ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে টিনের বেড়া দিয়ে যমুনেশ্বরী নদী দখল

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ২৩ মার্চ ২০১৯

 নীলফামারীতে টিনের বেড়া দিয়ে যমুনেশ্বরী  নদী দখল

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ অবৈধভাবে নদী দখলে এবার নীলফামারীতে টিনের বেড়ার সীমানা দেয়া হচ্ছে। জেলা সদরের পলাশবাড়ী ইউনিয়নে সড়ক বিভাগের নির্মিত হরতকীতলা সেতুর উজান এবং ভাটিতে যমুনেশ্বরী নদী দখলের এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ একটি কোম্পানি ক্রয় সূূত্রের মালিকানা দাবি করে নদী দখল করছে। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকার তরণীবাড়ী গ্রামের বৃদ্ধ শ্যামচরণ রায় (৯৫) বলেন, যমুনেশ্বরী নদীটাকে আমি ছোটকাল থেকে দেখে আসছি। ¯্রােতের টানে নৌকা চলত, মাছ ধরা হতো। নদীপথে দূর-দূরান্তে নৌকা চালিয়ে চলাচল করা হতো। এখন সেই নদী দখল হওয়ার দৃশ্য দেখছি। তিনি বলেন, নদীর জমি মানে সরকারী জমি। অথচ সেই নদীর জমি অনেকে বিক্রি করছে। আবার কেউ ফসল ফলাচ্ছে। ছয় মাস ধরে নদীর জমি কেনা শুরু করেছে একটি কোম্পানি। ওই এলাকার কামারপাড়া গ্রামের অপর বৃদ্ধ সিরাজুল ইসলাম (৮০) বলেন, নদীটি যে যেভাবে পারছে দখল করছে। পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, অনেক কম দামে এসব জমি কিনেছে কিছু কোম্পানি। নদীটি বর্তমানে পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। তাই নদীটি খনন করা গেলে এ অঞ্চলের মানুষ চাষাবাদে সুবিধা পেত। পাশাপাশি বন্যার হাত থেকেও রক্ষা পেত মানুষ। স্থানীয় সূত্র মতে, যমুনেশ্বরীর সঙ্গে মিলিত আরো পাঁচটি নদীর অববাহিকা হলো এ জেলার দেওনাই-চাড়ালকাটা। যমুনেশ্বরীর অববাহিকার আয়তন ৭০০ বর্গকিলোমিটার। এর সঙ্গে মিলিত হয়েছে ধাইজান, বুড়িখোড়া ও বুল্লাই নদী। প্রবীণ ব্যক্তিরা জানায়, যমুশ্বেরী এই নদীটির উৎপত্তি ভারতের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ গ্রামের বিলাঞ্চল থেকে। সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ করেছে জেলার ডোমার উপজেলার গোমনাতি ইউনিয়ন দিয়ে। ডোমার উপজেলা থেকে নীলফামারী সদর, জলঢাকা ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলা হয়ে রংপুরের তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, মিঠাপুকুর অতিক্রম করে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার মিলানপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে মিলেছে যমুনেশ্বরী মিলিছে করতোয়া নদীতে। ১১৬ কিলোমিটারের ওই নদীর গড় প্রশস্ত ৫০ মিটার। নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৮টি নদ-নদী আছে। দখলে থাকা নদীগুলো দখলমুক্ত করতে শীঘ্রই অভিযান শুরু করা হবে। এ জন্য জেলার নদ-নদীগুলোর তালিকা গত মাসে নদী রক্ষা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনুর আলম বলেন, নীলফামারী জেলার সকল নদী উদ্ধারে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দখলমুক্ত করতে সিএস রেকর্ডমূলে জেলার সব নদী চিহ্নিত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
×