ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আবদুল বাসিত মোহাম্মদ

ঋতুর সাজে বাংলা মা যে

প্রকাশিত: ১২:১৯, ১৫ মার্চ ২০১৯

ঋতুর সাজে বাংলা মা যে

ছড়া সাহিত্যই সাহিত্যের প্রাণ। সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে ছড়া সাহিত্যের অবদান অনস্বীকার্য। সাহিত্যকে মানুষের দোরগোড়ায় নিতে ছড়াই একমাত্র উপাদান। তাই যুগ যুগ ধরে গুণী-জ্ঞানী সাহিত্যিকরা ছড়াকে সাহিত্যের মূল ধারায় নিতে সচেষ্ট ছিলেন। বাংলা সাহিত্যের মুরব্বি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামসহ প্রায় সব কবিই ছড়াকে দাঁড় করিয়েছেন সর্বাগ্রে। আমার আজকের আলোচিত গ্রন্থ ছড়া। কবি পৃথ্বীশ চক্রবর্তী ইতোমধ্যে ছড়া সাহিত্যের অন্যতম সৃজনশীল ছড়াকার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। ‘বৃষ্টি পড়ে তিথির বাড়ি’ ‘ছন্দ ঝরে বন্ধ ঘরে’ ‘বিষ্টি ঝরে তিমা পড়ে’ ‘রোজার শেষে ঈদের মজা’ ইত্যাদি ছড়াগ্রন্থের ছড়াকার তিনি। ‘ঋতুর সাজে বাংলা মা যে’ গ্রন্থখানা অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯ শে প্রকাশিত। গ্রন্থখানা একটু মেলে দেখা যাক। মোট ২৬টি ছড়া স্থান করে নিয়েছে এখানে। প্রথমত ছয়খানা ছড়া ছয়টি ঋতুকে ঘিরে। সপ্তম ছড়া- ‘ষড় রূপে ষড় ঋতু’। আর অষ্টম ছড়া বাংলা মাকে নিয়ে। তাঁর প্রায় প্রতিটি ছড়াতেই গ্রীষ্মের উষ্ণতাপ, বর্ষায় বরষণের, শরৎ শিউলি ফুলের, হেমন্তে পাকা ধানের ম ম ঘ্রাণের, শীতে দূর্বাঘাসের শিশির ফোঁটা আর বসন্তে কোকিল ডাকা বাসন্তী তরুলতার ডগার বর্ণনা সাবলীল। ‘ষড় রূপে ষড় ঋতু’ ছড়ায় ছয় প্যারায় ছয়টা ঋতুর বর্ণনা মনোমুগ্ধকর। ‘বাংলা মা’ ছড়ায় দেশমাতৃকার প্রতি নির্ভেজাল ভালবাসা শিক্ষণীয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ছড়ায় ভিন্ন ভিন্নভাবে মধুর সুর ও তালে, আন্তরিক ছন্দে বাংলা মায়ের মাসে মাসে ঋতু, ছড়ার মেজাজে পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন। এসব ছড়াতেই কবি পৃথ্বীশ চক্রবর্তীর দেশ প্রেম, বাংলা প্রেম ধ্বনিময় হয়ে উঠেছে। এক রঙা ভেতরের এলাস্ট্রেশন আকর্ষণীয়। চার রঙা প্রচ্ছদ বাংলাদেশের ম্যাপে সাদামাঠা ছবি। মাত্র দুই ফর্মার বইখানা হাতে নিলে মনে হবে আট ফর্মার ওজন। শক্ত কাগজে ছাপা আকর্ষণীয়। নামকরা প্রকাশনী সপ্তবর্ণ কর্তৃক প্রকাশিত। হাতে নিলেই প্রকাশনীর আন্তরিকতা প্রকাশ পায়। বইখানা উৎসর্গ করেছেন- ছড়াকারের বন্ধু শিশু গল্পকার জসীম আল ফাহিম, সহধর্মিণী রোজিনা আক্তার ও একমাত্র কন্যা তানজিনা ফাহিমকে। এখানেও তাঁর অকৃপণ ভালবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়। কবি পৃথ্বীশ চক্রবর্তী তাঁর ‘নতুন রূপে ফাগুন বাংলাদেশ’-এ শীতের পরে বসন্তের আগমনকে সুন্দরভাবে সুস্বাগতম জানিয়েছেন এভাবে- ‘ভেঙে গেছে তরুলতার ভুল নতুন করে পেয়েছে ঠিক প্রাণ বন জুড়ে আজ সবুজ পাতায় দুল মন মাতানো লেবু ফুলের ঘ্রাণ! হিমেল বুড়ি শীতের দিনের শেষ নতুন রূপে ফাগুন বাংলাদেশ।’ গ্রন্থখানা যে কেউ হাতে নিলে এক নিমেশে পড়তে ইচ্ছে করবে। আমি গ্রন্থখানার বহুল প্রচার আশা করি।
×