ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘায়ুর মন্ত্র

প্রকাশিত: ১১:৪২, ১৮ মার্চ ২০১৯

 দীর্ঘায়ুর মন্ত্র

যুক্তরাজ্যে অত্যন্ত সুপরিচিত চিকিৎসক ডাঃ ডন হারপার। মানুষের স্বাস্থ্যের উপর টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞান দর্শকদের কাছে বিপুল প্রশংসিত হয়েছে। সম্প্রতি তিনি একটি বই লিখেছেন। বাইটির নাম ১০১ বছর সুস্থ হয়ে বাঁচুন। নিরোগ দেহে দীর্ঘ আয়ু লাভের জন্য এখানে তার দেয়া সাতটি টিপস তুলে ধরা হলো। লিখেছেন-শাকিল আহমেদ ঠিক মতো ঘুমান : রাতে ঠিক কতটুকু সময় ঘুমাচ্ছেন এবং সেই ঘুম কেমন হচ্ছে সে বিষয়টি সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি ঘুম যেমন খারাপ তেমনি অল্প ঘুমও খারাপ। ডাঃ হারপার বলেছেন, এই কারণে পরিমাণমতো ঘুমাতে হবে। যারা অল্প ঘুমিয়ে বড়াই করে বলছেন ‘আমার তো কিছু হচ্ছে না’ তারা বুঝতে পারছেন না সেই দিনগুলো সামনে অপেক্ষা করছে। একেক জনের জন্য ঘুমের প্রয়োজন একেক রকম। যেটুকু ঘুম আপনার ক্লান্তি দূর করে নতুন করে দিনটা শুরু করতে সাহায্য করে সেটাই আপনার পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুম ঘুম চোখে কাজে গেলে কিছুই ঠিকমতো হবে না। এটা শরীর ও মনের উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে ফোনের ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ দিয়ে নেয়ার মতো। হাঁটা চলাফেরা করুন : আমাদের অনেকেই প্রচুর সময় বসে থেকে কাটাই। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। সুসংবাদ হচ্ছে যে এজন্য আমাদের ম্যারাথন রানার হতে হবে না। যেটা করতে হবে সেটা হলো শরীরটাকে একটু নাড়ানো- মানে হাঁটা চলাফেরা করা। হারপার তার বই লিখতে গিয়ে এ রকম বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন যারা এক শতাব্দীকাল ধরে বেঁচে আছেন। তিনি দেখেছেন, তাদের সবার মধ্যেই একটি জিনিসের মিল আছে। সেটা হলো, তারা প্রচুর হেঁটেছেন। লিভারকে বিশ্রাম দিন : যাদের মদ্যপানের অভ্যাস আছে তাদের কাছে বিষয়টা খুব আনন্দের। কিন্তু ডাঃ হারপার বলছেন, এটাকে নেশায় পরিণত করা মানেই বিপদ। তিনি বলেন, আপনার লিভারকে একটু বিশ্রাম দিতে হবে। পরিবর্তে যত খুশি পানি পান করুন। কিন্তু লিভারের জন্য চাপ সৃষ্টিকারী পানীয় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। নিজের জিন সম্পর্কে জানুন : বিশেষ কোন অসুখে পড়ার প্রবণতা হয়ত আপনার মধ্যে বেশি থাকতে পারে। কিন্তু ডাঃ হারপার বলছেন, আপনার পরিবারের বা বংশের অন্যান্য সদস্যদের অসুখ বিসুখের ইতিহাস জানা থাকলে সেটা আমাদের সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করতে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, জিন শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোন কোন জিনের কারণে আমরা বিশেষ একটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। বংশের কারও কোন হয়েছিল কিংবা কোন রোগে কার মৃত্যু হয়েছিল সেটা মাথায় রাখা উচিত। একই ধরনের রোগ যদি নিজের কাছে আসে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কার্বোহাইড্রেট সচেতনতা জরুরী : ভাত ও রুটির মতো কার্ব পরিহার করা আজকালকার দিনে হয়ত একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ডাঃ হারপার বলছেন, ব্যালেন্সড ডায়েটের জন্য আমাদের এসবও খেতে হবে। খুব বেশি আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। এখানেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় রিফাইন বা মসৃণ কার্ব না খেয়ে বরং একটু জটিল ধরনের (মোটা আটার) কার্ব খাওয়ার কথা বলব। যেমন বাদামি চাল, আস্ত শস্য দানা সমেত মোটা আটার রুটি ইত্যাদি। প্রতিদিন হাসুন : সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত আনন্দের-এটা মনে রাখতে হবে। এটাকে দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজের অংশ হিসেবে দেখলে হবে না। এখানে মানসিকতার একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। বইটি লিখতে গিয়ে গবেষণা করার সময় তিনি একজন বিজ্ঞানীর করা একটি গবেষণা খুঁজে পেয়েছেন যেখানে তিনি দীর্ঘ আয়ুর সঙ্গে হাসিখুশি থাকার একটা সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, এমন কিছু করুন যা প্রতিদিন আপনাকে হাসিখুশি রাখবে। চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন : আমাদের অনেকেই নানা রকমের চাপের মধ্যে থাকি বা মানসিক চাপে ভুগি। এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর। সেটা শারীরিক ও মানসিক দু’ধরনের স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করে। তাই চাপ থেকে কিভাবে মুক্ত থাকা যায় তার উপায় প্রত্যেককে আলাদা আলাদাভাবে খুঁজে নিতে হবে। এজন্য একজন চিকিৎসক কিংবা এসংক্রান্ত অন্যান্য পেশাজীবীদের কাছ থেকেও সাহায্য নেয়া প্রয়োজন।
×