ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী নির্মূলের মতো ইয়াবা নির্মূলে এ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে

প্রকাশিত: ১০:২৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

  জঙ্গী নির্মূলের মতো ইয়াবা নির্মূলে এ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে

শংকর কুমার দে ॥ জঙ্গীগোষ্ঠীগুলো নির্মূল করার মতোই মাদক ইয়াবা ব্যবসা বন্ধে এ্যাকশন প্লান করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেষে প্রায় ৩৭ ইয়াবা কারখানা গড়ে তুলেছে মিয়ানমার। এসব ইয়াবা কারখানার অধিকাংশের মালিক ময়ানমারের সামরিক জান্তার সদস্যরা। প্রতি বছর তারা ইয়াবা কারখানাগুলোয় উৎপাদিত ইয়াবা বাংলাদেশে বিক্রি করে নিয়ে যাচ্ছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। ইয়াবা মাদক মাফিয়াদের নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক পরিসরে বিস্তৃত। কক্সবাজারে এই চক্রের অন্তত ১০টি সিন্ডিকেট আছে বলে খোঁজ পেয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণের মধ্যেও কিভাবে কারা ইয়াবার চালান নিয়ে আসছে তাও খতিয়ে দেখছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ইয়াবা কারবারিরা তাদের ব্যাবসা বন্ধ না করলে জিরো টলারেন্স দেখিয়ে আবারও নতুন করে কঠোর এ্যাকশনে যাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ইয়াবা কারবারিরাও জঙ্গীগোষ্ঠীগুলোর মতোই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করে থাকে ইয়াবা মাদকের টাকা। অদৃশ্য উপায়ে এই ধরনের লেনদেনের দুর্র্গে হানা দিতে কৌশল উপায় খুঁজে বের করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কক্সবাজারে এরকম কমপক্ষে ১০ সিন্ডিকেটের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। সেখানে বসে মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা ইয়াবার চালান লোক মারফত গ্রহণ করে তা আবার সিঙ্গাপুর ও ব্যাঙ্ককে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠায় বলে পুলিশ সদর দফতরের দাবি। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেষে মিয়ানমারে ৩৭ ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। এই ইয়াবা কারখানাগুলোর অধিকাংশের মালিক মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সদস্য। এসব কারখানা থেকে কোন টাকা ছাড়াই বাংলাদেশী মাদক মাফিয়াদের কাছে পাঠানো হয়। গন্তব্যে পৌঁছার আগে সেই চালান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ধরা পড়লে সেটার কোন মূল্য দিতে হয় না। সফলভাবে পৌঁছালে সেই চালানের অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর ও ব্যাঙ্ককে অবস্থিত নির্ধারিত এ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এ ধরনের মাদক মাফিয়াদের কমপক্ষে ১০টি সিন্ডিকেটের তথ্য পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আসা বন্ধ করতে পারলে এমনিতেই বাংলাদেশ ইয়াবা মাদকের ব্যাবসা বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা। র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইয়াবার বিস্তাররোধ করতে হলে মাদকবিরোধী অভিযান ও আত্মসমর্পণের পাশপাশি এর কুফল সম্পর্কে আরও ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। ইয়াবার ক্ষতিকর দিক, কুফল ও সর্বশেষ পরিণতি সম্পর্কে প্রচার করতে হবে। সমাজের প্রতিটি স্তরে যার যার অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। এককথায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে সমাজ থেকে ইয়াবার মূলোৎপাটন করার পথ বেছে নিতে হবে। কক্সবাজারের ইয়াবা কারবার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে র‌্যাব। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের পাশপাশি এখন গড ফাদার ও মাদক মাফিয়াদের যে কোন মূল্যে নিবৃত্ত করাই হচ্ছে র‌্যাবের লক্ষ্য।
×