ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টেকসই উন্নয়নে প্রকৌশলী প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা রাখতে হবে ॥ রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ১১:১৩, ২০ মার্চ ২০১৯

টেকসই উন্নয়নে প্রকৌশলী প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা রাখতে হবে ॥ রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মসূচী জনবান্ধব ও টেকসই করতে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১’ গ্রহণ করেছেন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন কাজ জনবান্ধব ও টেকসই করতে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা রাখতে হবে। খবর বাসস’র। রাষ্ট্রপতি মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর একাদশ সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বলেন, যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। দেশের সাহসী জনগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। তিনি বুয়েট কে দেশের প্রকৌশল ও কারিগরি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা সময়ের দাবি পূরণে প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণা আরও এগিয়ে নিতে আরও অবদান রাখবে। রাষ্ট্রপতি দেশ থেকে মেধা পাচার বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, স্থপতি এবং পরিকল্পনাবিদ উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে যাচ্ছে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই আর দেশে ফিরে আসছেন না। এ কারণে, দেশ ও জনগণ তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি দেশ ও জনগণের কল্যাণে আরও বেশি করে অবদান রাখতে তাদের সকলের প্রতি আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপতি সদ্য গ্রাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ করতে তাদের মেধা ও সৃষ্টিশীলতা কাজে লাগাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান। তিনি তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সবসময় আন্তরিক হতে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, তোমরা চাকরির সুবাধে বিশ্বের যে প্রান্তেই থাক না কেন নিজ মাতৃভূমিকে কখনও ভুলবে না। তিনি বলেন, সর্বদাই বড় হবার স্বপ্ন দেখবে এবং দেশ, জাতি,সমাজ, পরিবার এবং নিজের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাবে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কোন অন্যায়ের সঙ্গে আপোস না করতে সদ্য বুয়েট গ্রাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবকিছুই করবে নিজের মেধা, সততা এবং আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফল উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ এখন মহাকাশ স্যাটেলাইট জগতের গর্বিত অংশীদার। তিনি বলেন, সরকার বহুমুখী পদ্মাসেতু, বিভিন্ন বিদ্যুত প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর, ঢাকা মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এক্ষেত্রে বুয়েট প্রোকৌশলীদের অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে হবে। রাষ্ট্রপতি বন্যা, নদী ভাঙ্গন, নদী শাসন, পানি সরবরাহ ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা ও জলাবদ্ধতাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা-প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়নে অবদান রাখতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রাজুয়েটদের জন্য বুয়েট সারাবিশ্বে অধিক পরিচিত। ইতোমধ্যেই এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩২ হাজারের অধিক প্রকৌশলী, স্থপতি এবং পরিকল্পনাবিদ বের হয়েছে। কনভোকেশনে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৫ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েট, পোস্ট গ্রাজুয়েট এবং পিএইচডি ডিগ্রী সনদ গ্রহণ করেন। ১৮ জন শিক্ষার্থী সবোর্চ্চ নম্বর প্রাপ্তির জন্য স্বর্ণপদক লাভ করেন। অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমাবর্তনে বক্তব্য রাখেন।
×