ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁশখালীর শুঁটকি রফতানি হচ্ছে বিদেশে

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বাঁশখালীর শুঁটকি রফতানি হচ্ছে বিদেশে

জোবাইর চৌধুরী, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উৎপাদিত শুঁটকি রফতানি হচ্ছে দেশ-বিদেশে। বর্তমান শীত মৌসুমে এই উপজেলার উপকূলীয় জেলে পল্লীগুলোতে ধুম লেগেছে শুঁটকি শুকানোর কাজে। এখানকার উৎপাদিত শুঁটকি সুস্বাদু ও মজাদার হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন কদর বেড়েছে তেমনি রপতানি করা হচ্ছে দেশের বাইরেও। এই উপজেলার কয়েক সহ¯্রাধিক জেলেদের জীবন-জীবিকার একমাত্র কর্মস্থল বঙ্গোপসাগর। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ করতে যাওয়া জেলেরা প্রতিনিয়ত জলদস্যুদের তা-বের শিকার হয়ে আসছে। তারপরেও জীবনের তাগিদে থেমে নেই জেলেদের মৎস্য আহরণ। এদিকে রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের ফাঁড়ির মুখ এলাকায় গিয়ে দেখা যায় জেলে পল্লীগুলোতে শুঁটকি শুকানোর ধুম লেগেছে। জেলেরা এতই ব্যস্ত সময় পার করছে যে, বিন্দু পরিমাণ বিশ্রামের কোন ফুরসত নেই তাদের। জানা যায়, উপজেলার উপকূলীয় এলাকা খানখানাবাদ, বাহারছড়া, গন্ডামারা, শেখেরখীল ও ছনুয়া এলাকার জেলেরা বিষাক্ত পদার্থ ছাড়াই উৎপাদন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত শুঁটকি মাছ। কোন কিছু মিশ্রন ছাড়াই রোদের তাপে মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করে থাকেন। তাই বাঁশখালীর শুঁটকি অতীব সুস্বাদু এবং মজাদার বলে জনশ্রুতি রয়েছে। বাঁশখালীর জেলে পল্লীগুলোতে হাজার হাজার মণ শুঁটকি ক্রয় করতে চট্টগ্রাম শহরের চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও চকবাজারের গুদাম মালিকরা দলে দলে হাজির হয়ে জেলেদের অগ্রিম টাকা দিয়ে যান। বাঁশখালীর শুঁটকির মধ্যে লইট্যা, ছুরি, রূপচান্দা, ফাইস্যা, মাইট্যা, কোরাল, রইস্যা, পোঁহা ও চিংড়ি শুঁটকি অন্যতম। এসব শুঁটকি এখন রফতানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই, কাতার, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ওমান, কুয়েত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে। বাঁশখালীর শুঁটকি এসব দেশগুলোতে রফতানি করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই ও চকবাজারের বড় বড় গুদাম মালিকরা। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতেও যোগ হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। তাছাড়া বাঁশখালীর উৎপাদিত এই শুঁটকি বাংলাদেশ ছাড়াও বিদেশে রফতানি হচ্ছে। যা থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুতা ও শুঁটকি শুকানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখেরখীল ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ এয়ার আলী বলেন, জলদস্যুরা প্রতিনিয়ত মৎস্য আহরণ করতে যাওয়া ফিশিং বোটগুলোতে তা-ব চালিয়ে জেলেদের অপহরণ, খুন ও গুম করে থাকে। তাছাড়া অপহরণকৃত জেলেদের মুক্তির জন্য বিপুল পরিমাণ মুক্তিপণও আদায় করে থাকে। তারপরেও নানা প্রতিকূলতার মাঝে এই এলাকার জেলেরা মৎস্য আহরণ করে যাচ্ছে জীবনের তাগিদে। জলদস্যুতা রোধে প্রশাসন কঠোর হলে জেলেরা নির্বিঘেœ মৎস্য আহরণ করতে পারবে। এ জন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
×