স্টাফ রিপোর্টার ॥ উপজেলা নির্বাচনে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির হামলার ঘটনাকে পাহাড়ের দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক সমস্যা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, বাঘাইছড়ির বিষয়টি তদন্তাধীন। এখনই সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যচ্ছে না। তদন্তের পর আসল বিষয় জানা যাবে। এখন পর্যন্ত মনে করি সেখানে দীর্ঘদিনের যে আঞ্চলিক সমস্যা আছে এটি তারই বহির্প্রকাশ। নির্বাচনে যারা বিরোধিতা করেছে তাদের কেউ এই কাজ করতে পারে উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত খাগড়াছড়ির বাঘাইছড়ির ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, পাহাড়ের ওপর থেকে দুষ্কৃতকারীদের অতর্কিত গুলিবর্ষণে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সাতজন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৃশংস ও বর্বর হামলায় নির্বাচন কমিশন মর্মাহত। এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে সাতজন ও বাকিদের চট্টগ্রামে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে কমিশন তাদের উদ্ধার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
তিনি বলেন, কমিশন আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। নিহতদের পরিবার পিছু সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দেয়া হবে। আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে কমিশন। এছাড়া আহতদের ধরন বুঝে ১ লাখ বা ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এছাড়া নিহতদের পরিবারের কেউ যদি চাকরিযোগ্য থাকে এবং নির্বাচন কমিশনে যদি সুযোগ থাকে তাহলে তাদের চাকরি দেয়া হবে।
তিনি বলেন, পার্বত্য এলাকায় ভোটের সময় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। ভোটের সময় দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থাও ভাল থাকে না। সারাদেশে উপজেলা ভোটে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পার্বত্য এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা থাকলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেয়া হয়। যাতায়াত ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পার্বত্য এলাকায় ভোটে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন করা হয়। হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। কমিশন সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে। ঘটনার দিন বিমানবাহিনী এবং সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এগুলো চোরাগুপ্তা হামলা। এ জাতীয় ঘটনা ঘটবে এটা তো কেউ আশাা করে না। সেনাবাহিনী মোতায়েনের কারণে সারাদিন নির্বাচনে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যদিও তারা কোথাও কোথাও অপচেষ্টা চালিয়েছিল। সর্বক্ষণিক টহলদারির কারণে তারা নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি। রাতের অন্ধকারে অতবড় পাহাড়ী অঞ্চলে কোথায়, কীভাবে এ জাতীয় আক্রমণ হয় এটা এ্যাসেস সম্ভব নয়। এ রকম হামলা স্থায়ী হয় না। এক মিনিট বা দুই মিনিট হামলা করে তারা চলে যায়। এক দেড় মিনিটের মধ্যে একটা বাহিনী প্রস্তুতি নিয়ে আবার কাউন্টার এ্যাটাক করা সম্ভব নয়। হামলার পর বিজিবির যে গাড়ি ছিল তারা সেখানে গিয়ে উদ্ধার করা আহতদের ওখান থেকে সরিয়ে নেয়া, আমাদেরকে খবর দেয়া, হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা। এসব কাজ তারা করেছে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তারা কেউ যে গাফিলতি করেছে তা নয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: