ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্যের ঘাটতি দূর করার উদ্যোগ নেবে সরকার

প্রকাশিত: ০৮:২৭, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

তথ্যের ঘাটতি দূর করার উদ্যোগ নেবে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশে তথ্যের ঘাটতি পূরণে পরিসংখ্যান বুরোকে আরও শক্তিশালী করবে সরকার। সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) আয়োজিত ইনোভেশনস ইন পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি শীর্ষক এক কর্মশালায় এ কথা জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, এসডিজি বাস্তবায়নে পরিসংখ্যাগত তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। আমরা তাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকেও (আইএমইডি) শক্তিশালী করা হবে। মন্ত্রী বলেন, অনেকেই বলেন ইজিপি সরকারের যুগান্তকারী সেবা। কিন্তু আমি বলবো ই-প্রকিউরমেন্টে আমরা কিছু করেছি। আগে টেন্ডার বাক্সের আশেপাশে অনেক লোক থাকতো, এখন তা দূর হয়েছে। ভবিষ্যতে ই-প্রকিউরমেন্ট আরও প্রসারিত হবে। তিনি আরও বলেন, এখন কোথাও গ্রাম আদালত বসতে দেখি না। এর স্থিতাবস্তায় একটা কায়েমি স্বার্থ রয়েছে। অনেকেই ধরে ধরে মামলাগুলো জেলা আদালতে নিয়ে যায়। থানার প্রতিও অনেকের অনীহা রয়েছে। ঝুলে থাকা মামলার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গভরন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, দুটোরই প্রয়োজন উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময়ে ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড গভরন্যান্স দুটোর পাশাপাশি যাওয়া উচিত। পাশাপাশি গেলেও ডেভেলপমেন্ট যদি এক কদম আগে যায়, আমরা অখুশি হব না। কারণ আন্ডার ডেভেলপমেন্টই আমাদের মূল সমস্যা। এটাকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কারণ ৮০ থেকে ৭০ ভাগ মানুষ ওই দিকে বসবাস করেন। প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ দিন আনে দিন খায়। মোটামুটি তারা একটা রশি পেয়েছেন, কিন্তু রশিটা অত্যন্ত দুর্বল। যেকোন সময় ছিড়ে যেতে পারে। এটাকে শক্ত করা আমাদের কাজ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, কয়েক বছর ধরে আমরা ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি। এভাবে যদি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি তবে প্রতি ১০ বছর পর পর আমাদের অর্থনীতির আকার দ্বিগুণ হবে। ডিজিটাল কালচার হলো কথার চেয়ে কাজ বেশি করা। মানুষের সমস্যা চিহ্নিত করা। প্রশাসনে তরুণরা আসছে। তাদের কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। এখন সেবার পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ নয়, মানসম্মত সেবা দেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ। এই যে ডিজিটাল সেন্টারে সেবা দিচ্ছি তা কতোটা কার্যকর তা ভাবতে হবে। ডাবল ডিজিটের প্রবৃদ্ধি ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন কিন্তু বাস্তবেই সম্ভব। ক্যাম্পের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অধিকার কর্মী রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি সেবায় তৃতীয় পক্ষের মনিটর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে থার্ড পার্টি মেকানিজমের ক্ষেত্রে কোথায় যেন গুরুত্ব থাকে না। সাধারণ মানুষের জন্য মানসম্মত সেবা, যার সঙ্গে মানবাধিকার যুক্ত তা নিশ্চিত করতে হবে। ডাটা সোর্স শক্তিশালীকরণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে৷ দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশের শিক্ষা গবেষণায় বাজাটে খুবই কম বরাদ্দ থাকে। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট ইশতিয়াক সিদ্দিক বলেন, ৫ থেকে ৭ বছর আগে টেন্ডার নিয়ে প্রতিদিনই কোনো না কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যেতো। বর্তমানে খবরের কাগজে তা নেই। তারমানে সরকারি কেনাকাটায় কিছুটা হলেও স্বচ্ছতা আসছে। ভবিষ্যতে আরো বেশি ই-জিপির প্রসার ঘটবে বলে আমরা মনে করি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের প্রজেক্ট ডিরেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এটুআই প্রকল্পে সফলতার অনেক গল্প আছে। তবে এটুআই প্রকল্পের উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা ও মার্কেটিংয়ে দুর্বলতা রয়েছে। সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, ই-জিপি সরকারের একটি বিশেষ সাফল্য। এর ফলে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিরাট পরিবর্তন এসেছে। বিচারাধীন থাকা বিভিন্ন মামলার মীমাংসার ক্ষেত্রে আমার গ্রামে গ্রাম্য আদালতের ক্ষেত্রে বিশেষ সফলতা পেয়েছে। এক হাজারের উপরে পেন্ডিং মামলার সমাধান হয়েছে। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিআইজিডির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. ইমরাম মতিন, বিআইজিডির প্রফেসরিয়াল ফেলো ড. সুলতান হাফিজ রহমান, ইউএনডিপির ন্যাশনাল প্রজেক্ট কোর্ডিনেটর সরদার এম আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
×