ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপের আগে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নিয়ে কোহলির বিতর্ক

প্রকাশিত: ০০:০৫, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বিশ্বকাপের আগে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নিয়ে কোহলির বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক ॥ বিশ্বকাপের আগে টি-টোয়েন্টির বদলে পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ বেশি খেলতে পারলেই লাভ হত বলে নতুন তর্ক তুলে দিলেন বিরাট কোহলি। বিশাখাপত্তনমে আজ, রবিবার টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ। মোট দু’টি টি-টোয়েন্টি এবং পাঁচটি এক দিনের ম্যাচ হবে। তার পরেই আবার আইপিএল। কুড়ি ওভারের প্রতিযোগিতা শেষ হলে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে কোহলির ভারত। অর্থাৎ, বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগে তাঁদের হাতে শুধু এই পাঁচটি ওয়ান ডে ম্যাচই থাকছে। প্রশ্ন উঠছে, আইপিএল যখন আছেই তা হলে বিশ্বকাপের কাছে এসে এই সিরিজে দু’টি টি-টোয়েন্টি খেলার কী দরকার ছিল? শনিবার বিশাখাপত্তনমে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে কোহলি এই বিষয়টিকেই তুলে ধরেন। বলেন, ‘‘বিশ্বকাপের আগে আরও কয়েকটি ওয়ান ডে খেলতে পারলেই ভাল হত। ব্যাপারটা অনেক যুক্তিপূর্ণ হত।’’ বিশাখাপত্তনমের পরে বেঙ্গালুরুতে হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘আইপিএলে আমরা অনেক টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাব। তাই এই সিরিজে আরও দু’টো ওয়ান ডে পেলে শুধু আমাদের নয়, অস্ট্রেলিয়ার পক্ষেও লাভজনক হত।’’ কী হলে কী হত, তা নিয়ে অবশ্য পড়ে থাকতে চান না তিনি। বলে দিয়েছেন, ‘‘সামনে যা আছে, তা নিয়েই আমাদের চলতে হবে। কাজে লাগতে হবে সুযোগকে। সঠিক মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামতে হবে।’’ অধিনায়ক ঠিক অভিযোগের সুরে সূচি নিয়ে মন্তব্য না করলেও প্রশ্ন উঠছে কর্তাদের পরিকল্পনা নিয়ে। অতীতেও সূচি নিয়ে অনুযোগ এসেছে ভারতীয় দলের দিক থেকে। বিদেশে সফর পরিকল্পনায় কোনও চিন্তাভাবনার ছাপ দেখা যায়নি। এ বারও প্রশ্ন উঠতেই পারে, বিশ্বকাপের আগে দু’টো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আবার রাখা হল কেন? তার বদলে পাঁচটির জায়গায় সাতটি এক দিনের ম্যাচ খেললে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি আরও ভাল করে সেরে নিতে পারতেন কোহলিরা। এমনিতেই ভারতীয় দল বিশ্বকাপ খেলতে যাবে আইপিএলের কুড়ি ওভারের ধুন্ধুমার ক্রিকেট খেলে। পঞ্চাশ ওভারে গিয়ে ব্যাটিং বা বোলিংয়ের ধরন অনেকটাই পাল্টাতে হবে। আইপিএল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিরাটও এ দিন সাবধান করে দিলেন, ‘‘প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে। আইপিএলে খেললেও ওয়ান ডে-র মানসিকতা থেকে যেন বেশি দূরে সরে না যায় কেউ। আইপিএলের সময় টেকনিক্যাল দিক থেকে যে বাজে অভ্যাসগুলো হয় আমাদের, সেগুলো নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্বকাপে আমাদের এমন ১৫জনকে প্রয়োজন, যারা ওই সময় নিজেদের খেলা নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ও খুশি থাকবে।’’ এই প্রসঙ্গে বিরাট আরও বলেন, ‘‘আইপিএলে যদি একবার বদভ্যাস হয়ে যায় এবং সে জন্য ছন্দ ও ফর্ম নষ্ট হয়, তা হলে কিন্তু বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতায় তা ফিরে পাওয়া বেশ কঠিন হবে। তাই প্রত্যেককে নিজেদের মানসিকতা ধরে রাখতে হবে এবং ভারতীয় দলে তার উপযোগিতা বজায় রাখতে হবে।’’ তাঁদের উপর যাতে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে, তার জন্য গত কয়েক মাস ধরে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মাঝেমধ্যে বিশ্রাম দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানো হচ্ছে। আইপিএলেও এ রকম হবে কি না, এটাই বড় প্রশ্ন। তবে বিরাট বলতে চান, ক্রিকেটাররা নিজেদের ভাল নিজেরাই বেশি বুঝুন। বিশ্বকাপগামী ক্রিকেটারদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘আইপিএলে এত সফর করতে হয়। তার উপর অনুশীলন, বিভিন্ন পরিবেশে ম্যাচ খেলার ব্যাপারও আছে। সব মিলিয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ক্রিকেটারদেরই ঠিক করতে হবে, কতগুলো প্র্যাকটিস সেশন তোমাদের প্রয়োজন। যদি দেখো ভাল শট নিতে পারছ, তা হলে অনুশীলনে না গিয়ে ঘণ্টা তিনেক গা ঘামাও। না হলে ওই সময়ে বিশ্রাম নিয়ে নিজেকে তাজা করে তোলো।’’ কী ভাবে নিজেকে তরতাজা রাখতে হবে, সেই বিষয়টি ক্রিকেটারদের উপরই ছেড়ে দিচ্ছেন বিরাট। বলছেন, ‘‘দল যদি সাফল্যের মধ্যে দিয়ে যায়, তা হলে দু’-তিনটে ম্যাচে নাও খেলতে পারো। শারীরিক ভাবে কে কেমন অনুভব করছ, সেটাই বড় কথা।’’ কয়েক দিন আগেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের সিইও বেঙ্কি মাইসোর জানান, বোর্ড থেকে ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিশ্রামের ব্যাপারে কোনও অনুরোধ তাঁদের কাছে এসে পৌঁছয়নি। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে বিরাটের কথাবার্তা থেকে পরিষ্কার, বিশ্বকাপে তিনি তরতাজা ক্রিকেটারদেরই চাইছেন। সরাসরি আর্জি না জানালেও এ ব্যাপারে আইপিএলের আট দলের কর্তাদের কোর্টেই বল ঠেলে দিলেন তিনি। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×