ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবর্ধনা বাঘিনীদের

ফাইনালে উঠতে সাবিনাদের জোর অনুশীলন

প্রকাশিত: ১২:০৮, ১৯ মার্চ ২০১৯

ফাইনালে উঠতে সাবিনাদের জোর অনুশীলন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পরিকল্পনা ছিল দুটি। একটি সফল হয়েছে, আরেকটি হয়নি। একটি হারে আংশিক সফলতা এসেছে। তবে ওই হার ভুলে এখন সেমিতে চোখ রাখছে বাংলার বাঘিনীরা। এজন্য জোর অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে তারা। দলের জন্য সুখবর- কৃষ্ণা রানী সরকারকে সেমির ম্যাচে পাবেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। অনুশীলনে চোট পাওয়ায় গ্রুপের দুই ম্যাচেই খেলতে পারেননি এই নির্ভরযোগ্য ফরোয়ার্ড। আগামী বুধবার যদি সেমিতে জিততে পারে, তাহলে টানা দু’বার সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নাম লেখাতে পারবে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দল। আগের ফাইনালে (২০১৬ সালে) ভারতের কাছে ৩-১ গোলে হেরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল সাবিনাদের। সোমবার নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাস বাংলাদেশ দলকে এক উষ্ণ সংবর্ধনা দেয়। যেটাকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ বলে আখ্যায়িত করে। নেপালের বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মাশফি শামস, কাউন্সিলর এবং হেড অব চ্যান্সারি আল আলামুল ইমাম এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মাহবুবুল হক বাংলাদেশ দলকে ফুল এবং উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ওইদিন বিকেলে বাংলাদেশ দল কঠোর অনুশীলনে ঘাম ঝরায়। পুরো দল ছিল চনমনে। আগের মাচের হারের কোন রেশ ছিল না তাদের মাঝে। তাদের ভাবনা একটাই- ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে হবে। যদিও প্রতিপক্ষ হিসেবে ভারত বেশ কঠিন দলই বাংলাদেশের জন্য। পরিসংখ্যানই এ কথা বলে। কেননা সিনিয়র পর্যায়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে এর আগে কখনই ভারতকে হারাতে পারেনি তারা। এ পর্যন্ত ৮ বারের মোকাবেলায় ৭টিতেই হেরেছে লাল-সবুজরা। ড্র করেছে ১টি ম্যাচে। অভিজ্ঞতা, ফিটনেস, বয়স, গতি, ক্ষিপ্রতা ... সবকিছুতেই ভারত এগিয়ে। তবে বাংলাদেশের মেয়েরাও গত কয়েক বছরের মধ্যে আরও উন্নতি করেছে। এখন কেমন উন্নতি করেছে, সেটা বোঝা যাবে ২০ মার্চ। রবিবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচের পর সেমির লাইনআপ চূড়ান্ত হয়েছে। আরেক সেমিফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে স্বাগতিক নেপাল ও দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। সেমির দুটি ম্যাচই হবে আগামী বুধবার। দুই সেমির বিজয়ী দল ফাইনালে খেলবে শুক্রবার। শক্তিশালী ভারতের ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হওয়া অনুমিতই ছিল। অবশেষে সেটাই হয়েছে। নেপালের বিরাটনগরের শহীদ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমির ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলার বাঘিনীরা। ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক নেপালের কাছে হার মানে ৩-০ গোলে। গ্রুপ রানার্সআপ হয় তারা। পক্ষান্তরে ভারত ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে ৬-০ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৫-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে সেমিতে ওঠে। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপপর্ব ও ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। গ্রুপপর্বে গোলশূন্য ড্র করলেও শিরোপা লড়াইয়ে ৩-১ ব্যবধানে হেরেছিল কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে গ্রুপের সেরা হওয়ার লক্ষ্য ছিল বাংলার মেয়েদের। কিন্তু সেটা হয়নি। প্রথমে আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেননি সাবিনা-মারিয়ারা। বাংলাদেশ কোচ ছোটনও তাই মনে করেন। হার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কোচ বলেন, একটা আন্ডারডগ দল যদি প্রথম ১৫ মিনিটে গোল হজম করে তাহলে সেই দল এমনিতেই ভেঙ্গে পড়ে। আমাদের মেয়েদেরও সেটাই হয়েছে। ওরা এখানেও ততটা পরিণত ফুটবলার হয়ে ওঠেনি। তবে এই ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে শুধুই সামনে চোখ মেয়েদের। সবাই এটাও বুঝতে পেরেছেন, একটি ম্যাচ জিতলেই দলের চেহারা বদলে যাবে। ভারত শক্ত প্রতিপক্ষ হলেও মেয়েদের লক্ষ্য এখন সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালে জায়গা করে নেয়া।
×