ইটের বিকল্প কংক্রিট ব্লক

ক্রমবর্ধমান নগরায়ণের ফলে সারাদেশেই প্রচুর পাকা দালান নির্মিত হচ্ছে। সার্বিক সুবিধা বিবেচনায় মানুষ এখন কাঠ, টিনের বদলে ইট, সিমেন্টের ঘর বানাচ্ছে। ফলে বেড়ে গেছে ইটের চাহিদা। বাংলাদেশে সাধারণত জমির উপরিভাগের মাটি পুড়িয়ে ইট প্রস্তুত করা হয়। ফলে এতে পরিবেশের নানামুখী ক্ষতি হচ্ছে। ইট নির্মাণ হয় জমির উপরিভাগের মাটি দিয়ে, যে মাটি ফসলের জন্য উর্বর। এছাড়া ইট নির্মাণে পোড়ানো হয় কাঠ। ফলে একদিকে অক্সিজেন উৎপাদক গাছ কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে ইটের ভাঁটা থেকে বিষাক্ত কার্বন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে। এতে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। তাই পরিবেশ ও জলবায়ুর কথা বিবেচনা করে সব ইটভাটা বন্ধের দাবি উঠেছে পরিবেশবাদীদের পক্ষ থেকে। বিষয়টিকে সামনে রেখে ইটের বিকল্প ও সাশ্রয়ী নির্মাণ উপকরণ নিয়ে শহরতলী পালবাড়ির গাজীর ঘাট রোডে (কবরস্থানের পাশে) এইএন নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব কারখানায় তৈরি করছে কংক্রিটের ব্লক। কংক্রিটের ব্লক তৈরি এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সিঙ্গাপুর প্রবাসী মামুন-অর-রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ইটের ভাটা থেকে বিষাক্ত কার্বন গ্যাসে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি ও জলবায়ুর কথা বিবেচনা করে ইটের বিকল্প হিসেবে তৈরির বিষয়টি মাথায় আসে। সেই লক্ষ্যে ভারত থেকে ব্লক তৈরির মেশিন নিয়ে আসি। ব্লক তৈরি করার পর পরীক্ষামূলকভাবে নিজের বাড়ির তিনতলা ও একতলাবিশিষ্ট একটি বাড়ি তৈরি করেছি। এতে দামেও অনেক সাশ্রয়ী হয়েছে। তিনি বলেন, একটি বাড়ি তৈরি করতে যদি ১৫ হাজার ইট লাগে, সেখানে কংক্রিটের ব্লক লাগবে মাত্র তিন হাজার। অর্থাৎ ব্লক দিয়ে বাড়ি নির্মাণে ৩০ শতাংশের বেশি টাকা সাশ্রয় হয়। একটি বাড়ি নির্মাণে যদি এক লাখ টাকার ইট লাগে, সেটা ব্লক দিয়ে ৭০ হাজার টাকায় করা যাবে। এছাড়া এই ব্লকের মাঝখানে ফাঁকা থাকে বলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এসি ঘরের মতো। -সাজেদ রহমান, যশোর থেকে