ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সন্ত্রাস দমনে পাশে থাকার আশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রের ॥ ঘটনায় জড়ানোয় পাকিস্তানের প্রতিবাদ

পাল্টা ব্যবস্থা নেবে ভারত

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পাল্টা ব্যবস্থা নেবে ভারত

কাশ্মীর উপত্যকার পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার পাল্টা ব্যবস্থার নেবে ভারত। শুক্রবার মোদি সরকার দেশটির সেনাবাহিনীকে এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ভারতের জরুরী নিরাপত্তা বিষয়ক সিসিএসের এক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, তার দেশের সেনাবাহিনী এর পাল্টা ব্যবস্থার তারিখ, স্থান ও কিভাবে জবাব দেয়া যায় তা নির্ধারণ করবে। এদিকে পুলওয়ামা হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করায় শুক্রবার দেশটিতে নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত সহকারী হাইকমিশার গৌরব আলুওয়ালিয়াকে ডেকে পাঠায় পাক সরকার। এ সময় গৌরব আলুওয়ালিয়ার কাছে এ ঘটনায় ইসলামাবাদকে জড়ানোয় কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, পুলওয়ামা হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার বিষয়টি ভিত্তিহীন অভিযোগ ছাড়া আর কিছুই নয়। খবর বিবিসি, ডন, এনডিটিভি ও পিটিআই অনলাইনের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ভারতের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেস্টা জন বোল্টন ভারতের নিরাপত্তা উপদেস্টা অজিত দোভালকে টেলিফোন করেন। এ সময় জন বোল্টন কাশ্মীরে বৃহস্পতিবারের ওই জঙ্গী হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে ভারতকে পূর্ণ সহায়তার প্রস্তাব দেন। গণমাধ্যমকে জন বোল্টন বলেন, আমি অজিত দোভালকে বলেছি, ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা পাকিস্তানকে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়েছি যে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল বন্ধে সকল প্রকার সহায়তা বন্ধ করতে হবে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের সিসিএসের ওই বৈঠকে পুলওয়ামার ঘটনায় পাল্টা ব্যবস্থা নিতে দেশটির সেনাবাহিনীকে শুক্রবার রাজনৈতিক সবুজ সংকেত দেয়া হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত এক সূত্র জানায়, বৈঠকে ভারতের চির বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের কথা বলা হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদির পাশাপাশি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত উপস্থিত ছিলেন। ওই সূত্র আরও জানায়, পুলওয়ামার হামলার জবাবে ভারতের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়। এ সময় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে উরি হামলার পর পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারত যেভাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল সেরকম সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সম্ভাবনার কথাও ভাবা হয়। ওই সিসিএস বৈঠকে উপস্থিত একজন বলেন, পাকিস্তান আমাদের আরও ক্ষতি করছে, আমরা ব্যবস্থা নেব। একই দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর প্রদেশের ঝাঁসিতে এক জনসভায় বলেন, আমাদের সাহসী জওয়ানরা দেশ সেবা করতে প্রাণ দিয়েছে। আমি আজ এই সাহসীদের ভূমি ঝাঁসিতে দাঁড়িয়ে ভারতের একশ ৩০ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, জওয়ানদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেয়া হবে না। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারের এই হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দেয়া সবচেয়ে সুবিধাভোগী দেশের মর্যাদা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৬ সাল থেকে ভারতের কাছ থেকে পাকিস্তান এ সুবিধা পেয়ে আসছিল। বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার আওয়ান্তিপুরা এলাকায় ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর ৭৮টি গাড়ি লক্ষ্য করে জঙ্গী হামলা চালানো হয়। হামলায় সিআরপিএফ’র ৪০ সদস্য নিহত এবং বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হন। জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, পাকিস্তান ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদসহ বেশ কয়েকটি দেশ এ হামলার নিন্দা জানায়।
×