ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ভারতের প্রকাশনা উদ্যোগ বইসাঁকোর যাত্রা শুরু

প্রকাশিত: ১১:০৩, ১৯ মার্চ ২০১৯

বাংলাদেশ-ভারতের প্রকাশনা উদ্যোগ বইসাঁকোর যাত্রা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথমবারের মতো প্রকাশনা শিল্পের মাধ্যমে সমন্বিত পথচলা শুরু করল বাংলাদেশ ও ভারত। দুই বাংলার সাহিত্যের মেলবন্ধনে একসঙ্গে যুক্ত হলো দুই দেশের দুই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। রচিত হয়েছে বাংলাদেশের প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পত্রভারতীর যৌথ প্রকাশনার উদ্যোগ ‘বইসাঁকো’। ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এ উদ্যোগে বাংলাদেশের চার ও ভারতের তিন সাহিত্যিকের বই প্রকাশিত হয়। ঢাকায় গ্রন্থগুলোর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হলো সোমবার। পশ্চিমবঙ্গের পত্রভারতী থেকে প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে এ দেশের সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ‘সেরা দশ গল্প’, ফরিদুর রেজা সাগরের ‘এবারও হাফডজন ছোটকাকু’, মারুফুল ইসলামের ‘নির্বাচিত ১০১ কবিতা’ ও মাজহারুল ইসলামের ‘হুমায়ূন আহমেদের মাকড়সাভীতি এবং অন্যান্য’। অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের সমরেশ মজুমদারের ‘কথামালা’, সত্যম রায় চৌধুরীর ‘দুনিয়াদারি’ ও ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘আজও রোমাঞ্চকর : স্বাধীনতার রক্তঝরা গল্প’। ঢাকায় ‘বইসাঁকো’ প্রবর্তনা উপলক্ষে সোমবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সিনেপ্লেক্সে সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়। এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও পশ্চিমবঙ্গের গবেষক অধ্যাপক ইমানুল হক। আলোচনায় অংশ নেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ফরিদুর রেজা সাগর ও মারুফুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব দেন অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম এবং পত্রভারতীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে যোগাযোগ যত বৃদ্ধি পাবে, মৈত্রীর বন্ধন তত দৃঢ় হবে। যোগাযোগের বই বড় ভূমিকা রাখে। বই আনা নেয়া দস্যুতা করেও সম্ভব, আবার আইনীভাবেও আনা যায়। দস্যুতা করে বই আনা-নেয়া করলে লেখক ও প্রকাশক উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিক থেকে বইসাঁকো মহৎ উদ্যোগ। অন্যপ্রকাশ ও পত্রভারতীর এ উদ্যোগ সাহিত্যের বন্ধন দৃঢ় করছে। এ উদ্যোগে যেসব বই প্রকাশিত হবে তা বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলাভাষী অঞ্চলের পাঠকদের কাছে গৃহীত হবে। হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র বই বিপণনে দেশ ও বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পৃথিবীর বড় বড় শহরে যেখানে বাংলা ভাষাভাষী রয়েছেন এবং যারা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে ভালবাসেন, তাদের কাছে বই পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশী পাঠকদের অন্য কারও বই পড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকা লাগবে না। আমাদের দিকেই সবাই তাকিয়ে থাকবে। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বইসাঁকো প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এর মাধ্যমে দুই বাংলার মধ্যে সাহিত্যের আদান প্রদান হবে। পাঠকেরা নতুন স্বাদ পাবেন। প্রতিষ্ঠিত এবং নবীন লেখকদের লেখার মধ্য দিয়ে আমাদের সংস্কৃতির বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, আমার লেখা ছোটকাকু চরিত্রটি সাহসী মানুষের প্রতিচ্ছবি। ছোটকাকুর মতো সাহসী মানুষ এখন চারপাশে রয়েছে। তাদেরই মতো কিছু মানুষের উদ্যোগে বইসাঁকোর যাত্রা শুরু হলো। বইসাঁকোর প্রবর্তনা অনুষ্ঠানে আনিসুজ্জামানের ‘বিদ্যাসাগর ও অন্যেরা’ বইটি কলকাতায় প্রকাশের বিষয়ে পত্রভারতীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সমরেশ মজুমদারের ‘কথামালা’ বইটি প্রকাশের চুক্তি স্বাক্ষর করে অন্যপ্রকাশ।
×