ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কাশ্মিরজুড়ে আত্মঘাতী হামলা জোরালো করার হুমকি

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 কাশ্মিরজুড়ে আত্মঘাতী হামলা জোরালো করার হুমকি

অনলাইন ডেস্ক ॥ কাশ্মিরজুড়ে আত্মঘাতী হামলা জোরালো করার হুমকি দিয়েছে সেখানকার সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন। সংগঠনের শীর্ষ নেতা ও অপারেশনাল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু এক অডিও বার্তায় বলেছেন, স্বাধীনতার উন্মাতাল আকাঙ্ক্ষায় মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে কাশ্মিরের তরুণরা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে। কাশ্মিরের বাস্তবতাকে ‘দাসত্ব’র সঙ্গে তুলনা করে তিনি তার বার্তায় বলেছেন, আত্মসমর্পণের বদলে মৃত্যুকেই বেছে নেবেন তারা। ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামাতে আরডিএক্স বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স’র গাড়ি বহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে বহরের ৭০টি গাড়ির মধ্যে একটি বাস সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। প্রাণ হারায় বাহিনীর অন্তত ৪৪ সদস্য। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ জানায়, আদিল আহমেদ দার নামের এক কাশ্মিরি তরুণ ওই হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। পুলওয়ামা হামলার প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় হিজবুল মুজাহিদিনের অপারেশনাল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু বলেছেন, ওই আত্মঘাতী হামলাকারী একজন কাশ্মিরি, তার ওপর সংঘটিত সেনানিপীড়নই তার মনের ভেতরে এমন হামলার উসকানি সৃষ্টি করেছে। উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসলামের সুফিবাদী ধারা হিসেবে পরিচিত ‘বেরেলভি’মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন আদিল। তার বন্ধু-স্বজন-আত্মীয়রা টেলিগ্রাফকে জানিয়েছেন, বুরহান ওয়ানির হত্যাকাণ্ড আর নিরাপত্তা বাহিনীর ছররা গুলির আঘাতে বহু মানুষের অন্ধ হওয়ার ঘটনাই তাকে ভিন্নপথে তাড়িত করেছিল। এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আদিলের বাবা গুলাম হোসেন দাবি করেছেন, ২০১৬ সালের বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হয়েছিল আদিল। তারপর থেকেই সে বদলে যেতে থাকে। অডিও বার্তায় রিয়াজ নাইকু বলেন, ‘বিশ্বের কোনও শক্তিই আত্মঘাতী হামলা থামাতে পারে না’। তার দাবি, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উন্মাতাল কাশ্মিরের তরুণরা। ‘আমরা আত্মাহুতি দেওয়া থামাবো না। আমরা বরং মরবো, তবু আত্মসপর্মণ করবো না। সেই দিন বেশি দূরে নয় যেদিন আমাদের ১৫ বছর বয়সী শিশু তার শরীরে বিস্ফোরক বহন করবে আর সেটা তোমাদের গাড়িতে ছুঁড়বে। আমাদের কাছে দাসত্বের চেয়ে মৃত্যু ভালো’ বার্তায় বলেন রিয়াজ। কাশ্মিরের সোস্যাল অ্যাকটিভিস্ট হামিদা নাইম আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘ভারতের সরকার কাশ্মিরের তরুণদের কণ্ঠস্বর শুনছে না ফলে বিপুল সংখ্যায় এসব তরুণেরা অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে।’ কাশ্মিরের আরেক বিদ্রোহী সংগঠন আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক কাতারভিত্তিক আল জাজিরাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখছে কাশ্মিরের পুরো একটি প্রজন্মকে কিভাবে ভারত রাষ্ট্র চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
×