অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিউইয়র্কে আমাদের দায়েরকৃত মামলায় আরসিবিসি বেকায়দায় আছে। এজন্য তারা নিজেদের অবস্থান জানান দেয়ার জন্য মানহানি মামলা করেছে, এটা মূল মামলা নয়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অসুবিধা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির। তিনি বলেন, বিএফআইইউ প্রধান রাজী হাসানের নের্তৃত্বে ফিলিপাইনের টিম আজ (বুধবার) রাতে ফিরে আসছে। তারা এলেই এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানা যাবে।
বুধবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, গতকাল আমি এ বিষয়টি পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। এতে কোনো অসুবিধা নেই। এটি পাল্টা মামলা কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে গবর্নর বলেন, আমাদের পাল্টা মামলা নেই নিউ ইয়র্কের মামলায়। তারা একটি মানহানি মামলা করেছে, মূল মামলা না।
গবর্নর বলেন, আমাদের পাল্টা মামলা নেই। নিউইয়র্কের কোর্টে যে মামলা হয়েছে, সে সময় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যংক অব নিউ ইয়র্ককে চুক্তি করিয়েছি তারা যেন যেন আমাদের এ মামলাকে পূর্ণাঙ্গ সাপোর্ট দেয়। এজন্যই হয়তো তারা এ মানহানি মামলা দায়ের করেছে। আমরা যেহেতু মামলা করেছি তাই এ সমঝোতার প্রয়োজন কী জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, এটা নিউইয়র্কের আইন অনুযায়ী করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয়া হয়। ওই টাকা জমা হয় ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে। অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নেয়া হয়। পরে স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে তা চলে যায় জুয়ার টেবিলে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেয় ফিলিপাইন সরকার। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে বাকি টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তার কোনো হদিস মেলেনি। তিন বছর আগে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার করতে গত ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে আরসিবিসি গত ৬ মার্চ ফিলিপিন্সের সিভিল কোর্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে একটি মামলা করে। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়। রিজল ব্যাংকের এই মামলাকে ‘সময়ক্ষেপণের কৌশল’ হিসেবে উল্লেখ করে তাতে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন নয় বলে এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
