ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ করে নেতা হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে ॥ গণপূর্ত মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ১৪ মার্চ ২০১৯

    হঠাৎ করে নেতা হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে ॥ গণপূর্ত মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘এখন হঠাৎ করে নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতা, মন্ত্রী হওয়ার প্রতিযোগিতা, এমপি বা কোন কোম্পানির মালিক হওয়া অথবা হঠাৎ করে বড় একটি পোস্ট পাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই মুক্তিযুদ্ধের নির্দেশনা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, ইতিহাস কখনো রচনা করা যায় না, ঘটে যাওয়া ঘটনা ইতিহাস। যে সকল ভাষণগুলোর সঙ্গে ৭ই মার্চের ভাষণের তুলনা করা হয়েছে, ওই সব ভাষণের অবস্থান এবং বিদ্যমান পরিস্থিতি সেটা আমাদের অবস্থা থেকে সম্পূর্ণরূপে আলাদা ছিল। তিনি বলেন, অল্প সময়ের বঙ্গবন্ধু ভাষণে এমন কোন বিষয় ছিল না, যা কোন ভাবে এড়িয়ে গেছেন তিনি। আর এজন্য বলা হয় এটা বিশ্বের বিস্ময়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু মুক্তিযুদ্ধের নির্দেশনায় সীমাবদ্ধ নয়। তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় বাঙালি জাতির ইতিহাসের পথ চলা, সবটুকু এর ভিতরে ছিল। সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, বাংলাদেশ পোস্ট-এর সম্পাদক শরীফ শাহাবুদ্দিন, রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম বড়–য়া, সাবেক তথ্য সচিব নাসিরউদ্দিন আহমেদ, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. কামরুল হাসান খান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, আরব্য রজনীর গল্পের মতো ইতিহাস রচনা করা যায় না। তেমনি পৃথিবীর অনেক ভাষণের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ তুলনা করা যায় না। শুধু মুক্তিযুদ্ধ না বরং বাঙালি জাতির জন্য সব রকমের নির্দেশনা ছিল জাতির জনকের ভাষণে। বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ম্যাগনা কার্টা। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও নাট্যব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ গবেষণা করার মতো একটি বিষয়। যার প্রতিটি শব্দের মধ্যে অনেক দূরদর্শী তাৎপর্য আছে। যতকাল বাঙালি জাতি নির্যাতিত হবে ততকাল এই ভাষণের দিকনির্দেশনা সমাধান হিসেবে কাজ করবে। আপনি বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা যে দলের মতাদর্শের লোক হন না কেন, দল-মত নির্বিশেষে এই ভাষণ নিয়ে গবেষণা করতে পারেন। আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, পাঠ্যপুস্তকে অনেক অসংলগ্ন বিষয় যাচ্ছে তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ যাচ্ছে না। যে ভাষণ দিয়ে দেশের স্বাধীনতা আসলো তা নতুন প্রজন্মকে জানানোর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষণের তুলনা চলে না। মন্ত্রী বলেন, জাতির জনককে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে অনেক পিছনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে উত্তোলনের জন্য শেখ হাসিনাকে ২১ বছর লড়াই করতে হয়েছে। এই ২১ বছরের ভেতরে তাকে ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। তিনি বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণের মর্মবানী শেখ হাসিনা অনুধাবন করায় তিনি একটি অপরাধমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকারাবদ্ধ। যা অন্য কোনো নেতা বুঝতে পারেনি সেই স্বপ্ল সময়ের বিস্ময়কর ভাষণটি। বিএনপির নেতাদের উদ্যেশ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না অথচ তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোঁয়ায় সেলফি তোলেন। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্প্রতি বাংলাদেশ-এর সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক আলী হাবিব।
×