ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিরাপদ পানির নামে রমরমা ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৮:৫২, ২৩ মার্চ ২০১৯

 নিরাপদ পানির নামে রমরমা ব্যবসা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ টিউবওয়েলের নিরাপদ পানির অভাবে যশোরে বাড়ছে বিভিন্ন নামসর্বস্ব কোম্পানির বাজারজাতকরণ পানির ব্যবহার। তবে নামে-বেনামের অনুমোদনহীন এসব কোম্পানি পরীক্ষা ছাড়াই সরবরাহ করছে ‘নিরাপদ’ পানি। তাই জীবন বাঁচানোর নামে মানুষ কী খাচ্ছেন-তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এদিকে, যশোরের কোন সরকারী অফিসের নজরদারিতে নেই এসব প্রতিষ্ঠান। তাই বাধাহীনভাবে অবৈধভাবে চলছে এসব প্রতিষ্ঠানের তৎপরতা। তবে যশোরের বিভিন্ন সরকারী অফিসে জেলার পানি ব্যবসায়ীদের প্রকৃত সংখ্যা বা বাজারজাত করা পানির মান নিয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। জানা যায়, যশোর শহরের ঢাকা রোড, ঘোপ, পালবাড়ি, বকচর, আশ্রম রোড, বিসিকসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ পানি ‘প্রক্রিয়াজাতকরণ’ কারখানা। সেখান থেকে জারে করে আভা, ইউনিয়ন, কপোতাক্ষ, তৃপ্তি, মনসহ বিভিন্ন নামে শহরের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। নিরাপদের নামে এসব পানি পান করার কারণে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, জারে পানি বাজারজাতকরণের জন্য লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। আর পানি পরিশোধনের লাইসেন্স প্রদানের আগে বিএসটিআই থেকে কিছু শর্ত যুক্ত করে দেয়া হয়। শর্তগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ থাকে, উৎপাদিত বা প্রক্রিয়াজাত পণ্যের গায়ে বা মোড়কে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ওজন, সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, ব্যবহারের সময়সীমা এবং বিএসটিআই গুণগতমান চিহ্ন সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। তাছাড়া অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে বছরের যে কোন সময় পরিদর্শনে যাওয়া হবে বলেও উল্লেখ থাকে। কিন্তু বছরে একাধিকবার তো দূরের কথা, যশোরের এসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোন তথ্যই নেই সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়তে গেলে প্রথমে দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইনে নিবন্ধন করতে হয়। আর কারখানার জন্য নিতে হয় পরিবেশের ছাড়পত্র। তবে যশোরে পানি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলো এসব আইনের কোন ধারধারেনি। যশোর জেলা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, পানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কোন প্রতিষ্ঠান তাদের দফতর থেকে নিবন্ধন নেয়নি। আর জেলা পরিবেশ অধিদফতর তাদের কাছেও পানি ব্যবসায়ীদের কোন পরিসংখ্যান নেই। যশোর জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শেখ মোহাম্মদ নাজমুল হুদা বলেন, পানি প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কোন পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতর যশোরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) শওকত হোসেন বলেন, কারখানা বা দোকান দিয়ে কোন ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই আমাদের কাছে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু যশোরে পানি প্রক্রিয়াজাতকরণ বা বাজারজাতকরণ কোন প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন আমাদের দফতর থেকে নেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, এমন ব্যবসা করতে গেলে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন থাকা বাধ্যতামূলক। তবে নিবন্ধন না থাকলেও আমাদের কাছে কোনো গ্রাহক অভিযোগ না দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না।
×