নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ১৯ মার্চ ॥ প্রতি বছরের মতো এবারও শুষ্ক মৌসুমে শেরপুরের সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রায় ১৫টি পাহাড়ী গ্রামে খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওই সঙ্কটের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন পাহাড়ী ঝর্ণা, পুকুর ও মাটির কুয়ার পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তারা ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে ওই সঙ্কট নিরসনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নেই তেমন কোন মাথাব্যথা।
জানা যায়, শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার ওইসব পাহাড়ী গ্রামে গত ২/৩ মাস যাবত নলকূপগুলো থেকে পানি উঠছে না। এলাকাগুলো হচ্ছে ঝিনাইগাতী উপজেলার তামাগাঁও, খৈলকুড়া, সুরিহারা, ফাকরাবাদ, ভারুয়া, ধানশাইল, কাংশা, রাংটিয়া, পর্যটন এলাকা ছোট গজনী, সন্ধ্যাকুড়াসহ পাহাড়ী এলাকা এবং শ্রীবরদী উপজেলার বালিঝুরি, মালাকোচা, বিলভরট, বড়ইকুচি ও হালুয়াহাটিসহ স্থানীয় কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। গভীর নলকূপের মাধ্যমে ওই সঙ্কট মোকাবেলা করা সম্ভব হলেও একটি গভীর নলকূপ স্থাপনে ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা খরচ হওয়ায় তা যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না স্থানীয় অধিবাসীদের। উপায়ান্তর না পেয়ে অনেক কষ্ট স্বীকার করে ওইসব এলাকার অধিবাসীদের মধ্যে কেউ কেউ পার্শ¦বর্তী এলাকা থেকে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করে চলার চেষ্টা করলেও সবার ক্ষেত্রে তা সংগ্রহ করা দুরূহ বিষয় হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের গোসলসহ দৈনন্দিন কাজের জন্য নিরুপায় হয়ে পুকুর, ঝোরা, ডোবা ও মাটির কুয়ার খোলা পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে করে ওই এলাকার বাসিন্দারা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে পর্যটন এলাকা গজনী অবকাশেও ওই পানি সঙ্কটের কারণে ভ্রমণপিপাসুসহ যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে গেলে জানা যায়, গরম ও শুষ্ক মৌসুম হওয়ার পাশাপাশি ঝিনাইগাতীর মহারশী নদী, কালাঘুষা নদী ও পাহাড়ী ঝর্ণায় দীর্ঘদিন থেকে ড্রেজার মেশিন দ্বারা বালু উত্তোলনের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় প্রতিবছর পানির সঙ্কট দেখা দেয়। সীমান্তের সঙ্কটাপন্ন ওই গ্রামগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই নেই সরকারী ব্যবস্থাপনায় নলকূপ, তার উপর সরকারীভাবে বসানো স্বল্পসংখ্যক ও ব্যক্তি মালিকানায় বাসা-বাড়িতে থাকা নলকূপগুলোতে এখন পানি না ওঠায় সঙ্কট উত্তরণে গভীর নলকূপের বিকল্প নেই। কিন্তু এলাকাবাসী প্রায়শই স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে ধর্ণা দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না- এমনটাই দাবি স্থানীয় ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম, আল আমিন ও আজমির আলীসহ অনেকের। তারা দ্রুত প্রয়োজনীয় সংখ্যক গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার খাবার পানি সঙ্কট নিরসনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, পানির সঙ্কট দেখা দেয়ায় ইতোমধ্যে ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীর পাহাড়ী এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: