ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাশ্মীর ইস্যুতে অবশেষে মুখ খুললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

কাশ্মীর ইস্যুতে অবশেষে মুখ খুললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ॥ কাশ্মীর ইস্যুতে অবশেষে মুখ খুললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, এই লড়াই কাশ্মীরের জন্য, কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে নয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে কাশ্মীরিরাও ক্লান্ত। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। মোদি বলেন, এই সময়ে কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে ছোটখাটো যে ঘটনাই ঘটুক, তাতে পুরো দেশেরই ক্ষতি। কারণ, এতে কেবল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতই শক্ত হবে। এর পাশাপাশি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উদ্দেশে কথা রাখার চ্যালেঞ্জও ছুড়েছেন মোদি। রাজস্থানের টোঙ্ক-এ এক জনসভায় মোদি ইমরানের সঙ্গে কথোপকথনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। গত বছর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ইমরানকে অভিনন্দন জানিয়ে ফোন করেছিলেন। সে প্রসঙ্গে মোদি বলেন, সবাই তাকে ক্রিকেটার হিসেবে জানে। আমি তাকে বললাম, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যথেষ্ট লড়াই হয়েছে। পাকিস্তান কিছুই পায়নি, প্রতি বারই আমরা জিতেছি। আসুন, আমরা এবার দারিদ্র ও নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে লড়াই করি। এতে তিনি আমাকে বলেছিলেন, মোদিজি, আমি পাঠানের ছেলে। সত্যি বলি। খাঁটি কাজ করি। এর পরেই ইমরানের উদ্দেশে মোদির চ্যালেঞ্জ, পাঠানের সন্তান হলে, আর কথার দাম থাকলে, সেটা প্রমাণ করে দেখান। পুলওয়ামায় ১৪ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার পর মোদি বলেছিলেন, হামলাকারী ও তাদের সাহায্যকারীদের ‘খুব বড় ভুল’-এর ‘খুব চড়া দাম’ দিতে হবে। এতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার কথাও বলেছেন মোদি। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতি সব ধরনের সহায়তা বন্ধের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তার দাবি, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এখন ভারতের পাশে। একই সঙ্গে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার দায় চাপিয়েছেন পুরোপুরি পাক প্রধানমন্ত্রীর উপর। কূটনীতিকদের অনেকেই বলে থাকেন, পাক সেনাবাহিনীর ‘পুতুল’ ইমরান সেটাই বলতে বা করতে পারেন আইএসআই এবং পাক সেনাপ্রধান কমর বাজওয়া তাকে দিয়ে যা বলাতে বা করাতে চাইবেন। ফলে জনসভায় মোদির এই বক্তব্যে আদৌ কোনও ফল হওয়ার আশা করছেন না অনেকেই। আবার পুলওয়ামায় হামলার পরে পুরো দেশে কাশ্মীরিদের নিশানা করার বিরুদ্ধে মোদি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটাও এসেছে নয়দিন ধরে এসব ঘটনা চলার পরে। এই কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরিদের আক্রান্ত হতে দেখে বিরোধীরা দাবি করছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে মুখ খুলুন এসবের বিরুদ্ধে। অবশেষে মুখ খুললেন মোদি। সেটাও ঘটল প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক তিনটি চাপের মুখে। এক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিজে থেকে হস্তক্ষেপ করে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলোর রিপোর্ট চেয়েছে বৃহস্পতিবার। দুই, কেন্দ্র ও ১০ রাজ্যকে কাশ্মীরিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তিন, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বিদ্বেষ দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। দিল্লিতে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় রাহুল বলেন, মহাবীর, বুদ্ধ, অশোক ও গান্ধীর দেশে এখন ঘৃণার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যদি কিছু বলেন, তবে পুরো দেশ ঠান্ডা হতে পারে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী যা ভাবেন ও বলেন, সেটা পুরো দেশেই সেটা ছড়িয়ে পড়বে। এর পরপরই কাশ্মীরিদের উপরে হামলা নিয়ে রাজস্থানের জনসভায় নীরবতা ভাঙলেন মোদি। কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন তিনি।
×