ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

৫৭ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাবে বুলেট ট্রেন

প্রকাশিত: ১১:০০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

৫৭ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাবে বুলেট ট্রেন

সংসদ রিপোর্টার ॥ ২০২৫ সাল নাগাদ ঢাকা হতে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশালের পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপিত হবে বলে সংসদে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলাকেই রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। মন্ত্রী জানান, দেশের সব জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, বরিশাল জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার লক্ষ্যে ভাঙ্গা হতে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশদ নক্সা প্রণয়নসহ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রস্তাব ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন পায়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গত বছরের ১৯ জুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে সমীক্ষা চলছে। তিনি বলেন, প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৪০ শতাংশ। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে প্রস্তাবিত এলাইনমেন্ট ও বিশদ নক্সা অনুযায়ী বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করে বরিশাল জেলাকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে এবং তা পায়রা বন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। ২০২৫ সাল নাগাদ ঢাকা হতে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশালের পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপিত হবে। মাত্র ৫৭ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাবে বুলেট ট্রেন ॥ মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ঢাকা-চট্টগ্রাম ভায়া কুমিল্লা/লাকসাম দ্রুতগতির রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিশদ ডিজাইন শীর্ষক একটি সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৮ মার্চ সমীক্ষা প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। গত বছরের ৩১ মে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। বর্তমানে সমীক্ষা চলমান। মন্ত্রী জানান, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে প্রথমবারের মতো ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দেশে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন চালু হবে। এটি সমাপ্ত হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত মাত্র ৫৭ মিনিট এবং বিরতি দিয়ে ৬৯ মিনিটে যাওয়া সম্ভব হবে বলে জানান রেলমন্ত্রী। এছাড়া ঢাকা-খুলনা, ঈশ্বরদী-রাজশাহী রুটে এবং জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ ও জয়দেবপুর-টাঙ্গাইলে এলিভেটেড রেলওয়ে নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আসছে ইলেকট্রিক ট্রেন ॥ রেলের ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী জানান, দেশে বৈদ্যুতিক ট্রেন চালুর জন্য রেলওয়ের গৃহীত মহাপরিকল্পনার আওতায় টঙ্গী-চট্টগ্রাম সেকশনে ইলেকট্রিক ট্রাকশন প্রবর্তনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, নারায়ণগঞ্জ-জয়দেবপুর, আখাউড়া-সিলেট, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী-খুলনা এবং ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশনে ইলেকট্রিক ট্রাকশন প্রবর্তনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ৫ বছর আগে চীন থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০ সেট ডেমু ট্রেন আমদানি করে। বর্তমানে ঢাকা বিভাগে ১০ সেট, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ সেট এবং লালমনিরহাট বিভাগে ২ সেট ডেমু ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু ডেমুর জন্য কোন আলাদা ওয়ার্কশপ না থাকায় আমদানির পর অদ্যাবধি ডেমু ট্রেনের জন্য কোন ভারি মেরামত কাজ সম্ভব হয়নি। এ কারণে ডেমু ট্রেন মেরামতাধীন হয়ে পড়েছে। তবে রেলওয়ের নিজস্ব জনবল ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশেষ ব্যবস্থায় ইতোমধ্যে ৫টি ডেমুর ইঞ্জিন ওভারহোলিং করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট ডেমু এক বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ওভারহোলিংয়ের কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
×