ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অভিনেত্রীর খোঁপার মধ্যে বিষিদ্ধ মাদক

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২১ মার্চ ২০১৯

অভিনেত্রীর খোঁপার মধ্যে বিষিদ্ধ মাদক

অনলাইন ডেস্ক ॥ পরনে জিন্স আর টপ। চুল পরিপাটি খোঁপা করে বাঁধা। মুম্বাইয়ের বিমান ধরতে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে অনেকেই তাঁকে চিনতেও পারলেন কলকাতা এবং মুম্বাইয়ের মাঝারি মাপের মডেল হিসাবে। সিকিউরিটি চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট পর্দা ঢাকা ঘরে মহিলা সিআইএসএফ কর্মী দেহ তল্লাশি করে প্রায় ছেড়েও দিচ্ছিলেন ওই তরুণীকে। কিন্তু হঠাৎই তাঁর চোখ পড়ল মডেলের খোঁপাতে। অনুরোধ করলেন খোঁপা খুলতে। প্রথমে রাজি হচ্ছিলেন না ওই অভিনেত্রী মডেল। শেষ পর্যন্ত সিআইএসএফ কর্মীর চাপে খোঁপা খুলতেই বেরিয়ে এল প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া এক মুঠো রঙিন ট্যাবলেট। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আটক করা হয়। কারণ অভিজ্ঞ সিআইএসএফ কর্মীদের সন্দেহ হয় ওই ট্যাবলেট কোনও নিষিদ্ধ মাদক। পরে বিশেষজ্ঞরা ওই ট্যাবলেট পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন নিষিদ্ধ মাদক এমডিএমএ বলে। বসিরহাটে আদি বাড়ি ওই মডেল গত পাঁচ বছর ধরে মুম্বাইয়ের বাসিন্দা। মুম্বাইয়ে মডেলিংয়ের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি তেলুগু ছবিতে নায়িকার ভূমিকাতেও অভিনয় করেছেন। টলিউডেও তিনি বেশ পরিচিত মুখ। ২০০৯ সাল থেকে একাধিক বাংলা ছবিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সিআইএসএফ সূত্রে খবর, জেরার সময় জানা যায় তিনি একটি পার্টিতে গিয়েছিলেন মধ্য কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলের ডিস্কোথেক-এ। সেখানে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের মাদক নিচ্ছিলেন। ওই ডিস্কোথেক থেকেই এমডিএমএ সংগ্রহ করেন ওই মডেল। তদন্তকারীদের কাছে ওই মডেল দাবি করেছেন, তিনি প্রথমবার এমডিএমএ নিয়েছেন। পাচার করার উদ্দেশ্যে নয়, নিজেই ব্যবহার করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সিআইএসএফ সূত্রে খবর, ওই অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছেন, ওই দিনের পার্টিতে কলকাতা এবং মুম্বাইয়ের মডেলিং এবং ফ্যাশন জগতের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তদন্তকারীরা নিশ্চিত নন, তিনি নিজের ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন না মাদক পাচার চক্র তাঁকে কাজে লাগাচ্ছিল ‘বাহক’ হিসাবে। সিআইএসএফ পরবর্তীতে ওই মডেলকে নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর(এনসিবি)-র হাতে তুলে দেয়। এনসিবি কর্তা বলেন,“এমডিএমএ-সহ একজনকে বিমানবন্দর থেকে সিআইএসএফ আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। তাঁকে আমরা গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করেছি। এই মুহূর্তে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন।” এনসিবি কর্তারা ওই মাদকের উৎস সম্পর্কে কিছু বলতে না চাইলেও, কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের এক আধিকারিক শহরে এমডিএমএ-র মত পার্টি ড্রাগের রমরমা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তাঁরা বিভিন্ন সময়ে খবর পেয়েছেন শহরের অনেক প্রাইভেট পার্টিতে অবাধে বিকোচ্ছে পার্টি ড্রাগ। শুধু প্রাইভেট পার্টি নয়, ডিসকোথেকেও যে পার্টি ড্রাগের রমরমা তা স্বীকার করে নেন ওই পুলিশ আধিকারিক। তিনি বলেন,“ বহু ক্ষেত্রেই ওই পার্টিতে সেলেবরা যাতায়াত করেন। আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত নই ওই সেলেবরা নিজেরা পার্টি ড্রাগ ব্যবহার করছেন কি না। তবে ওই পার্টিগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত অনেকেই ওই মাদকের কারবারের সঙ্গে যুক্ত।” এর আগে এনসিবি মধ্য কলকাতার একটি ডিস্কোথেকের ডিজেকে গ্রেফতার করেছিল পার্টি ড্রাগের কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে। তখনই সামনে এসেছিল ডিজে এবং বিভিন্ন পার্টির আয়োজকদের একটি শক্তিশালী চক্রের অস্তিত্ব যাঁরা সরাসরি মাদক কারবারে যুক্ত এবং শহরের একাধিক প্রথম সারির নাইট ক্লাব এবং ডিস্কোথেকে সক্রিয়। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×