ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপ থেকে ইভিএম

প্রকাশিত: ১১:০৯, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপ থেকে ইভিএম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এবং উপজেলায় নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক সহযোগিতা ছিল বলেই জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে। ঢাকা সিটি ও উপজেলায় একই পরিবেশ বজায় থাকবে উল্লেখ করেন। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা সিটির কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, সব ভোটার যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সে বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হবে। নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেজন্য নিরপেক্ষ থাকতে হবে। প্রার্থীর এজেন্টদের নিরাপত্তা দিতে হবে উল্লেখ করেন। এ সময় একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি প্রশংসা জ্ঞাপন করে বলেন, তাদের ভূমিকার কারণে জাতীয় নির্বাচনে কোন সহিংস ঘটনা ঘটেনি। একইভাবে ঢাকা সিটি ও উপজেলা নির্বাচনেও কার্যকরী ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, উপজেলায় এবং ঢাকা সিটিতে বিএনপিসহ অন্যদলগুলোর অংশ না নেয়া প্রসঙ্গে বলেন অন্যসব দল অংশগ্রহণ না করলে ইসির কিছুই করার নেই। তারা অংশ না নিলেও নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হবে। সিইসি বলেন, ঢাকা সিটির নির্বাচন মানে হচ্ছে, দেশের রাজধানী শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এই নির্বাচনের যেন কোন বিচ্যুতি না হয়, এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। নির্বাচন যাতে অবাধ হয়, গ্রহণযোগ্য হয়, সেটার দিকে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। নির্বাচনে কার কী দায়িত্ব, তা সবাই জানেন। প্রজ্ঞা দিয়ে, দক্ষতা দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করবেন। বিশেষত, কাউন্সিলর পদে বেশি প্রার্থী থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রার্থীর কোন দলীয় পরিচয় দেখার প্রয়োজন নেই। তিনি কেবল একজন প্রার্থী হিসেবেই বিবেচিত হবেন। ভোটের দিন পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা দিতে যতœবান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে। নির্বাচনে আচরণবিধি যাতে লঙ্ঘন করতে না পারে প্রার্থীরা সেজন্য নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের মাঠে থাকতে হবে উল্লেখ করেন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং দুই সিটির সম্প্রসারিত ৩৬নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচন। নির্বাচনে বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো না আসায় অনেকটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পক্ষে প্রচার থাকলেও অন্য প্রার্থীদের দেখা নেই। তবে কাউন্সিলর পদে অধিক প্রার্থী থাকায় নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হবে। নির্বাচনে বিজয়ীরা আগামী এক বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সোমবার সকাল ১১টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। এতে ইসির অন্য চার কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্র্রিগেডিয়ার (অব) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মহাপুলিশ পরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, বিজিবি প্রতিনিধি, ডিজিএফআইয়ের পরিচালকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু নির্বাচনের আড়াই বছর পর ২০১৭ সালের ৩০ নবেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়র আনিসুর হক লন্ডনে মারা যান। এতে করে আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের জন্য তফসিল দিয়েছে ইসি। তৃতীয় ধাপ থেকে ইভিএম ॥ এদিকে ইসি সচিব মোঃ হেলালুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আগমী উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপ থেকে সদর উপজেলায় ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তিনি বলেন, প্রথম ধাপ থেকে ইভিএমে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থাকলেও বিধি প্রণয়ন না হওয়ায় প্রথম ও দ্বিতীয়ভাবে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না। তৃতীয় ধাপ থেকে পঞ্চম ধাপ পর্যন্ত নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
×