ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ শিকারি জেলেদের জামাই আদর

প্রকাশিত: ০৮:৫২, ২৩ মার্চ ২০১৯

 দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ  শিকারি জেলেদের  জামাই আদর

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলের নদীতে ইলিশ মাছ ধরা জেলেদের জামাই আদরের মতো কদর বেড়েছে। এ কদর অব্যাহত থাকবে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত। কারণ টাটকা ইলিশ পেতে হলে জেলেদের কাছেই যেতে হবে। পহেলা বৈশাখের দিনে পান্তা ভাতের সঙ্গে পাতে ইলিশ তোলার যে প্রচল ছড়িয়ে পড়েছে, সে কারণেই এই তৎপরতা। যদিও পহেলা বৈশাখে ইলিশ পরিহারে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ রয়েছে। এরপরেও ইলিশের প্রতি আগ্রহ কমছে না ক্রেতা-বিক্রেতাদের। এই সুযোগটিকে লুফে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ মাছ ধরা জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই ইলিশ পরিহার করছেন। তবে বৈশাখকে সামনে রেখে বাজারে ইলিশের খোঁজ করার ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। চাহিদা বাড়ার এই সুযোগ বুঝে দামও বাড়বে ইলিশের। ব্যবসায়ীরা এ সুযোগটি নিতে এখন থেকেই ইলিশের মজুদ গড়ছেন। পাইকারি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে আড়তদার পর্যন্ত সবাই এখন ইলিশ মজুদে ব্যস্ত। যে কারণে বাজারে ইলিশের কিছুটা আকাল রয়েছে। মজুদ করা ইলিশ মাছ পহেলা বৈশাখ ঘনিয়ে আসার সপ্তাহখানেক আগে বাজারে ছাড়া হবে। দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ অধ্যুষিত ভোলা জেলার তেঁতুলিয়া, পিরোজপুরের সন্ধ্যা ও বলেশ্বর, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পায়রা নদীতে ইলিশ মাছ ধরা বেশ কয়েকজন জেলে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আড়তদাররা নদীতে গিয়ে সরাসরি জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনছেন। একইভাবে সরাসরি নদীর ইলিশ বিক্রির উদ্দেশে রাজধানীর বড় বড় সুপার শপের কর্নধাররাও নদীতে জেলেদের কাছ থেকে টাটকা ইলিশ ক্রয় করছেন। কেউ কেউ আবার বায়না করেও রেখেছেন। জেলেরা জানিয়েছেন, নদীতে এখন তাদের জামাই আদরের মতো বড়ই কদর। নগরীর পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামের আড়তদাররা জানান, সামনে পহেলা বৈশাখ। তাই বাজারে এখন সবধরনের ইলিশের কদর বেশি। এটাই স্বাভাবিক। পহেলা বৈশাখ যতই ঘনিয়ে আসবে ততই ইলিশের দামও বাড়বে। তবে বড় সাইজের ইলিশ মাছের চাহিদা সব সময়ই বেশি। নদীতে ইলিশ মাছ ধরা জেলেরা জানান, রাজধানীর ব্যবসায়ীরা নদীতে এসে আমাদের নৌকা থেকে সরাসরি মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কাছে আমরা সরাসরি বিক্রি করতে না চাইলেও তারা অনেকটা জোর করে বেশি দামের প্রলোভনে আমাদের বিক্রি করতে বাধ্য করছেন। তারা আরও জানান, আমরা চাইলেও স্থানীয় আড়তদার ছাড়া অন্য কারও কাছে মাছ বিক্রি করতে পারি না। কেননা, স্থানীয় আড়তদারদের কাছ থেকে আমরা দাদন নিয়েছি। দাদনের টাকা পরিশোধ করতেই আমাদের জালে ধরা মাছ তাদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য। তারপরেও রাজধানীর ক্রেতাদের কাছে লুকিয়ে পালিয়ে বিক্রি করছে কেউ কেউ।
×