ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় সংর্ঘষে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর,আহত ২০,আটক ৯

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ১৯ মার্চ ২০১৯

ভোলায় সংর্ঘষে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর,আহত ২০,আটক ৯

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল হক দেওয়ান ও আওয়ামী লীগের নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারেফ হোসেন দুলাল সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা মারধর ও ব্যাপক সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় তান্ডব চালিয়ে ৯টি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করা হয়। নির্বাচনী অফিসের দেয়াল গুড়িয়ে দিয়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। এমনকি ২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,মটরসাইকেল ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সোমার রাত ১০ টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হামলা মারধরও ও সহিংস ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে উভয় পক্ষের ৯ জনকে আটক করেছে। এলাকায় ডিবি পুলিশ অবস্থান নিয়ে টহল দেয়। এদিকে গত কয়েক দিন ধরে হামলা ও সংঘষের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে করে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় ২ চেয়ারম্যান প্রার্থী এক অপরকে দায়ী করছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী জানান,সোমবার রাত ১২ টার দিকে মঙ্গল সিকদার উত্তর বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারেফ হোসেন দুলালের ২টি নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। এ সময় ক্ষিপ্ত সন্ত্রাসীরা দুলার মিয়ার অফিসের আসবাবপত্র শুধু ভাংচুরই করেনি। অফিসের দেয়ালের ইট পর্যন্ত ভেঙ্গে গুড়িয়ে ফেলে দিয়েছে। ওই বাজারের জনননি ইলেকট্রনিক্স এর মালিক জানান, তার ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জসিম প্রার্থী আনারস মার্কার সমর্থন করায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন রাত ১২টার দিকে তার দোকান ভাংচুরসহ লুট পাট করে। এতে তার প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। অপর দিকে উত্তর চাচড়া, ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ২টি অফিস ভাংচুর করা হয়। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক সামসুদ্দিন সুমন জানান, তাদের আওয়ামী লীগের অফিস প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারেফ হোসেন দুলালের কর্মীরা ভাংচুর করে। এ ঘটনায় তাদের লোকজন উত্তেজিত হয়ে প্রতিপক্ষের অফিসে তারা হামলা করে বলে স্বীকার করেন। এ সময় রিয়াজ,গিয়াস,আরজু আহত হয়। এসময় একটি ঔষধের দোকানেও হামলা চালানো হয়। অপর দিকে কাটাখালি স্লুইজের উত্তর মাথায় রাসেলের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা গন সংযোগকালে হামলা চালানো হয়। এ ছাড়াও চর মোজাম্মেলে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৩টি অফিস ভাংচুরের অভিযোগ যাওয়া গেছে। অন্য দিকে কাটা খালি এলাকায় একটি মটর সাইকেল ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর কয়েক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারেফ হোসেন দুলালের সমর্থক চাচড়া ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াদ হোসেন জানান, মূলত কাটার খাল এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা ভোট চাইতে গেলে প্রতিপক্ষ বাধা দিয়ে হামলা করলে সংর্ঘষের সূত্র পাতা হয়। এ সময় বহিরাগত আরজু ও রিয়াদের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। ২টি মটর সাইকেল ভাংচুর করে খালে ফেলে দেয়া হয়। এতে তাদের ১৫ জন আহত হয়। অথচ পুলিশ তাদের ৭ জনকে আটক করে। অপর দিকে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল হক দেওয়ান জানান, সোমবার রাতে বাটা কালিতে,মলংচড়া সেলিম বাজার,চাচড়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন তার নির্বাচনী অফিস স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন ভাংচুর করে। রতন মেম্বারে ছেলে মেয়েকে তাদের বকাড়ির সামনে কুপিয়েছে। বাাঁতে গিয়ে সাবেক আরজু চেয়ারম্যান আহত হয়। নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপি জামায়েতের লোকসহ সন্ত্রাসী নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসব করছে। এতে তার৮ জন আহত হয়। এদিকে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে ৯ জনকে আটক করে। তজুমদ্দিন থানাও ওসি ফারুক আহমেদ জানান, সংর্ঘষের ঘটনায় ৯জনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষ থেকে ১৬ জনের নামে ও অজ্ঞাত ১২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
×