ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিআইবিএম’র মহাপরিচালক নিয়োগে তোড়জোড়

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বিআইবিএম’র মহাপরিচালক নিয়োগে তোড়জোড়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক পদ সম্প্রতি শূন্য হয়েছে। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে নিয়োগ পেতে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। শেষ পর্যায়ে চূড়ান্ত নিয়োগ কে পাবেন এই অপেক্ষায় রয়েছেন পুরো ব্যাংকিং খাত। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বোর্ড সভায় বিষয়টি নির্ধারিত হবে বলে জানা গেছে। সূত্রে জানা গেছে, বিআইবিএমের মহাপরিচালক পদে সদ্য মেয়াদ শেষ হয়েছেন ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর। তিনি ২০১০ সালে বিআইবিএমের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান বিআইবিএম এর আরেক অধ্যাপক ড. বন্দনা সাহা। এর ধারাবাহিকতায় তার মেয়াদ শেষে নিয়োগ পান ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, অভ্যন্তরীণ যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ পাওয়ায় গত এক দশকে প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং কনসালটেন্সি কাজে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কনসালটেন্সি এবং যুক্তরাজ্য, জার্মানি, মালয়েশিয়ার একাধিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোর্স পরিচালনাসহ বিভিন্ন খ্যাতিনামা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পারস্পারিক সম্পর্ক তৈরি করার কারণে আন্তর্জাতিকভাবেও বিআইবিএম সমাদৃত হয়েছে। এসব কারণে গত ১৬ জানুয়ারি ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর বয়স ৬৫ বছর পার হওয়ার কারণে তার মেয়াদ শেষ হলেও বিআইবিএম এর এসব কর্মকা- চলমান রাখার জন্য গবর্নিং বোর্ড ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আইনী মতামত প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইনের বিধি বিধানে ৬৫ বছরের পর নিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ নাই। তবুও তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের চেষ্টা চালাচ্ছেন, কিন্তু সেখানেও তিনি আইনের বাধ্যবাধকতায় পিছিয়ে আছেন। এ কারণে তার মেয়াদ আর বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গবর্নিং বোর্ডের একাধিক সদস্য। গত ২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সার্কুলারে বলা হয়, কোন ব্যক্তির বয়স ৬৫ বছর অতিক্রান্ত হলে তিনি ব্যাংকের কোন পদে চুক্তিভিত্তিতেও নিয়োজিত হতে বা অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। তবে পরামর্শক ও উপদেষ্টা পদে ব্যাংক বিশেষ প্রয়োজনে ৬৫ বছরের বেশি কোন ব্যক্তিকে চুক্তিভিত্তিতে বহাল রাখতে অথবা নিয়োগ দিতে পারবে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নির্দেশনা দেয়। এদিকে মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমানে বিআইবিএম এর মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রহিম। এছাড়া বিআইবিএম এর মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পাবার জন্য জোর আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মোঃ আক্তারুজ্জামান। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা, গবেষণা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ইসকান্দার মির্জাও এ পদে নিয়োগ পেতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিআইবিএমের জেষ্ঠতম অধ্যাপক ও পরিচালক ড. শাহ্ মোঃ আহসান হাবিব এর রয়েছে ব্যাংকিং খাত সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং শিক্ষায় দুই দশকের বেশি অভিজ্ঞতা। এছাড়া গত এক দশকে বিভিন্ন সময়ে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। তাছাড়া বিআইবিএম এর অধ্যাপক মহিউদ্দিন ছিদ্দীক ও ড. তাজুল ইসলামও আছেন এ তালিকায়। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলেও নিজ নিজ এলাকার একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী ও আমলাদের মাধ্যমে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এ কারণে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি বোর্ড সভায় তাদেরও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় আনতে বাধ্য হচ্ছে গবর্নিং বোর্ড। কৃষি ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি লিয়াকত হোসেন মোড়লও আছেন প্রতিযোগিতায়। কৃষি ব্যাংকের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে দায়িত্ব পালন ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোন প্রশিক্ষণ অভিজ্ঞতা তার নেই। নেই কোন গবেষণা কর্ম। তবে সম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া তিনটি বেসরকারী ব্যাংকের কোন একটিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেতেও তৎপর তিনি। এছাড়া বিআইবিএম-এর মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেতে চেষ্টা করছেন একাধিক ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিভাগের একাধিক প্রভাবশালী শিক্ষক।
×