ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিলাইছড়ি আওয়ামী লীগ সভাপতিকে গুলি করে হত্যা

রক্তভেজা পাহাড়ে কম্বিং অপারেশন শুরু

প্রকাশিত: ১১:০২, ২০ মার্চ ২০১৯

রক্তভেজা পাহাড়ে কম্বিং অপারেশন শুরু

মোয়াজ্জেমুল হক/মোহাম্মদ আলী ॥ উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়িতে সোমবার পাহাড়ী দুর্বৃত্তরা যে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে তাতে গোটা পাহাড় জুড়ে একদিকে উত্তপ্ত ও অন্যদিকে থমথমে পরিবেশ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় একযোগে এত প্রাণহানির ঘটনা স্মরণকালের বৃহৎ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জনসংহতি সমিতি (সন্তু গ্রুপ) ও ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর প্রসিত গ্রুপ সুপরিকল্পিতভাবে পাহাড়ে স্মরণকালের এই বৃহত্তম হত্যাকা-ের যে অবতারণা করেছে তা নিয়ে নিশ্চিত ধারণা পাওয়া গেছে। সেনা, বিজিবি, পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ওইদিন রাতেই ৭ এ উন্নীত হয়েছে। ১৭ জন গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিএমএইচে। এ ঘটনার তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ বুধবার খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। এদিকে, বাঘাইছড়ি হত্যাকা-ের ১৬ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড়ী দুর্বৃত্তরা মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তঞ্চ্যাঙ্গাকে। পরিস্থিতির অবনতি রোধে এবং দুর্বৃত্তদের দমনে সেনাবাহিনী কম্বিং অপারেশন শুরু হয়েছে বলে মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান দিয়েছেন সেনাবাহিনীর ২০৩ পদাতিক বিগ্রেড ও খাগড়াছড়ির রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক। এ অপারেশন জোরদার থাকবে বাঘাইছড়ি ও সন্নিহিত এলাকা জুড়ে। তবে রাঙ্গামাটির দশ উপজেলার যেসব পয়েন্টে পাহাড়ী দুর্বৃত্তদের আইন ও জনবিরোধী উৎপাত রয়েছে সে সব স্থানেও এ অপারেশন চলবে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। এদিকে, বাঘাইছড়ির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৭ জনে উন্নীত হয়েছে। সোমবার রাতে বাঘাইছড়ির ঘটনাস্থল থেকে চট্টগ্রাম সিএমএইচে আনার পথে নির্বাচনী কর্মকা-ে জড়িত গুলিবিদ্ধ আবু তৈয়ব প্রাণ হারিয়েছেন। বাঘাইছড়ির নয় কিলোমিটার স্থানে ব্রাশফায়ারের এ ঘটনায় সোমবার রাতেই ১৭ জনকে চট্টগ্রাম সিএমএইচে আনা হয়। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক ৭ জনকে রাতেই ঢাকায় সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাঘাইছড়ি হত্যাকা-ের ঘটনায় পাহাড় জুড়ে শোকাবাহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর পাশাপাশি আতঙ্কের মাত্রাও বেড়েই চলেছে। সংঘটিত হত্যাকা-ের প্রতিশোধ নিতে আরও একটি অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে স্থানীয় সকল মহলে শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িসহ সন্নিহিত সকল এলাকায় সেনা, পুলিশ ও বিজিবির টহল দ্বিগুণ করা হয়েছে। সোমবারের ঘটনার পর বাঘাইছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে, বাঘাইছড়িতে নিহতদের মধ্যে ৬ জনের ময়নাতদন্ত মঙ্গলবার বিকেলে সম্পন্ন হয়েছে এবং স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া প্রহরায় স্ব স্ব গন্তব্যে পৌঁছানো হয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলা, পুলিশ, বিজিবি ও সেনা প্রশাসনের পক্ষে অভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে জেএসএস সন্তু গ্রুপ ও ইউপিডিএফের প্রসিত গ্রুপ সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়কে উত্তপ্ত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত থেকে এ ধরনের রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে। বাঘাইছড়ি পুলিশ ঘটনার প্রাথমিক অনুসন্ধান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই এ সংক্রান্তে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে। এ মামলায় কাদের আসামি করা হচ্ছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে সোমবারের নির্বাচ চলাকালীন সময়ে দুপুরের দিকে বাঘাইছড়ি উপজেলাতে জনসংহতি সমিতি সন্তু গ্রুপ সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বড়ঋষি চাকমা ভোট গ্রহণে কারচুপির অভিযোগ এনে বর্জনের ঘোষণা দেন এবং বলেন, এভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা হলে অনাকাক্সিক্ষত যে কোন পরিস্থিতির দায়ভার প্রশাসনকে গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাঘাইছড়ি নয় কিলোমিটার নামক স্থানে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তদের ব্রাশফায়ারের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ৪ জন। ২ জন মারা যায় স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথে। আরেকজন মারা যায় চট্টগ্রাম সিএমএইচে আনার পর। প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্রে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, সোমবার বড়ঋষি চাকমা নির্বাচন বর্জনের পর যে ঘোষণা দেন, তারই বাস্তবতা ঘটেছে ভোটগ্রহণ শেষে। এতে কোন সন্দেহ নেই জেএসএস সন্তু গ্রুপ ও ইউপিডিএফ প্রসিদ গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে পাহাড়ের পরিস্থিতিকে অবনতিশীল করতে তৎপর। চট্টগ্রামে সিইসি ॥ বাঘাড়াইছড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সিএমএইচে আসেন। সেখানে তিনি বাঘাইছড়ির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন। এ সময় চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমানসহ সেনা ও সিভিল প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে সিইসি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে নির্বাচন শেষে সরঞ্জামাদি নিয়ে ফিরে আসার পথে নির্বাচন সংক্রান্তে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বহরে গুলির ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত এবং তারা কেন এ ঘটনা ঘটাল বিষয়টি এখনও পরিষ্কার হয়নি। তবে নির্বাচন সংক্রান্তে জড়িতদের ব্যাপারে প্রশাসনের কোন গাফিলতি ছিল না। দুর্বৃত্তরা সুযোগ বুঝে পেছন থেকে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ন্যূনতম ছাড় দেয়া হবে না ॥ সোমবার বাঘাড়াইছড়িতে সশস্ত্র পাহাড়ী দুর্বৃত্তদের হামলার প্রেক্ষিতে প্রাণহানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর ২০৩ পদাতিক ব্রিগেড ও খাগড়াছড়ি রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক। পরিদর্শন শেষে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এ ধরনের ঝঘন্য ঘটনার পর স্থানীয় সন্ত্রাসীরা গা-ঢাকা দিলেও তাদের সামান্যতম ছাড় দেয়া হবে না। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে সেনাবাহিনী কম্বিং অপারেশন শুরু করেছে বলে তিনি জানান। এ অবস্থায় কোনভাবেই সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাঁচতে পারবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।যে কোনভাবে সন্ত্রাসীদের আইনের হাতে সোপর্দ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাঘাইহাট জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম আজম, ২৭ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহাবুবুল ইসলামসহ সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা, পুলিশ ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বাঘাইছড়ি নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানের অভিযোগ ॥ বাঘাইছড়ির হত্যাকা-ের জন্য জেএসএস সন্তু গ্রুপ ও প্রসিত খিসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন বাঘাইছড়ি সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমা। তিনি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। মঙ্গলবার তিনি এক ভিডিও বার্তায় জানান দেন যে, পাহাড়ের স্থিতিশীলতা বিনষ্টে জেএসএস সন্তু গ্রুপ ও ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ এ ঘটনার নেপথ্যে থেকে ঘটনার সংঘটিত করেছে। বাঘাইছড়ির ঘটনায় নিহত ৭ জনের পরিচয় ॥ গত সোমবার দীঘিনালা বাঘাইছড়ি সড়কের নয়কিলোমিটার নামক স্থানে পাহাড়ী দুর্বৃত্তদের ব্রাশফায়ারে ঘটনাস্থলে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন হাসপাতালে যারা মারা গেছেন তারা হচ্ছেন সাজেকের কংলাক ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং আফিসার ও কাচালঙ্কা গার্লস স্কুলের শিক্ষক মোঃ আমীর আলী (৩৭), নির্বাচনী কর্মকর্তা আবু তৈয়ব (৪০), আনসার ভিডিপি সদস্য জাহানারা বেগম (৪০), বিলকিস আক্তার (৫০), মিহির কান্তি দত্ত (৪০), মোঃ আল আমিন (২৫) ও জিপ হেলপার মন্টু চাকমা (৩০)। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতরসহ আহতদের মধ্যে ১০ জন চট্টগ্রাম সিএমএইচে, ৭ জন ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছে। উল্লেখ্য, গত সোমবার বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে নির্বাচনী কর্মী বহরে উপজাতীয় পাহাড়ী দুর্বৃত্তরা ব্রাশফায়ার করলে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে। নির্বাচনী কর্মকর্তার বহর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে নির্বাচন শেষে সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৬টার দিকে সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম কংকলাক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাচালং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঘাইহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র থেকে বিজিবি ও পুলিশ প্রহরায় নির্বাচনী সরঞ্জামাদি দিয়ে বাঘাইছড়ি সদরে ফিরছিলেন। দীঘিনালা-বাঘাইছড়ি সড়কের নয় কিলোমিটার নামক স্থানে দুর্বৃত্তরা এ বহরে হামলা চালায়। নির্বাচনী কর্মকর্তারা ছিলেন চাঁদের গাড়িতে। ব্রাশফায়ারের পর চালক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাদের গাড়ি থেকে নামানোর পর একের পর এক গুলিবিদ্ধদের মৃত্যু ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। পার্বত্য মন্ত্রীর শোক ॥ বাঘাইছড়ির ঘটনার প্রতিবাদ ও নিহতদের স্বজনদের প্রতি শোক জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি। খাগড়াছড়িতে আজ হরতাল ॥ গত সোমবার বাঘাইছড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বহরে পাহাড়ী দুর্বৃত্তদের ব্রাশফায়ারে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হওয়ার ঘটনায় আজ খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহবান করেছে পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ। তদন্ত কমিটি ॥ বাঘাইছড়ি হত্যাকা-ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সচিব দীপক চক্রবর্তীকে প্রধান করে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নজরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছ। কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। নিন্দা ও শোক প্রকাশ ॥ রাঙ্গামাটিতে ধারাবাহিক হত্যাকা-ের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। তিনি বর্বরোচিত এই হামলার ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী। মঙ্গলবার এক শোক বার্তায় সোমবারের বর্বরোচিত হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা ও শোক প্রকাশ করেন। বিলাইছড়িতে আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা ॥ বাঘাইছড়িতে নৃসংশ হত্যাকা-ের ঘটনার মাত্র ১৬ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড়ে আরেক খুনের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকাল অনুমান ৯টার দিকে পাহাড়ী দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুরেশ শান্তি তঞ্চঙ্গ্যাকে। রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর কবির সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সুরেশ কান্তিকে পাহাড়ী দুর্বৃত্তরা গুলিতে হত্যা করেছে। তিনি নৌকায় করে ফারুয়া থেকে বিলাইছড়িতে ফিরছিলেন। বিলাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পারভেজ আহমদ জানিয়েছেন, সুরেশ কান্তি সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটের কাজে ওবাছড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বিলাইছড়ি ফেরার পথে এলাকার তিনকোনিয়া পাংকুয়াপাড়া এলাকায় ৪/৫ জনের একটি দুর্বৃত্ত দল নৌকা থেকে নামিয়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে হত্যা করে। ওই নৌকায় নিহতের পুত্রসহ আরও ৫ জন ছিলেন। রাঙ্গামাটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুসা মাতব্বর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এদিন সকাল নয়টার দিকে উপজেলার ফারুয়া থেকে সুরেশ কুমার ফিরছিলেন। মুসা মাতব্বর এ হামলার জন্য জেএসএস সন্তু গ্রুপকে দায়ী করে বলেছেন, এ হত্যাকা-ের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটি শহরে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হচ্ছে।
×