স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লঙ্কানদের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শুরু হয়েছিল অবিশ্বাস্য এক জয়ে। কুসল পেরেরার (১৫৩*) অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে প্রথম টেস্টে পেয়েছিল ১ উইকেটের ‘নাটকীয়’ জয়। এরপর উপমহাদেশের প্রথম দল হিসেবে সেখানে সিরিজ জয়ের আনন্দে ভেসেছিল দিমুথ করুনারত্নের দল। কিন্তু লাসিথ মালিঙ্গার নেতৃত্বে ওয়ানডে সিরিজে ৫-০ ব্যবধানে ‘হোয়াইটওয়াশ’ শ্রীলঙ্কা টি২০ সিরিজ খোয়ালো টানা দুই হারে। প্রথম ম্যাচে আলোচিত সেই টাইয়ের পর ‘সুপার ওভারে’ হার মানা দলটির পরাজয় এবার ১৬ রানে। সেঞ্চুরিয়নে রিজা হেনড্রিকস (৬৫) ও ফন ডার ডুসনের (৬৪) জোড়া হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে ৩ উইকেটে ১৮০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে প্রোটিয়ারা। জবাবে ৯ উইকেটে ১৬৪ রানে থামে শ্রীলঙ্কা। বিফলে যায় ইসুরু উদানার (৪৮ বলে অপরাজিত ৮৪) ঝড়ো ইনিংস। জোহানেসবার্গে তৃতীয় ও শেষ টি২০ আজ।
সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই এইডেন মার্করামকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শুরুর সে ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে এগিয়ে নেন হেনড্রিকস ও ফন ডার ডুসেন। শুরুতে একটু সময় নেন দুই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। প্রথম চার ওভার থেকে আসে মাত্র ২০ রান। এরপর শট খেলতে শুরু করেন দুই জনই। দ্রুত এগোতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪৬ বলে ৯ চারে ৬৫ রান করা হেনড্রিকসকে স্লোয়ার বলে ফিরিয়ে ১১৬ রানের জুটি ভাঙ্গেন লঙ্কাপতি মালিঙ্গা। ৩ ছক্কা আর ৪টি চারে ৪৪ বলে ৬৪ রান করা ফন ডার ডুসনকে বোল্ড করে বিদায় করেন আকিলা দনঞ্জয়া। সেখান থেকে দলকে ১৮০ রানে নিয়ে যান জেপি ডুমিনি। ফ্যাফ ডুপ্লেসিসের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান দুটি করে ছক্কা-চারে অপরাজিত থাকেন ৩৩ রানে। রান তাড়ায় শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি শ্রীলঙ্কার। প্রথম ওভারে আভিশকা ফার্নান্দো ও কুসল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দেন ডেল স্টেইন। চতুর্থ ওভারে পরপর দুই বলে নিরোশান দিকওয়েলা ও কামিন্দু মেন্ডিসের উইকেট তুলে নেন ক্রিস মরিস।
শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে পথ দেখাতে পারেনি মিডলঅর্ডারও। ভাগ্যকে পাশে পাওয়া উদানা বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন। ইনিংসের শুরুতে ডুমিনিকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তিনি। ডুমিনির বলেই মার্করামের হাতে ধরা পড়েও বেঁচে যান ‘নো’ বলের কল্যাণে। ক’দিন আগে ওয়ানডে সিরিজে পেয়েছিলেন ওই সংস্করণে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। এবার টি২০তে পেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। এই সংস্করণে তার আগের সর্বোচ্চ ছিল অপরাজিত ১৯। আগের ১১ ইনিংস মিলিয়ে করেছিলেন ৫৩ রান। এক ইনিংসেই সেই রান ছাড়িয়ে গেলেন। কয়েকবার অল্পের জন্য উদানার ক্যাচ যায়নি ফিল্ডারের কাছে। কাজে লাগিয়েছেন বাজে বলগুলো। শেষ পর্যন্ত ৪৮ বলে ৬ ছক্কা ও ৮ চারে খেলেছেন অপরাজিত ৮৪ রানের দারুণ এক ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকায় কিভাবে ব্যাটিং করা উচিত টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের জন্য যেন উদাহরণ হয়ে থাকে তার এই ইনিংস। প্রোটিয়া অলরাউন্ডার ক্রিস মরিস ৩ উইকেট নেন ৩২ রানে। দুটি করে শিকার তাবরাইজ শামসি ও স্টেইনের।
জোহানেসবার্গে ‘হোয়াইটওয়াশ’ এড়ানোর লক্ষ্যে আজ মাঠে নামবে লঙ্কানরা। এই ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে তাদের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর।
