ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পায়রার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংকট

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২১ মার্চ ২০১৯

পায়রার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংকট

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ বিভাগের পটুয়াখালীর পায়রায় কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হলেও বিদ্যুতের অভাবে তা পরীক্ষা করা যাচ্ছেনা। পটুয়াখালী-পায়রা ৪৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় বিদ্যুৎ আনা যাচ্ছেনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, চলতি মার্চ মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরীক্ষা হওয়ার কথাছিলো। আর আগামী ২৪ আগস্ট থেকে এ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক সঞ্চালনের কথা। এ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ গোপালগঞ্জ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য যে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে, তাও সময়মতো শেষ হচ্ছেনা। ফলে কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি নির্মিত হলেও উৎপাদনে আসা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এতে সরকার কমপক্ষে ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পরতে পারে। সূত্রে আরও জানা গেছে, পায়রায় ১৩২০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট থেকে মোট বিদ্যুৎ আসবে ২৬৪০ মেগাওয়াট। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিরবিচ্ছিন্ন জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পটুয়াখালী-পায়রা ১৩২ কেভি (কিলো ভোল্ট) এবং পায়রা-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভির ১৪৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপনের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি)। এ লাইন স্থাপনের জন্য ২০১৬ সালে পায়রা কর্তৃপক্ষের সাথে পিজিসিবি’র চুক্তি হয়। তারা পটুয়াখালী-পায়রা সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজটি দেয় দেশীয় প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স পাওয়ারকে। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর পিজিসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম-আল বেরুনী বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে লেখা এক চিঠিতে জানান, ২০১৯ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হবে। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মাওলা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কেন্দ্রের যন্ত্রপাতিগুলো আলাদাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা দরকার কিন্তু বিদ্যুতের অভাবে সে কাজ থেমে রয়েছে। এ ব্যাপারে পিজিসিবি’র প্রধান প্রকৌশলী প্রণব কুমার রায় বলেন, সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, বর্তমান অবস্থায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সঠিক সময়ের মধ্যে নির্মাণ না করায় উৎপাদনে যেতে পারছে না। এতে ক্ষতি হবে কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন ডলার বা ৮০০ কোটি টাকা। সূত্রগুলো আরও জানান, বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এলে সরকারের ছোট ছোট তেলভিত্তিক কেন্দ্র বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ এগুলোর উৎপাদন ব্যয় কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের চেয়ে আড়াই গুণেরও বেশি। উল্লেখ্য, সমান মালিকানায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যৌথভাবে নির্মাণ করছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড ও চীনা প্রতিষ্ঠান সিএমসি। এ দুটি প্রতিষ্ঠান মিলে কেন্দ্র পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে পৃথক একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছে।
×