(গতকালের চতুরঙ্গ পাতার পর)
॥ তিন ॥
২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে সেনাপ্রধান জেনারেল মইন যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যৌক্তিকতা সমর্থন করেছিলেন তখন কালবিলম্ব না করে জামায়াত সরকার সমর্থক হয়ে গিয়েছিল। ২০০৭-২০০৮ সালে ফখরুদ্দীন-মইন সরকারের ‘মাইনাস টু’ নীতির অংশ হিসেবে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে জেলে ঢোকানো হলেও জামায়াতের নেতারা বহাল তবিয়তে ছিলেন। জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য নিজামীকে কিছুদিন জেলে রাখা হয়েছিল বটে- দলের নেতাকর্মীরা যাতে তার মুক্তি উপলক্ষে মাল্যপরিহিত হাস্যোজ্জ্বল কারামুক্ত নেতাকে নিয়ে শোডাউন করতে পারে।
বিএনপিকে বার বার কলসিকানা ছুড়ে মারলেও জামায়াতের প্রতি বিএনপির অকাতর প্রেম বিতরণে কখনও কমতি ছিল না। ২০০৮ সালে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করে বিএনপি শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছে। ২০১৪ সালে নিবন্ধন বাতিলকৃত জামায়াতের পরামর্শে বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে যাবতীয় আগুন সন্ত্রাসের কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতকে নিজেদের নির্বাচনী প্রতীক উপহার দিয়ে বিএনপি আরও বড় পরাজয় এড়াতে পারেনি। কারণ বাংলাদেশের জনগণ জামায়াতকে নোংরা আবর্জনার মতো আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ এই বার্তাটিও দিয়েছে- জামায়াতের সঙ্গে যারা ঘর করবে, যারা জামায়াতকে প্রশ্রয় দেবে তাদের পরিণতিও জামায়াতের মতো হবে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের যে ভরাডুবি হয়েছে এই দলটির ৭৮ বছরের ইতিহাসে কখনও এমনটি ঘটেনি। ১৯৬১ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান ও বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ, প্রাদেশিক সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এবারের মতো সংসদ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা এই দলটির প্রায় ছয় দশকের নির্বাচনী ইতিহাসে দেখা যায়নি। বাংলাদেশ থেকে অস্তিত্ব বিলুপ্তির আশঙ্কায় জামায়াত এখন তাদের সহযোগী মৌলবাদীদের রাস্তায় নামাচ্ছে মওদুদীর দর্শন ‘মুরতাদ কী সাজা’ বাস্তবায়নের জন্য। জামায়াতের প্রতি জনঘৃণা এই দলটির মুরব্বিদেরও চিন্তিত করে তুলেছে। বাংলাদেশে জামায়াতের যে কোন ভবিষ্যত নেই এ কথা এখন আমেরিকার কংগ্রেসেও আলোচিত হচ্ছে। অতি সম্প্রতি (৬ মার্চ ২০১৯) আমেরিকার কংগ্রেসের এক প্রস্তাবে জামায়াতের সন্ত্রাসী রাজনীতি বন্ধের জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যে আমেরিকা সেদিনও ‘মডারেট’ ইসলামী দল হিসেবে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবির বিরোধিতা করেছে।
আমরা যখনই সুযোগ পেয়েছি আমেরিকার নীতিনির্ধারকদের বোঝাবার চেষ্টা করেছি। আমি শেষবার আমেরিকা সফর করেছি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। মার্কিন সরকারের অন্যতম পরামর্শদাতা আটলান্টিক কাউন্সিল আমার জন্য একটি সেমিনার আয়োজন করেছিল ১৮ সেপ্টেম্বর। দেশে ফিরে ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বি-মৌলবাদীকরণ ব্যবস্থাপত্র’ নামে এক প্রবন্ধে এই সেমিনারের উল্লেখ করে লিখেছিলাম- ‘ওয়াশিংটনে জামায়াত-বিএনপির লবি কতটা শক্তিশালী এটি টের পেয়েছি ‘আটলান্টিক কাউন্সিল’-এর সেমিনারে। এই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী গবেষণা ও পরামর্শক সংস্থা। ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওয়াশিংটনে আটলান্টিক কাউন্সিল তাদের সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশে জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসের উত্থান এবং এ বিষয়ে সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিরোধ সম্পর্কে এক আলোচনার আয়োজন করেছিল, যার মুখ্য আলোচক ছিলাম আমি। অংশগ্রহণকারীদের ভেতর স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিরাসহ ‘ব্রুকিংস ইনস্টিটিউট’, ‘হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’, ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ’, জন হপকিন্স স্কুল অব এ্যাডভান্স ও ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’, ‘ন্যাশনাল এনডোর্সমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি’, ‘হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন’, ‘ফ্রিডম হাউজ’, ‘গ্লোবাল বিজনেস সলিউশন্স’, ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংক’, ‘আইএমএফ’, ‘ইউএস এইড’ প্রভৃতি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আমার মূল বক্তব্য ছিল ৩০ মিনিটের। এরপর এক ঘণ্টা ছিল মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। অন্যরা জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসের উত্থানের বিষয়ে আমার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন, কেউ কেউ বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছেন, তবে ভিন্নমত উত্থাপন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম মাইলাম। বাংলাদেশের পর মাইলাম পাকিস্তানেও রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন ঝানু কূটনীতিক হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত বিষয়ে তার মতামত ‘স্টেট ডিপার্টমেন্ট’ যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
‘সভার সঞ্চালক ছিলেন আটলান্টিক কাউন্সিলের সাউথ এশিয়া সেন্টারের প্রাক্তন পরিচালক, সন্ত্রাস ও নিরাপত্তা গবেষক সুজা নেওয়াজ। তিনি আমার বক্তব্য সম্পর্কে মন্তব্য আহ্বান করলে মাইলাম বললেন- ১. আমি যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার সম্পর্কে কিছু বলিনি। বাংলাদেশ সরকার এ বিচারের নামে বিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতকে ধ্বংস করতে চাইছে। ২. আমি জামায়াতকে বাংলাদেশে তাবত সন্ত্রাসের গডফাদার বলেছি। অথচ তিনি বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্তির কোন প্রমাণ পাননি। ৩. জামায়াতের দুজন মন্ত্রী সরকারে ছিলেন, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ শোনা যায়নি, অথচ সরকার তাদের যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে ফাঁসি দিয়েছে। ৪. তার মতে অন্য যে কোন দলের তুলনায় বাংলাদেশে গণতন্ত্রের চর্চা সবচেয়ে বেশি করে জামায়াত। তারা নিয়মিত সম্মেলন করে, নেতৃত্ব নির্বাচন করে, যা অন্য দল করে না। ৫. আমি বাংলাদেশের মানুষের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় বাঙালিত্বের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে ধর্মীয় পরিচয়- অর্থাৎ একইসঙ্গে তারা যে মুসলমানও এটাকে অবমূল্যায়ন করেছি। এ বিষয়ে তিনি স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রিয় লেখক অধ্যাপক আলী রিয়াজের উদ্ধৃতিও দিয়েছেন।
‘মাইলামের জবাবে আমি যুদ্ধাপরাধের বিচারের পূর্বাপর পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেছি, বাংলাদেশে এটি একমাত্র ট্রাইব্যুনাল যা গঠিত হয়েছে গণহত্যার ভিকটিম ও নাগরিক সমাজের দীর্ঘ আন্দোলনের কারণে। ট্রাইব্যুনালে জামায়াত ছাড়া অন্যান্য দল, এমনকি ক্ষমতাসীন জোট আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির লোকদেরও বিচার হয়েছে। বিচারের সময় অভিযুক্তদের দল দেখা হচ্ছে না, যদিও আমরা দলেরও বিচারের পক্ষে। নাৎসি পার্টির মতো দল হিসেবেই জামায়াত ’৭১-এ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অংশ নিয়েছিল। এ বিষয়ে মাইলামকে ইউটিউবে আমার প্রামাণ্যচিত্র দেখার পরামর্শ দিয়েছি।
‘গণতন্ত্র সম্পর্কে মাইলামের বক্তব্যের একটি বিষয়ে আমি একমত যে, এই দলটি নিয়মিত সম্মেলন করে নেতা নির্বাচন করে। তবে যে দলের প্রতিষ্ঠাতা মনে করেন গণতন্ত্র একটি কুফরি মতবাদ এবং নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদ হচ্ছে আদর্শ মতবাদ, যে দল গণতন্ত্রের মূলভিত্তি জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার পরিবর্তে আল্লাহর সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী, যে দল কোরানকে রাষ্ট্রের সংবিধান মনে করে, যে দল নারী-পুরুষ এবং মুসলিম-অমুসলিমের সমান অধিকার ও মর্যাদায় বিশ্বাস করে না, যে দল শিয়া ও আহমদিয়া মুসলিমদের অমুসলিম ঘোষণার জন্য আন্দোলন করে, যে দল ব্লাশফেমি আইন চালু করে ধর্মবিরোধীদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য আন্দোলন করে- সে দল কিভাবে গণতান্ত্রিক হয়?
‘এরপর জামায়াতের দুর্নীতি সম্পর্কে বলেছি। এটা ঠিক যে ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপির মন্ত্রী বা নেতারা যেভাবে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন জামায়াতের মন্ত্রীরা সেভাবে দুর্নীতি করেননি। আর্থিক দুর্নীতি করেন তারা অন্যভাবে। বাংলাদেশে ইসলাম কায়েমের জন্য জামায়াত নেতারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এনে বিশাল অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, যেখান থেকে জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসের অর্থায়ন হচ্ছে। ক্ষমতায় থাকার সময় নিজামী বলেছিলেন তিনি ২৩ হাজার জামায়াত কর্মীকে প্রশাসনে নিয়োগ দিয়েছেন। জামায়াত যেভাবে প্রশাসনের দলীয়করণ করেছে, রাজনীতিকরণ করেছে, তার মাশুল এখনও আমাদের দিতে হচ্ছে। আর্থিক দুর্নীতির চেয়ে জামায়াত ঢের বেশি অপরাধ করেছে প্রশাসনের মৌলবাদীকরণের মাধ্যমে। বাংলাদেশে জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাস নির্মূলে এটি একটি বড় বাধা বলে আমি মনে করি।
‘সবশেষে বলেছি বাংলাদেশের মানুষের পরিচয়ের সঙ্কট সম্পর্কে, যে সঙ্কট সৃষ্টি করেছে পাকিস্তান আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ইসলামের উত্থান। বাংলাদেশে ধর্ম হিসেবে ইসলাম এসেছে এক হাজার বছর আগে। এর আগে দু’হাজার আগে এসেছে বৌদ্ধধর্ম এবং তিন হাজার বছর আগে এসেছে হিন্দুধর্ম। এসব ধর্মের আগেও বাংলাদেশে সভ্য মানুষ ছিল, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ে যারা বাঙালী। বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধর্মকে স্বাগত জানিয়েছেÑ শত শত বছর ধরে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির সঙ্গে সহাবস্থান করেছে। এককালে যে বাঙালী ধর্মীয় পরিচয়ে পাগান ও এনিমিস্ট ছিল তারা বিভিন্ন সময়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলাম, খ্রিস্ট, শিখ প্রভৃতি ধর্ম গ্রহণ করেছে। এর পাশাপাশি চার্বাকপন্থী ও অজ্ঞেয়বাদীও বাংলাদেশে ছিল। ধর্ম (ফেইথ) যে কোন সময়ে বদলানো যায়, কিন্তু বাঙালিত্বের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় কখনও বদলানো যাবে না। পাকিস্তান আন্দোলনের সময় রাজনৈতিক ইসলাম কিছু সময়ের জন্য প্রাধান্যে এসেছিল বটে, তবে পাকিস্তান আমলে ধর্মের নামে যাবতীয় শোষণ-পীড়ন এবং অন্তিমে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো ঘটনার কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে আমরা পাকিস্তানী ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্বের ধারণাকে কবর দিয়েছি।
‘আমার বক্তব্যের পর সঞ্চালক মাইলামের মন্তব্য জানতে চেয়েছেন। মাইলাম কোন কথা বলেননি। মাইলামের বক্তব্য আমাদের দেশে ‘প্রথম আলো’র মতো পত্রিকাও অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করে, বর্তমানে যিনি ওয়াশিংটনে জামায়াতের লবিস্টের মতো কথাবার্তা বলছেন। আটলান্টিক কাউন্সিলসহ ওয়াশিংটনের অন্যান্য গবেষণা সংস্থার সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশীয়বিষয়ক নীতি নির্ধারকরা জামায়াতে ইসলামীর মতো একটি ফ্যাসিস্ট মৌলবাদী সন্ত্রাসী দলকে ‘মডারেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’ মনে করলে তাদের ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ অন্তিমে প্রহসনে পরিণত হবে।’ (বাংলাদেশে আস্তিক-নাস্তিক দ্বন্দ্ব এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার; অনন্যা, ঢাকা ২০০৭)
শুধু জামায়াত নয়, অন্য কোন দল বা সংগঠন যাতে মওদুদীর ঘৃণা ও সন্ত্রাসের দর্শন প্রচার করতে না পারে তার বিরুদ্ধেও সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ধর্মের নামে রাজনীতি করতে গিয়ে পাকিস্তান আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। ব্যর্থ রাষ্ট্রের শিরোপা নিয়ে জামায়াতপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লোক দেখানো হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। জামায়াত ও পাকিস্তানপ্রেমের মাশুল দিতে গিয়ে বিএনপি আজ অস্তিত্বহীনতার চরম সঙ্কটে ভুগছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়- মৌলবাদের আগুন নিয়ে যারাই খেলতে চেয়েছে তারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। (সমাপ্ত)