ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১৫, গ্রেফতার ২২

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১৫, গ্রেফতার ২২

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জ নগরীর নলুয়াপাড়ার বাপ্পি চত্বর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে আওয়ামীলীগের দু’ গ্র“পের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও একই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর শ্রমিকলীগের সভাপতি কামরুল হাসান মুন্নার সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশ পুলিশ বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় সোমবার সকালে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে। গ্রেফতারকৃতদের সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে সদর মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রবিরাব রাতে দক্ষিণ নলুয়া জামে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন ও মসিজিদের আয় ব্যয়ে হিসাব নিয়ে এশার নাজাজের পর মসজিদ কমিটির লোকজন মিটিং বসে। এ সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেনের ভাগিনা আল আমিন টিপু মসজিদে আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্থানীয় মুরুব্বি সাদেক হোসেনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার লোকজন টিপুকে মারধর করে। এ ঘটনায় আল আমিন টিপু নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। গভীর রাতে বিষয়টি তদন্ত করতে সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ খবর পেয়ে কামরুল হাসান মুন্নার নেতৃত্বে লোকজন গিয়ে টিপুর বাড়িতে হামলা চালায়। পরে কাউন্সিলর কবির হোসেনের নেতৃত্বে তার লোকজন কামরুল হাসান মুন্নার বাড়ির সামনে গিয়ে হৈ চৈ করে। পরে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে চলে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টাধাওয়া। পরে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও কামরুল হাসান মুন্নার দুই ভাই রানা ও তানহা, নেয়ামত উল্ল্যাহ, সত্যজিৎ, সুজন, দুর্জয়সহ প্রায় ১৫ জন আহত হয়। এ সময় দুইপক্ষের লোকজন আবারো মুখোমুখি অবস্থান নিলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। পরে পুুলিশ অভিযান চালিয়ে বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার আগে কামরুল হাসান মুন্না সাংবাদিকদের বলেন, টিপু একজন মাদকাসক্তক। সে আমার চাচা সাদেক হোসেনের সাথে খারাপ ব্যবহার করায় স্থানীয় লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে তাকে খোঁজাখুজি করে। এ নিয়ে আলআমিন টিপু থানায় অভিযোগ দেয়। পুলিশ তদন্ত করতে এলাকায় এলে পুলিশের সাথেই আমি ওই বাড়িতে যাই ঘটনা জানার জন্য। কিন্তু টিপুর স্ত্রী বিষয়টি কাউন্সিলর কবির হোসেন জানায়। কাউন্সিলর টিপুকে সাথে নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে রাতের বেলায় হৈ চৈ ও গালিগালাজ করে। পরে আমি বাসা থেকে বের হয়ে আসি। এ সময় তারা আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমার দুই ভাই রানা ও তানহার মাথা ফেটে যায়। বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন বলেন, দক্ষিণ নলুয়া মসজিদের হিসাব চাওয়ায় সাবেক কাউন্সিলর মুন্নার লোকজন আমার ভাগিনা টিপুকে মারধর করে। পরে আবার আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। বিষয়টি কাউন্সিলর মুন্নাকে জিজ্ঞাসা করতে রাতে তার বাড়ির সামনে গেলে মুন্নার নেতৃত্বে আমার উপর হামলা চালানো হয়। এ ব্যাপার নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বর্তমান কাউন্সির কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না গ্রুপের মধ্যে র্দীঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। কয়েক দিন পর পরই এই দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘষ বাধেঁ। রবিবার রাতেও দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘষ হয়। পরে পুলিশ বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় কবির হোসেন ও কামরুল হাসান মুন্না বাদী পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে। গ্রেফতারকৃত ২২ জনকে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
×