ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ের টানা তিন সেঞ্চুরি

প্রকাশিত: ০৯:১২, ২৩ মার্চ ২০১৯

বিজয়ের টানা তিন সেঞ্চুরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরোয়া ক্রিকেট লীগে সবসময়ই এনামুল হক বিজয় দুর্দান্ত নৈপুণ্য উপহার দেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এবার যেন সব নৈপুণ্যকেই পেছনে ফেলছেন বিজয়। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে টানা তিন সেঞ্চুরি করে বসেছেন প্রাইম ব্যাংকের এ ওপেনার। তার সেঞ্চুরিতে টানা চার জয় পাওয়া আবাহনী লিমিটেডের জয়রথও থামিয়ে দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। শুক্রবার আবাহনীকে ১৬ রানে হারিয়ে দিয়েছে। ইমতিয়াজ হোসেনের দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্যে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন ম্যাচে শেষ বলে গিয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ২ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। মেহেদী মারুফ (১৩৭*) ও জাকের আলী (১০৭*) কি অসাধারণ ব্যাটিং করলেন। তাতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে সহজেই ৮ উইকেটে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। প্রাইম ব্যাংক-আবাহনী ম্যাচ, ফতুল্লা ॥ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়াও সম্ভব। একদিন আগেই আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। টানা চার ম্যাচ যে জিতেছিল আবাহনী। বৃহস্পতিবার এমন কথা বলার পর শুক্রবারই হারের সম্মুখীন হলো আবাহনী। প্রাইম ব্যাংকের এমন একজন ব্যাটসম্যান আছেন যার সামনে সব দলের বোলাররাই যেন নিরীহ হয়ে পড়ছেন। তিনি ব্যাট হাতে মাঠে নামা মানেই যেন সেঞ্চুরি অবধারিত হয়ে গেছে। এটি প্রাইম ব্যাংক ও বিজয়ের এবারের ঢাকা লীগে পঞ্চম ম্যাচ। গত চার ম্যাচের দুটিতেই সেঞ্চুরি করেছিলেন বিজয়। টানা দুই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে অপরাজিত ১০০ ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ১০১ রানের ইনিংস উপহার দেন। দুটি ম্যাচেই জিতে প্রাইম ব্যাংক। বাকি দুই ম্যাচের মধ্যে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির বিপক্ষেও জয় আসে। সেই ম্যাচেও ৩৭ রান করেন বিজয়। এবার চ্যাম্পিয়ন দল আবাহনীর বিপক্ষেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দেন। ১২৮ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রান করেন। মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল ইসলাম অপু, সানজামুল ইসলামদের মতো বোলাররাও বিজয়ের সেঞ্চুরি করা রুখতে পারেননি। তাতে করে প্রাইম ব্যাংকও আগে ব্যাটিং করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ৩০২ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে। বিজয়ের সঙ্গে গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ভারতের দেরাদুনের অভিমন্যু ঈশ্বরনও ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন। বিজয় ও ঈশ্বরন মিলে দ্বিতীয় উইকেটে আবার ১৫৪ রানের জুটিও গড়েন। এই জুটি বড় সংগ্রহের দিকে প্রাইম ব্যাংককে নিয়ে যায়। শেষে গিয়ে আরিফুল হক (২৭ বলে অপরাজিত ৫১ রান) ব্যাটিং ঝড় তুললে রান ৩০০’র উপরে চলে যায়। তখনই আসলে আবাহনীর হার দেখা শুরু হয়ে যায়। রান যে অনেক হয়ে যায়। জবাব দিতে গিয়ে আবাহনীও অনেকটা দূর এগিয়ে যায়। মুম্বাইয়ের ওয়াসিম জাফর (৯৪) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (৭৩) মিলে ম্যাচটাকে নিজেদের দিকেই নিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে দুইজন মিলে ১৩২ রানের জুটি গড়তেই, দলের ১৯৫ রান হতেই যখন জাফর আউট হয়ে যান তখন আবাহনীর জয়ের আশাও যেন শেষ হয়ে যায়। শেষে গিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৫২ রানের ইনিংস উপহার দেন। কিন্তু ৪৮.৫ ওভারে ২৮৬ রান করতেই গুটিয়ে যায় আবাহনী। এবার লীগে প্রথমবারের মতো হারের স্বাদ পায় আবাহনী। স্কোর ॥ প্রাইম ব্যাংক ইনিংস- ৩০২/৫; ৫০ ওভার (বিজয় ১০২, ঈশ্বরন ৮৫, আরিফুল ৫১*; মোসাদ্দেক ১/৯)। আবাহনী ইনিংস- ২৮৬/১০; ৪৮.৫ ওভার (জাফর ৯৪, শান্ত ৭৩, মোসাদ্দেক ৫২; আল-আমিন ৩/৪৫, নাহিদুল ৩/৫৬, রাজ্জাক ৩/৫৭)। ফল ॥ প্রাইম ব্যাংক ১৬ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ এনামুল হক বিজয় (প্রাইম ব্যাংক)। শেখ জামাল-মোহামেডান ম্যাচ, বিকেএসপি ॥ মোহামেডান খুব বেশি রান করতে পারেনি। ৪৯.১ ওভারে ২৪০ রান করতেই অলআউট হয়ে যায়। আব্দুল মজিদ ৫২ ও শ্রীলঙ্কার চতুরঙ্গ ডি সিলভা ৪৯ ও মোহাম্মদ আশরাফুল ৪৪ রান করতে পারেন। মোহামেডান যে রান করে তাতে শেখ জামালের সহজেই জিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু জয় পেতে দলটিকে শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। শেষ ওভারে গিয়ে জিততে ১২ রানের দরকার থাকে শেখ জামালের। ৫ বলে ৭ রান হয়। শেষ বলে জিততে লাগে ৫ রান। এনামুল হক ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতান। তবে সেই জয়টির ভিত গড়ে দেন ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি ৭৪ রান করেন। তার সঙ্গে তানভির হায়দারের ৩৯ ও নুরুল হাসান সোহানের ৩২ এবং এনামুলের অপরাজিত ২৮ রানে এই জয় আসে। ৮ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৪২ রান করে জিতে শেখ জামাল। স্কোর ॥ মোহামেডান ইনিংস- ২৪০/১০; ৪৯.১ ওভার (মজিদ ৫২, সিলভা ৪৯, আশরাফুল ৪৪; সাকিল ৩/৪১)। শেখ জামাল ইনিংস- ২৪২/৮; ৫০ ওভার (ইমতিয়াজ ৭৪, তানভির ৩৯, সোহান ৩২, এনামুল ২৮*; সোহাগ ৩/৪৩)। ফল ॥ শেখ জামাল ২ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ইমতিয়াজ হোসেন (শেখ জামাল)। রূপগঞ্জ-গাজী গ্রুপ ম্যাচ, মিরপুর ॥ আগে ব্যাটিং করে গাজী গ্রুপ ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৫০ রান করে। ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পারভেজ রাসুল ৮৬ রান করেন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট আনপ্রেডিক্টেবল। তাই গাজী গ্রুপ জিতেও যেতে পারে এমন ধারণাও হয়। কিন্তু মেহেদী মারুফ ও জাকের আলী মিলে তৃতীয় উইকেটে যে ২২৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লেন তাতেই গাজী গ্রুপের জেতার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। এই দুইজনকে কোনভাবেই থামানো যায়নি। আর তাই ২ উইকেট হারিয়ে ৪৫.৩ ওভারে ২৫৩ রান করে জিতে যায় রূপগঞ্জ। স্কোর ॥ গাজী গ্রুপ ইনিংস- ২৫০/৯; ৫০ ওভার (রাসুল ৮৬, ইমরুল ৪৮, মাইশুকুর ৩১; মুক্তার ২/৫৪)। রূপগঞ্জ ইনিংস- ২৫৩/২; ৪৫.৩ ওভার (মারুফ ১৩৭*, জাকের ১০৭*)। ফল ॥ লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মেহেদী মারুফ (রূপগঞ্জ)।
×