন্দু সম্পদ্রায়ের মানুষগুলোর জন্য সত্যিই চলাচলের জন্য কোন রাস্তা নেই। যা আছে তা দেড় ফিটের বেশি হবে না। কমপক্ষে চার ফিট চওড়া রাস্তা হলে ভালো হয়। যাদের ঘর আছে তাদের ভাঙার জন্য সময় দিতে হবে অচিরেই এ সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ শুরু করা হবে।
×