ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেনাপোল সীমান্তে ভাষা শহীদদের প্রতি দুই বাংলার মানুষের শ্রদ্ধা

প্রকাশিত: ১১:২১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বেনাপোল সীমান্তে ভাষা শহীদদের প্রতি দুই বাংলার মানুষের শ্রদ্ধা

আবুল হোসেন, বেনাপোল থেকে ॥ বাংলা ভাষার টানে বাঙালীর বাঁধন হারা আবেগে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় দুই বাংলার মানুষ। মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভৌগোলিক সীমারেখা ভুলে যশোরের বেনাপোলে নো ম্যানস ল্যান্ডে ভাষার টানে ছুটে এসেছেন তারা। ভাষা শহীদদের এই মিলন মেলা ও ভাষা শহীদের প্রতি উভয় দেশের বাংলাভাষী মানুষের বিনম্র্র শ্রদ্ধা নিবেদনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অতিথি স্থানীয় সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন। ভারতীয় অতিথি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকসহ ভারত-বাংলাদেশের শিল্পী, সাহিত্যক ও রাজনৈতিকরা। ভাষার কোন সীমানা নেই। তাই বাংলাদেশ-ভারতের এই সীমানা প্রাচীর ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজনে কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একাতœ হয়েছিলেন দু’দেশের বাঙালীরা। বেনাপোল সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দুই বাংলার মানুষ। দুই বাংলার মাতৃভাষা দিবস উদযাপন পরিষদ যৌথভাবে এই আয়োজন করে। এ সময় নানা রঙের ফেস্টুন, ব্যানার, ফুল দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় পুরো এলাকা। দীর্ঘদিন অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা জানালেও সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দাবি উঠেছে স্থায়ী শহীদ মিনারের। এ সময় বক্তারা বলেন মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাঙালীর হৃদস্পন্দের একটি নাম। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা রক্ষার জন্য এ দেশের সূর্য্য সন্তানের শাসক গোষ্ঠীর রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত করেছিল রাজপথ। ফলে, অর্জিত হয়েছিল শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ অর্জন বাঙালী জাতির প্রাণের মাতৃভাষা মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। এই একুশের সিঁড়ি বেয়ে সারাবিশ্বে সকল মাতৃভাষা রক্ষার দাবি গৃহীত হয়েছে। বাঙালীর একুশে ফেব্রুয়ারি হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মিলনমেলায় অংশ নিয়ে আবেগ আপ্লুত দুই বাংলার মানুষ। মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে নতুন প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান শিল্পী ও সাহিত্যিকরা। আনুষ্ঠানিকতা শেষে নো ম্যান্স ল্যান্ডের মঞ্চে দু’দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এ সময় শিল্পী আব্দুল আলীমের কন্যা নূরজাহান আলীম, জিবাংলা খ্যাত সঙ্গীত শিল্পী মইনুল আহসান নোবেলসহ অন্যান্যরা। ভাষার জন্য এমন আয়োজন বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
×