ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তালতলীতে সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙ্গে দিল সন্ত্রাসীরা

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

তালতলীতে সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙ্গে দিল সন্ত্রাসীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ তালতলীতে জমি নিয়ে রিবোধের জের ধরে এক সাংবাদিককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা গুড়িয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গতরাত পৌনে আটটার দিকে সোনাকাটা ইউনিয়নের বড় আমখোলা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। মোস্তফা কামাল নামের ওই সাংবাদিক আঞ্চলিক দৈনিক কীর্তনখোলা পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি। জানাগেছে, ১৬ একর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফারুক খানের সাথে সাংবাদিক মোস্তফা কামালের বিরোধ চলে আসলে। ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন ফারুক খান। ওই মামলায় তিনি হেরে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হন তিনি। গতরাত পৌনে আটটার দিকে সাংবাদিক মোস্তফা কামাল লাউপাড়া বাজারে নিজের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মোটর সাইকেল যোগে গ্রামের বাড়ী বড় আমখোলায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে নাজির বাড়ী জামে মসজিদের কাছে পৌছলে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী ফারুক খাঁনের নেতৃত্বে সোহেল খান, জুয়েল খান, সজিব খান, মোশাররফ হাওলাদার, মিলন হাওলাদার, মাসুম হাওলাদার, রাসেল হাওলাদার, শহীদ মোল্লা, কামাল খান ও রনি হাওলদার রাস্তায় রশি দিয়ে তার মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। পরে সন্ত্রাসীরা এলোপাতারি তাকে লোহার রড়, পাইপ ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তার ডাক চিৎকার স্থানীয় লোকজন ছুটে আসলে তাদেরকেও সন্ত্রাসীরা ধাওয়া করে। সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে কামালের দুই পা, বাম হাত ও ডান হাতের আংগুল ভেঙ্গে দেয়। এ সময় কামালের কাছে থাকা এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ও একটি এন্ড্রয়েট মোবাইল ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে তালতলী থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী ও সুলতান ফরাজী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুব মোর্শ্বেদ রানা বলেন, মোস্তফা কামালের দু পা ও হাত ভেঙ্গে গেছে। তিনি আরো বলেন, ডান পায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার সারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সরকারের এক কর্মকর্তার পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসী ফারুক খান তার বাহিনী দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সে ওই কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে এলাকার গরীব অসহায় মানুষের জমিজমা ভূয়া দলিল তৈরি জমি জোর করে দখল করছে। তাকে কেউ কিছু বললেই তার উপর নেমে আসে হামলা ও মামলা। ফারুক খান ও তার ছেলেরা এই এলাকায় ডাকাত হিসেবে পরিচিত। গুরুতর আহত মোস্তফা কামালের বাবা শাহ আলম মুন্সি অভিযোগ করে বলেন, ১৬ একর জমি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। ওই জমি ফারুক খান জাল কাগজপত্র তৈরি করে নিজের দাবী করছে। ওই জমি নিয়ে ফারুক খান আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি হেরে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফারুক খান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হাত, পা ভেঙ্গে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে মারধরের সময় উল্লাস করে বলে আমাদের ক্ষমতা দেখ। আমাদের সাথে বুঝবি। এখন কবরে গিয়ে বুঝপাড়া কর। তালতলী থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তিনি আরো বলেন এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×