ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বদলে যাচ্ছে চিত্র;###;বাড়ছে মানুষের আয়;###;অনেকেই ঢাকা থেকে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন

স্বপ্নের সেতু স্বপ্নের শহর ॥ পদ্মার বক্ষে শুধু নয় দুপারজুড়েও কর্মযজ্ঞ

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২৪ মার্চ ২০১৯

স্বপ্নের সেতু স্বপ্নের শহর ॥ পদ্মার বক্ষে শুধু নয় দুপারজুড়েও কর্মযজ্ঞ

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মাওয়া থেকে ফিরে ॥ চৈত্রের খা খা রোদ। পদ্মায় টলটলে নতুন পানির ঢেউ। এরই মাঝে ছন্দে ছন্দে বসছে পাইল। কাজ করে চলেছেন সাত হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। পদ্মার বুকে এখন ২১২ পাইল বসে গেছে। সেতু নির্মাণে দরকার হবে আরও ৫০ পাইল। শুধু এই পাইলই নয় ভারি ভারি নানা যন্ত্র অবকাঠামো নির্মাণের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে দেশী-বিদেশী কর্মীদের ব্যস্ততা। আর নদীর ধারে মানুষের কোলাহল, চরে কৃষকের চাষবাস, রাখাল গরু নিয়ে ছুটছে এমন দৃশ্য এখানে নিত্যদিনের। রাতের বেলাও থামছে না এ কর্মযজ্ঞ। দুপারের সংযোগ সড়কসহ প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু এলাকার সবখানেই কাজের ছোঁয়া। এর বাইরে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড, নদী শাসন আরও কয়েক কিলোমিটার এলাকায় চলছে কাজ। পদ্মা সেতুর কাজ এখন বিশেষ এক পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে একটি একটি করে ৯টি স্প্যান বসে সেতুর ১৩৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে পদ্মা সেতুর রোডওয়ে স্লাব স্থাপন শুরু হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত ২টি রোডওয়ে স্লাব স্থাপন। এর আগে মঙ্গলবার সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর খুঁটি থেকে এই স্লাব স্থাপন প্রথম শুরু হয়। প্রায় ২২ মিটার দীর্ঘ এবং দুই মিটার প্রস্ত একএকটি স্লাব সফলভাবে স্থাপন করা হয়েছে। এই স্লাব দিয়েই গাড়ি চলবে। তবে এই স্লাবের ওপরে পিচঢালাই একটি স্তর থাকবে। এ পর্যন্ত ৫১৫ রোডওয়ে স্লাব তেরি করা হয়েছে। আরও ২৯৩১টি রোডওয়ে স্লাব তৈরি করা হবে। সেতুটির ওপর তলায় বসানো হচ্ছে রোডওয়ে স্লাব। আর নিচের তলায় এর আগেই বসানো শুরু হয়েছে রেলওয়ে স্লাব। ইতোমধ্যেই ২৩২টি রেলওয়ে স্লাব বসানো হয়ে গেছে এবং ১৬১০টি রেলওয়ে স্লাব তৈরি আছে। রেলওয়ে স্লাব স্থাপন হবে ৩ হাজার ২১টি। ৪২টি খুঁটির মধ্যে ২১টি খুঁিট উঠে গেছে। মাস দুয়ের মধ্যে আরও ১০টি খুঁটি উঠে যাবে। বাকি খুঁটি উঠতেও আর বেশি সময় লাগবে না উল্লেখ করে পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে এভাবে চলতে থাকলে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মধ্যেই পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচর শুরু হবে। পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম শনিবার বিকেলে জনকণ্ঠকে জানান, এখর আর প্রকল্পে কোন চ্যালেঞ্জ নাই। এখন যত তাড়াতিাড়ি প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করা যায় সে তৎপরতা চলছে এখন। দিন দিন দৃশ্যমান হচ্ছে পদ্মা সেতু। ক্রমেই স্বপ্ন থেকে দৃশমানের মধ্য মূল সেতু নির্মাণে একের পর ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। স্বপ্ন বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখতে পেয়ে সবার চোখে মুখে এখন আনন্দের ঝিলিক। পদ্মার দুই পাড়ের বাসিন্দাদের খুশির শেষ নেই। একই সঙ্গে পদ্মার দুই পাড়ের বাসিন্দাদের আনন্দ বাড়ল। সেতু নির্মাণের মহাকর্মযজ্ঞ নিয়ে তাদের উৎসাহের কমতি নেই। একদিকে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে, অপরদিকে সেতু ঘিরে পদ্মার দুই পাড়ে গড়ে উঠছে নগরায়ন। নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন আর অট্টালিকা। এক কথায় পদ্মা সেতু নির্মাণে দুই পাড়ের চিত্রপট পাল্টে যাচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের চেহারা। এদিকে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলায় দুই পাড়ের বাসিন্দারা নতুন নগরায়ন গড়ে তুলছেন। তাদের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হচ্ছে। সেতু ঘিরে পদ্মার দুই পাড়ের বাসিন্দারা নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। নগরায়নের বাতায়নে পদ্মা দুই পাড়ে গড়ে উঠছে নতুন নতুন হাট-বাজার। নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে দুই পাড়েই। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়ার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, পদ্মা সেতু তাদের জীবনে নতুন স্বপ্ন জাগ্রত করেছে। নতুন করে জীবন যাপনের স্বপ্ন দেখছেন তারা। পদ্মা সেতু নির্মাণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘর-বাড়ি গড়ে উঠছে। মানুষের বসতি বেড়ে চলেছে প্রতিদিনই। উপজেলার কুমারভোগ এলাকার শমসের আলী জানান, পদ্মা সেতুর কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রে গড়ে উঠেছে স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ ও হাট-বাজার। এখানে পুনর্বাসন কেন্দ্র ছাড়াও নতুন নতুন বসিত গড়ে উঠছে। এ যেন এক নতুন রাজ্য। নতুন নতুন মুখ, নতুন করে ভালবাসা তৈরি হচ্ছে নতুন বসতির মানুষের মধ্যে। জেসমিন আরা নামে এক গৃহিণী বলেন, পদ্মা সেতু লৌহজং উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে দিয়েছে। পদ্মা পাড় থেকে শুরু করে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠছে নতুন নতুন দালান-কোঠা। নতুন নতুন হাট-বাজার ও বিদ্যালয় গড়ে উঠছে। পদ্মা সেতু নির্মাণে এভাবেই উপজেলার পুরো চেহারা পাল্টে যাচ্ছে। উন্নত জীবনযাপনের এক মহাদ্বার উন্মোচন হয়েছে। পদ্মা সেতু ঘিরে নতুন স্বপ্ন সবার চোখে-মুখে জাগ্রত। চাকরিজীবী কলিমউল্লাহ বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ যতই এগিয়ে যাচ্ছে, পদ্মার দুই পাড়ে ততই আনন্দ উল্লাস বাড়ছে। সেতু ঘিরে পদ্মার দুই পাড়ে জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে দুই পাড়ের চিত্র। পদ্মা সেতু দুই পাড়ের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রায় এক অন্যরূপ এনে দিচ্ছে। নতুন নতুন হাট-বাজার আর বসতি গড়ে উঠছে। এ যেন নতুন নগরায়ন সৃষ্টি হচ্ছে পদ্মার দুই পাড়ে। পাল্টে যাচ্ছে পদ্মার দুই পাড়ের দৃশ্যপট। দুপাড়ে সিঙ্গাপুরের আদলে নগরী ॥ পদ্মা সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এবং মাদারীপুরের শিবচর ও শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। এসব জায়গার দাম বাজার মূল্য অপেক্ষা উচ্চমূল্য পাওয়ায় অনেকেই পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্লট পান, সেখানে পাকা ভবন তুলে বসবাস করছেন। কেউ কেউ আবার আশপাশের শহরগুলোতে পরিবার নিয়ে বসতি গেড়েছেন। পদ্মা সেতু ঘিরে সেতুর দুইপ্রান্তে নানা অবকাঠামো গড়ে উঠবে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন সভা সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে সেতুর দুপ্রান্তে সিঙ্গাপুরের আদলে গড়ে উঠবে নগরী-এমন আশ্বাসে মানুষ পদ্মা সেতুর দ্রুত নির্মাণ চলাকালে আরও বেশি আশাবাদী হয়ে উঠছেন। নদী তীরে পার্ক, শপিং মল, বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্র, উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্র, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার পাশাপাশি আবাসিক এলাকাও গড়ে উঠবে। সেতুর উত্তর প্রান্তে লৌহজংয়ে মাওয়া ও এর আশপাশের মানুষের পাশাপাশি সেতুর অদূরের চরাঞ্চলের মানুষজনও আশায় বুক বাঁধছেন। গত নব্বই দশকে টানা দশ বছরের ভাঙনে উপজেলার দুটি ইউনিয়ন প্রায় বিলীন হয়ে যায়। জমি, ভিটেমাটি হারিয়ে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। পরে ভাঙন বন্ধ হলে নদীতে জেগে ওঠা ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ চরে ঘরবাড়ি তুলে বসতি শুরু করে মানুষজন। আর জেগে ওঠা চর ও উপজেলার সাবেক এলাকার মধ্যিখানে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয় পদ্মার শাখা নদী। চরবাসী এতদিন ফসল ও শাকসবজির আবাদ করে ভালই ছিল। গত বছর সেই চরাঞ্চলের অনেকটা পদ্মার ভাঙনের শিকার হয় এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পটিও চলে যায় পদ্মাগর্ভে। ফলে ফের আতঙ্কিত হয়ে পড়ে চরবাসী। এ প্রসঙ্গে কথা ঝাউটিয়া চরের বাসিন্দা মরণ ঢালীর সঙ্গে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হলে নদীশাসনের আওতায় আসবে নদীর দুইপাড়। সেতু থেকে এক দেড় কিলোমিটার দূরত্বের চরকে রক্ষায় বাঁধ দিলে একদিকে চরের বাসিন্দারা যেমন রক্ষা পেত, তেমনি এখানে গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে এই পদ্মার চরে অলিম্পিক ভিলেজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় সরকার। কিন্তু গেল বছরের ভাঙনে প্রস্তাবিত অলিম্পিক ভিলেজ এলাকা পদ্মায় বিলীন হয়। স্বপ্নের জাল বুনছে দুপাড়ের মানুষ ॥ শুক্রবার পদ্মা সেতুর নবম স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) বসানোর মধ্য দিয়ে নির্মাণ আরও এক ধাপ এগুলো। দেশের এ যাবৎকালের বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতু। যা ছিল স্বপ্ন ও কল্পনাতীত, তাই এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে দ্রুতালয়ে। বিশ্ব ব্যাংকের কথিত দুর্নীতি, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র, তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও নিন্দুকদের সমালোচনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সাহস দেখাচ্ছেন। মানব উন্নয়ন সূচকে আজ বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তালিকায় সবার ওপরে। আর এই পদ্মা সেতু নির্মিত হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ২১টি জেলার যোগাযোগ শুধু সহজতর নয়, বদলে যাবে পুরো দেশের আর্থ-সামাজিক চিত্র। এখানকার মানুষ পদ্মা সেতুকে ঘিরে স্বপ্নের জাল বুনে চলেছেন প্রতিদিন একটু একটু করে। সেতুর দু’প্রান্ত উপশহরে রূপ নিচ্ছে ক্রমশ। ইতোমধ্যেই এর কয়েকটি সুবিধা পেতে শুরু করেছেন লৌহজংয়ের বাসিন্দারা। পদ্মা সেতু নির্মাণ চলাকালেই নদীর দুই কিলোমিটার তীরবর্তী এলাকা শাসনের আওতায় এসেছে। ফলে এ এলাকা পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে। এছাড়া পদ্মা সেতুর জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দু’পাড়ে দুটি করে ৪টি পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা একদিকে যেমন তাদের জায়গার দাম বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি পেয়েছেন, অন্যদিকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্লট পেয়ে সুরক্ষা পাচ্ছেন। সীমানা প্রাচীর ঘেরা এই কেন্দ্রগুলোতে আছে সুরম্য মসজিদ, প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজার ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ৬ বছর আগের জমির মূল্য বেড়ে দ্বিগুণ/তিনগুণ হয়েছে। স্থানীয় মানুষের ধারণা সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে এখানে অনেক স্থাপনা গড়ে উঠবে। সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের। সেই সঙ্গে দৃষ্টিনন্দন পার্ক, শপিং মল, দর্শনীয় অবকাঠামো তৈরি হবে নিশ্চয়ই। পদ্মা সেতু নির্মাণে বর্তমানে বিশেষ করে মূল সেতু নির্মাণে স্থায়ী শ্রমিক কাজ করেন প্রায় ৪ হাজার। এছাড়া নদী শাসনে কাজ করেন আরও ১ হাজার শ্রমিক। এত বিশাল সংখ্যক শ্রমিকের মধ্যে ১২শ’ জন চীনা নাগরিক, বাকিরা আমাদের দেশের। এই শ্রমিকদের কল্যাণে সেতুর দুই পাড়ে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন ভবন ও বাড়িঘর। স্থানীয় হাটবাজার হয়ে উঠেছে রমরমা। দিনরাত এসব শ্রমিকের পদচারণায় জনপদ মুখর হয়ে উঠছে। স্থানীয় জমির মালিকেরা অপরিত্যক্ত ও পোড়ো বাড়িতে টিনকাঠের ঘর তুলে ভাড়াও পাচ্ছেন শহরের মতো। ১৫ বর্গফুট ঘরের ভাড়া প্রায় দুই হাজার টাকা। চাইনিজরা সেতুর দুইপাড়ে বিভিন্ন বিল্ডিং কিংবা ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকেন। সে সব বিল্ডিংয়ের মাসিক ভাড়া প্রায় ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঢাকায় বসবাসকারী লৌহজংয়ের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা তাদের গ্রামের পাকা বাড়ি ভাড়া দিয়ে ঢাকার চেয়েও মোটা অঙ্কের টাকা আয় করছেন। শ্রমিকদের কারণে স্থানীয় হাটবাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি বলে উল্লেখ করেছেন অনেক স্থানীয় বাসিন্দা। কেউ কেউ আবার বলছেন শ্রমিকদের কারণে নয়, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে স্থানীয়রা পদ্মা সেতুর জন্য অধিগ্রহণ করা জমির উচ্চমূল্য পাওয়ার কারণে। মাওয়া গ্রামের বাসিন্দা ও লৌহজং উপজেলা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি কুমারভোগ এলাকায় ১৯৯৭ সালে ৪০ শতাংশ জায়গা ৪০ হাজার টাকায় ও ২০০৩ সালে ৬১ শতাংশ জায়গা ৭৮ হাজার টাকায় খরিদ করি। এর মধ্যে ২০১০ সালের দিকে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ ৮ শতাংশ জায়গা অধিগ্রহণ করে, যার মূল্য ছিল ১৮ লাখ টাকা। এখন বাকি জায়গার বাজার মূল্য প্রায় ৬/৭ কোটি টাকা। এই পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়াতে জায়গার উচ্চমূল্য হয়েছে বলে আমি মনে করি। কুমারভোগ গ্রামের বাসিন্দা জাকির মাঝি তার পড়ে থাকা জায়গায় ছয় কক্ষের টিন ও কাঠের ঘর তুলে পদ্মা সেতু নির্মাণ শ্রমিকদের ভাড়া দিয়েছেন। এখান থেকে তিনি মাসে পান প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। উপজেলার হলদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোপাল চন্দ্র পালের ভাষ্য, পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে এলাকার যারা ঢাকায় বসবাস করেন তাদের সিংহভাগ মানুষ লৌহজংয়ে ফিরে আসবেন। ফলে ঢাকার ওপর চাপ কমবে বলে আমি বিশ্বাস করি। মেদিনীম-ল গ্রামের তরুণ ফৌজি হাসান খান রিকুর বক্তব্য, সেতু নির্মিত হলে লৌহজং দ্রুত শহরে রূপ নেবে। জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে তখন ব্যাংক, বিভিন্ন অফিস স্থাপিত হবে। ফলে এখানে অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে নিঃসন্দেহে। যশলদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মাসুদ খানের মতে, সেতু হলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে তৈরি হবে আন্তর্জাতিক মানের পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র, দেশী-বিদেশী পর্যটকের আনাগোনা থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। স্থানীয় বিশিষ্ট সংগঠক নাসিরউদ্দিন আহমেদ জুয়েল মনে করেন, রাজধানী ঢাকায় বড় বড় শিল্পকারখানা স্থাপন করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। সেক্ষেত্রে ঢাকার অনতিদূরে পদ্মা সেতুর উত্তরে লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলায় স্থাপিত হবে গার্মেন্ট শিল্প। দ্রুত এগিয়ে চলছে রেলওয়ে প্রকল্পের কাজ ॥ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ (মূল সেতুর) ইতোমধ্যে ৭৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী বছরেই এ সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে সেতু দিয়ে গাড়ি এবং ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। রেলওয়ের প্রকল্প কাজ করছেন সহ¯্রাধিক ব্যক্তি। সে লক্ষ্যে চলছে তোড়জোড়। তবে ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ হচ্ছে না। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে কমকরে আরও চার বছর। কমলাপুর থেকে গে-ারিয়া-মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে নেয়া হয়েছে প্রকল্প। ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু রেললিংক লাইন নামে চলছে এর কাজ। মূল সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের প্রায় তিন বছর পর গত বছরের ১৩ অক্টোবর রেললিংক প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ। সূত্রমতে ঢাকা থেকে ট্রেনে চেপে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর বা যশোর যাওয়ার স্বপ্ন ২০২০-এ পূরণ না হলেও সেতু উদ্বোধনের দিনই সেখানে ট্রেন চলাচলও উদ্বোধন করতে চান প্রধানমন্ত্রী। তাই নতুন পথ খুঁজে বের করেছে কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুর দুই পাশে মাত্র ৪২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করে সেতু উদ্বোধনের দিনই এখান দিয়ে ট্রেন চালাতে চান তারা। বাকি ১৩০ কিলোমিটার অংশের কাজ সীমিত রেখে শুধু ৪২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণেই তারা এখন ব্যস্ত। পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী শনিবার দুপুরে জনকণ্ঠকে বলেন, এ পর্যন্ত প্রজেক্টটির ফাইন্যানসিয়াল প্রোগ্রেস ২৩ শতাংশ। ফিজিক্যাল প্রোগ্রেস ১৬ শতাংশ। সেতুটি যেদিন থেকে চালু হবে ঐদিন যাতে রেলও চালু হয় সেই লক্ষ্যে দ্রুত কাজ চলছে। তিনি বলেন আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৪২ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপন করতে পারব। মূল সেতু নির্মাণকারীই সেতুতে রেলপথ নির্মাণের ৯০ শতাংশ কাজ করে দেবে। আমরা শুধু লাইন বসাব। এর আগেই আমরা সেতুর দুই প্রান্তে লাইন বসানো শেষ করব। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর রেল লিঙ্ক প্রকল্পের আওতায় ২ ধাপে প্রায় ১৭২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ১৮টি মৌজায় ১২৮ একর এবং পরে ৪টি মৌজায় প্রায় ৪৪ একর জমি অধিগ্রহণ করে রেল কর্তৃপক্ষকে দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। শ্রীনগর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানায় স্থানীয়ভাবে এ রেললাইনের জমি অধিগ্রহণ এবং বুঝিয়ে দেয়া নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হলেও পরবর্তীতে কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরুর অনেক পরে রেললিংক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। পরিকল্পনা ছিল, কমলাপুর থেকে গে-ারিয়া হয়ে প্রায় ২৩ কিলোমিটার উড়াল রেললাইন নির্মাণের মধ্য দিয়ে কাজ শুরু হবে। ঋণের অর্থ দেরিতে ছাড় ও দেরিতে কাজ শুরু হওয়ায় আমরা ভাঙ্গা থেকে সেতু হয়ে মাওয়া পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করছি।রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে রেল খাতে চীন সরকারের বিনিয়োগের বিষয়টি দুদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারকে অন্তর্ভুক্ত হয়। ওই বছরের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে পদ্মা সেতু চালুর দিন থেকে সেতু দিয়ে রেল যোগাযোগ চালুর নির্দেশনা দেন। গত বছরের ২৮ এপ্রিল চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা রেললিংক লাইন সেতু প্রকল্প’র অর্থায়নে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়। পূর্ণাঙ্গ ক্যান্টনমেন্ট হচ্ছে ॥ পদ্মাতীরে পূর্ণাঙ্গ সেনানিবাস হচ্ছে। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে হচ্ছে এই সেনানিবাস। এই সেনানিবাসের কর্মকা- এখন চলছে পুরোদমে। এছাড়া মাওয়া প্রান্তেও থাকছে সেনা ক্যা¤প। বর্তমানে দু’পাড় মিলে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেডে কর্মরত প্রায় ২ হাজার সেনা সদস্য। মাওয়া প্রান্তের দোগাছি ১ নম্বর সার্ভিস এরিয়ার ভেতরে এখন সেনাবাহিনীর ক্যা¤প। ওপারের কুতুবপুর ২ নম্বর সার্ভিস এরিয়ার ভেতরে আরেকটি ক্যাম্প। দুটি সেনা ক্যাম্পে প্রায় এক হাজার করে সেনা সদস্য রয়েছে। সেতুর নিরাপত্তাসহ নানা কারণেই এই কম্পোজিট ব্রিগেড করা হয়েছে। আর সেতুর জন্য হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্টনমেন্ট। এছাড়া এখন পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও দু’পাড়েই করা হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ থানা। পদ্মা সেতুর পুনর্বাসন কেন্দ্র ॥ পদ্মা সেতুর জন্য জমি দেয়া ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র হয়েছে দুই পাড়ে সাতটি। মাওয়া প্রান্তে চারটি এবং জাজিরার বাকরেরকান্দি, পূর্ব নাওডোবা ও পশ্চিম নাওডোবায় আরও তিনটি। মাওয়া প্রান্তের চারটির মধ্যে কুমারভোগে দুটি এবং মেদিনীম-লের জসলদিয়ায় দুটি। পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২৮শ’ পরিবার বসবাস করছে এখানে। পুনর্বাসন কেন্দ্রে রয়েছে পাঁচটি স্কুল এবং পাঁচটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র। রয়েছে ছয়টি নান্দনিক মসজিদ। রয়েছে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত ২৮শ’ পরিবারকে এখানে পুনর্বাসন করেছে। তাই মানুষের সমাগমও বেড়েছে। পদ্মাতীরের জনপদের এখন চেহারা পাল্টে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে নির্মাণ হয়েছে নান্দনিক ঘরবাড়ি। এখানে মানুষগুলো শান্তি-শৃঙ্খলায় বসবাস করছে। পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা জমি দিয়েছেন তারা জমির ন্যায্য মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা পেয়েছেন। আবার পেয়েছেন এমন চমৎকার বাড়ি। উন্নত হয়েছে তাদের জীবনমান। তাই বদলে যাচ্ছে সব কিছু। পুনর্বাসনের বাসিন্দাদের কথা ॥ পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আওতায় মাওয়া অংশের কুমারভোগ ও যসলদিয়ায় চারটি পুনর্বাসন কেন্দ্র। মৌলিক কোন পার্থক্য না থাকলেও সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়ে কিছু পার্থক্য আছে। কেন্দ্র দুটির প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেবার মান নিয়ে কারও কোন অভিযোগ নেই। কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রে বাজার স্থাপন করা হলেও সেখান কোন বাজার বসে না। অন্যদিকে যসলদিয়া কেন্দ্রে বাজার থাকলেও সেখানে মাছ ও শাকসবজি পাওয়া যায় না। কমিউনিটি সেন্টার নেই উভয় কেন্দ্রেই। যসলদিয়া কেন্দ্রে বাজার, স্কুল, মসজিদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এক সঙ্গে পাশাপাশি থাকলেও কুমারভোগ কেন্দ্রে সেসব রয়েছে একটি থেকে অন্যটি বেশ দূরে দূরে। কুমারভোগ কেন্দ্রের বাসিন্দারা যসলদিয়া কেন্দ্রের বাসিন্দাদের চেয়ে তুলনামূলক আর্থিক দিয়ে ভাল। যসলদিয়া কেন্দ্রের বাসিন্দাদের কর্মস্থলে যেতে অনেক বেগ পেতে হয় রাস্তাঘাটের দুরবস্থার কারণে। এতে তাদের একদিকে যেমন ভোগান্তি রয়েছে, অন্যদিকে যাতায়াত ভাড়ায় বেশ খরচ হচ্ছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এখানে ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায় অনায়াসেই। কেন্দ্রের ভেতরে খালি জায়গায় শিশুদের জন্য রাইড নির্মাণ করে বিনোদনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কেন্দ্র দুটি থেকে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। নেই আবর্জনা নিতে আসা লোকবল। ফলে পুনর্বাসনের বাসিন্দাদের যত্রতত্র ময়লা ফেলতে হয়। শ্রমিকদের জীবনযাপন ॥ স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে দেশী-বিদেশী ছয় সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। যোগ্যতার কারণে উচ্চ মজুরি, থাকা-খাওয়াসহ নানা সুবিধা পাচ্ছেন বিদেশী শ্রমিকরা। নামীদামী বাড়ি ভাড়া করে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকছেন। কিন্তু দক্ষতা না থাকায় শুধু মজুরি বিক্রি করে অনেক কষ্টে থাকছেন দেশী শ্রমিক। দেশী শ্রমিকদের বেতন, থাকা-খাওয়াসহ সবকিছুই নি¤œমানের। পদ্মা সেতুর দুপাড়ে দিনমজুররা প্রতিদিন যেখানে অন্তত ৫০০ টাকা কামাই করেন। পদ্মা সেতুতে নিয়োজিত একজন শ্রমিকের মাসিক মজুরি সাড়ে ৯ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা। সেই হিসেবে দিনপ্রতি মজুরি ৩১৬ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পড়ে। পদ্মা সেতুর জন্য দু’থানা ॥ পদ্মা সেতুর দু’প্রান্তে থানা ভবন কয়েক মাস আগে স¤পন্ন হয়ে গেছে। তবে জনবলের অভাবে থানা দুটি এখনও চালু হয়নি। মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম (বার) জানান, চলতি মাসের ২৮ তারিখে থানা ভবন দুটি পুলিশ বুঝে নিবে। এরপর নিজস্ব জনবল নিয়েই চালাবে থানা দুটি। তবে নতুন করে জনবল নেয়ার চেষ্টা চলছে। প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু কর্তৃপক্ষ ভবন দুটি নির্মাণ করেছে। ছয় তলা ফাউন্ডেশনের ওপর চার তলা করে নান্দনিক ডিজাইনে পদ্মার দুপ্রান্তে অর্থাৎ মাওয়া ও জাজিরায় থানা ভবন দুটি নির্মাণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর প্রাণী জাদুঘর ॥ প্রাণী জাদুঘর করা হয়েছে পদ্মা সেতুর দোগাছি সার্ভিস এরিয়ায়। দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে জাদুঘরটি। ৫ হাজার প্রাণী সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ জাদুঘরে। জাদুঘরে কাঁচের বোতলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। এর মধ্যে রয়েছে বিষধর গোখরাসহ বিভিন্ন ধরনের সাপ, কুনোব্যাঙ, টিয়া, হুতুমপেঁচা, কাক, বালিহাঁসসহ কয়েক প্রজাতির পাখি। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জাদুঘরের কাজ শুরু হয়। এটি ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার কথা রয়েছে।
×