ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মূলহোতা রুহুল আমিনের জামিন বাতিল

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২৪ মার্চ ২০১৯

মূলহোতা রুহুল আমিনের জামিন বাতিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের গৃহবধূ গণধর্ষণের মূলহোতা মোঃ রুহুল আমিনের এক বছরের জামিন আদেশ বাতিল করা হয়েছে। এর আগে দেয়া জামিন আদেশ প্রত্যাহার (রিকল) করেছে আদালত। শনিবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় ও ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোঃ আশেক-ই-রসুল উপস্থিত ছিলেন না। আদালত ৫ দিনের মাথায় জামিন আদেশ প্রত্যাহার করেছেন। উল্লেখ্য, আসামিপক্ষের আইনজীবী তথ্য গোপন ও ভিন্ন বেঞ্চে শুনানি করে আসামিকে জামিন করিয়ে নেন। আদেশের পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, রুহুল আমিনের জামিন নজিরবিহীন ঘটনা। যেখানে পুরো জাতি ধর্ষণ মামলার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ, সেখানে জামিন হওয়ায় সবাই হতবাক। এটা খুবই ঘৃণ্য তৎপরতা। ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি করায় আসামিপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হবে। আসামি রুহুল আমিনের জামিন নিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বিভ্রান্ত করেছে। জামিন আবেদনে এনএক্স-১৭ নম্বর কোর্টের কথা ছিল। কিন্তু ওই কোর্টে না গিয়ে এনএক্স ১৪ নম্বর কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে যায়। যেদিন জামিন হয় সেদিন আসলে রাষ্ট্রপক্ষ বুঝতেই পারেনি জামিন হয়েছে। পরে দেখা যায় রুহুল আমিন জামিন নিয়ে গেছে। গত ১৮ মার্চ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ আসামিকে রুল জারিসহ এক বছরের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন প্রদান করে। বিষয়টি সেদিন জানাজানি না হলেও ২১ মার্চ সাংবাদিকদের নজরে আসে। এর পর আইনজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রুহুল আমিনের জামিন নিয়ে তোলপাড়া শুরু হয়। শনিবার সকালে এই আদেশ রিকল করে অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের খাস কামরায় দুইপক্ষের আইনজীবীদের ডেকে নেন। এর পর আসামি রুহুল আমিনের জামিনের প্রত্যাহার করে আদেশ দেয়া হয়। এ ঘটনায় দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার হাইকোর্টের আদেশের ফলে রুহুল আমিনের জামিন বাতিল হলো। এছাড়া ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করায় আসামিপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হবে। একই সঙ্গে এ আসামি যাতে জামিন না পায় রাষ্ট্রপক্ষ তার সে ব্যবস্থা করবে। একই সঙ্গে কোন মামলায় জামিন নেয়ার জন্য এক কোর্টের কথা বলে অন্য কোর্টে শুনানি করা ঠিক নয়। এ ঘটনা আদালত অবমাননার শামিল। সংশ্লিষ্ট আদালতের কাছে সাবমিশন করব ওই আইনজীবী বিরুদ্ধে যেন আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়। এ্যাটর্নি জেনারেল আরও জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবী আমাদের অফিসকে (এ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়) জানিয়েছিলেন তার আবেদনটি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের বেঞ্চে শুনানি হবে। কিন্তু আবেদনটি বিচারপতি মামনুন রহমানের বেঞ্চে শুনানি করেন এবং এ মামলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানববন্দী ও ভিকটিমের জবানবন্দী সন্নিবেশিত না করে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে ওই আইনজীবী জামিন নেন। পরে আমাদের এ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট কোর্টের বিচারপতিদের যখন বিষয়টি অবহিত করা হয় তখন শনিবার সকালে তারা চেম্বারে (খাস কামরায়) বসে এ জামিন আদেশটি রিকল করে বাতিল করেন। ফলে ওই আসামিকে দেয়া পূর্বের জামিন আদেশটি বাতিল হয়ে গেল। এদিকে আদেশের পর সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় জানান, শানিবার ছুটির দিন হলেও হাইকোর্টের জামিন দেয়া সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় বিচারপতিদের খাস কামরায় বসেন। মামলায় আট জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী আছে।
×