ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৬ বিদেশী কোম্পানির দরপত্র দাখিল

আদালতের রায়ের পর থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের জটিলতা কাটল

প্রকাশিত: ১১:০৩, ২০ মার্চ ২০১৯

আদালতের রায়ের পর থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের জটিলতা কাটল

আজাদ সুলায়মান ॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত করে হাইকোর্ট বিভাগের দেয়া আদেশ খারিজ করে দিয়েছেন আপীল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। আপীল বিভাগের এ আদেশের ফলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র দাখিলে আর কোন বাধা রইল না। মঙ্গলবার আপীল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে হাইকোর্ট বিভাগ প্রদত্ত স্থগিতাদেশের উপর শুনানি শেষে আদালত এ সিদ্ধান্ত দেন। শুনানিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং ব্যারিস্টার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন। এদিকে আদালতের এ আদেশের পর গতকাল সিভিল এভিয়েশন সদর দফতরে থার্ড টার্মিনালের দরপত্র দাখিল করা হয়। এতে দুটি জয়েন্ট ভেঞ্চারের ছটি বিদেশী কোম্পানি দরপত্র দাখিল করে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানকার প্রকৌশল দফতরে দরপত্রগুলোর টেকনিক্যাল অফারের প্রাথমিক বাছাইয়ের কাজ চলছিল। গত বৃহস্পতিবার এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রিট পিটিশনটিতে দাবি করা হয়েছিল যে, ওই প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কারিগরি ইউনিটের (সিপিটিউ) বিধান মানা হয়নি। মঙ্গলবার চেম্বার জজ আদালতে শুনানির সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবীরা আদালতে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরেন। তারা আদালতে প্রমাণ করেন যে, রিট পিটিশন দায়েরকারী ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের কাছে তথ্য গোপন করেছেন। প্রকৃতপক্ষে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট ২০০৬ এর সেকশন ৩ এর জিতে বলা আছে যে, যদি কোন দাতাসংস্থা বা দেশে ঋণ বা অর্থ সহায়তায় কোন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়- সেক্ষেত্রে সেই প্রকল্পে দরপত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট এ্যাক্ট ২০০৬ এর বিধি বিধান প্রযোজ্য হবে না। ওই ক্ষেত্রে দাতাসংস্থা বা দেশ কর্তৃক প্রযোজ্য শর্ত প্রয়োগ হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে জাইকা অর্থায়ন করছে বিধায় আলোচ্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে জাইকার শর্তই প্রাধান্য পাবে। এক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে কোন ধরনের অনিয়ম করেনি। উল্লেখ্য, হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত রিট পিটিশন এ তুরস্কের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান টিএভি-গ্যাপ ইনসাত দাবি করে যে, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের কাছে দরপত্র বিক্রি করেনি। প্রকৃতপক্ষে বাস্তব অবস্থা ছিল এই যে, প্রথমে দরপত্র কেনার জন্য আইএফও সনদের শর্ত ছিল। উল্লিখিত নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের আইএফও সনদ না থাকায় প্রথমে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে দরপত্র বিক্রি করেনি। পরে উক্ত শর্ত শিথিল করায় তাদের কাছে পত্র বিক্রয় করা হয়। তুরস্কের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত রিটে ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের কাছে তথ্য গোপন করার বিষয়টি এবং এর পেছনের অসৎ উদ্দেশে মঙ্গলবার চেম্বার জজ আদালতে তুলে ধরা হয়। সার্বিক শুনানি শেষে চেম্বার জজ আদালত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে নিয়মের কোন ব্যত্যয় হয়নি এবং অভিযোগকারীদের অভিযোগ আইনের ধারা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। সিভিল এভিয়েশন জানিয়েছে, এ প্রকল্পে অংশগ্রহণ করার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ২১টি শীর্ষ প্রতিষ্ঠান দরপত্র কিনে। তার মধ্যে ৬ কোম্পানি মিলে দুটি জয়েন্ট ভেঞ্চার হিসেবে অংশ নেয়। পৃৃথিবীর শীর্ষ বিমানবন্দর নির্মাণকারী এ প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, জাপানের শিমুজি, আইটিডি, জেজিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার ও মিতসুবিসি, ফুজিটা, স্যামসাং জয়েন্ট ভেঞ্চার। টু ইনভেলাপ পদ্ধতির এ দরপত্রে মঙ্গলবার শুধু টেকনিক্যাল অফার খোলা হয়। যেটা বাছাইয়ে টিকবে শুধু সেটারই ফাইন্যান্সিয়াল অফার খোলা হবে।
×