ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খোকন ভূঁইয়া

‘টেলিভিশন গায়েব হয়ে গেছে’ ॥ নাদিয়া

প্রকাশিত: ১২:২৭, ২১ মার্চ ২০১৯

‘টেলিভিশন গায়েব হয়ে গেছে’ ॥ নাদিয়া

সালহা খানম নাদিয়া। অভিনয় আর সৌন্দর্যের মিশেলে তিনি মুগ্ধ করে চলেছেন বিনোদনবাক্সের দর্শকদের। বিজ্ঞাপন দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে নাটক, শর্টফিল্মে নিয়মিত কাজ করছেন। নিজের ব্যস্ততা আর ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি অভিনয় যারা করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বললেন চর্চার বিকল্প নেই। সম্প্রতি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘রেইন লাভ’ অন্তর্জালে মুক্তির পর আবারো আলোচনায় আসে- নাদিয়া। দীপ্ত টেলিভিশনে প্রচার হচ্ছে নাদিয়া অভিনীত হরিশংকর জলদাসের ‘জলপুত্র’ উপন্যাস অবলম্বনে ধারাবাহিক নাটক ‘জলপুত্র’। বিপরীতে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। এই ধারাবাহিকের গল্পে দেখা যাবে, প্রিয়জনের মন জয় করতে নানা ফন্দি করেন মোশাররফ করিম। তারপরও হতাশ হতে হয়েছে মোশাররফকে। কারণ নাদিয়া যে বেকার প্রেমিকের কথা ভাবতেই পারে না। শেষে ভালবাসর মান রক্ষায় প্রেমিক বেছে নেয় হোম ডেলিভারির কাজ। ভালবাসার মানুষকে পেতে দারে-দারে ছোটেন বাইসাইকেল করে। নাম ‘আক্কেলগঞ্জ হোম সার্ভিস’- বেশিরভাগ শিল্পী ই-দুনিয়ায় জন্য কাজ করছে। এটি কতটুকু ইতিবাচক বলে মনে হয়? (দীর্ঘ নিঃশ্বাস) আমাদের সংস্কৃতি এখন ‘ওয়েব সিরিজ মাধ্যম’ হয়ে গেছে। বাহিরের দেশে যেহেতু এমটা হচ্ছে তাই আমাদের দেশেও হওয়া উচিত। টিভিতে বিজ্ঞাপনের জন্য সবাই আফসোস করে ঠিকভাবে নাটক দেখা যায় না। তবে ওয়েব সিরিজেও কিন্তু বিজ্ঞাপন চলে আসছে, বিভিন্ন কায়দায় দেখানো হচ্ছে। বর্তমানে আমার মা নানু অনলাইনে নাটক দেখে। অনলাইন মাধ্যমের জন্য দিন দিন টিভির দর্শক কমে যাচ্ছে। হলিউড-বলিউডে ‘#মি টু’ আন্দোলনে কেঁপে উঠল। আমরা নীরব থাকলাম। তাহলে আমাদের এখানে পরিবেশ খুবই ভাল? আমাদের এখানকার সবাই লাজুক। আমাদের দেশের শিল্পীদেরও এ রকম পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। আমি নিজেও দুই-একবার এ রকম পরিস্থিতির শিকার হয়েছি। তবে কেউ মুখ খুলছে না। সাহস করে কেউ মুখ খুললেই একে একে অনেকেই মুখ খুলবে। আমিও অপেক্ষা করতেছি দেখি কে এমন সাহস করে মুখ খুলে। তখন আমিও মুখ খুলব। -বললেন নাদিয়া। যারা এ ধরনের ঘটনার শিকার, তাদের কী করা উচিত? এটা কি করা উচিত ঠিক বুঝে আসছে না। তবে সবাই মেয়েদেরই দোষ দেবে যে কাজের জন্য এটা করছে। কিন্তু মেয়েদের হয়রানি করা হয়। শুধু সংস্কৃতি মাধ্যমেই নয় আইনজীবী থেকে শুরু করে সব জায়গায় এ রকম হচ্ছে। একজন মানুষের কথার শুরুতেই বোঝা যায়। সে ব্যক্তি হিসেবে কেমন। কি বলতে চাচ্ছে। তখন তাকে সুযোগ না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে আসতে হবে। সিনিয়রদের সহযোগিতা নিতে হবে। এখন অনেক সংগঠন আছে যেখানে অভিযোগ করা যায়। নতুনদের অভিনয়ের ব্যাপারে মনযোগী হতে হবে। থিয়েটার করে আসতে হবে। প্রথমেই কাক্সিক্ষত চরিত্র পাওয়া যায় না। সময় লাগে কাক্সিক্ষত চরিত্র পেতে। তবে উভয়েক্ষেত্রে কিছু ত্রুটি আছে। ১১ বছরের ক্যারিয়ারের অনেক অফার পেয়েছি। তখন অনেকেই বলতেন যাদের আইডল মনে করো তারাও এ রকম করে আসছে। তবে কখনও এসবে গা ভাসাইনি। তাদের বলেছি নাচতে নামলে ঘোমটা দিয়েই নামব। যেখানে নিরাপদ মনে হয়নি সেখান থেকে পাশ কাটিয়ে চলে এসেছি। তাদের সুযোগ দেইনি। তা ছাড়া কিছু পরিচালকও সিনিয়ররা আমাকে সহযোগিতা করেছে। পরিষ্কার পথ দিয়ে হেঁটেছি। ভাল মানুষের জন্য এখনও টিকে আছি। আর কেউ যদি ‘#মি টু’র চক্করে গা ভাসাতে চায়? আমি মনে করি সে শিল্পীই নয়। শিল্প চর্চা করতে আসেনি। গা ভাসানোর জন্য অন্য অপশন আছে। সে সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে এসেছে। শিল্পকে এভাবে কলঙ্ক করা উচিত নয়। ভালবেসে অভিনয় করেন নাদিয়া। যতদিন বেঁচে থাকবেন অভিনয় করে যেতে চান, বিনিময়ে তার চাওয়া শুধুই দর্শকদের ভালবাসা।
×