ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাংস্কৃতিক উৎসবে মুখর রাজশাহী

প্রকাশিত: ১২:০৪, ২৪ মার্চ ২০১৯

সাংস্কৃতিক উৎসবে মুখর রাজশাহী

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥জমকালো সাংস্কৃতিক উৎসবে মুখর এখন রাজশাহী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহীতে ১০ দিনের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব চলছে। এতে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে মেতেছে রাজশাহী। নিজস্ব সংস্কৃতির আবহে চলছে নৃত্য পরিবেশনা, লালন, বাউল থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরার নানা-নাতির হাঁক-ডাক। পরিবেশিত হয়েছে যাত্রাপালাসহ সব ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে যুক্ত হচ্ছেন দেশ বিদেশের শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পৃষ্ঠপোষকতায় গত ১৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবের তৃতীয় পর্ব উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব কবি শেখ হাফিজুর রহমান। উৎসবের জন্য নগর ভবনের গ্রীনপ্লাজায় মূল মঞ্চ করা হলেও নগরীর বিভিন্ন স্থানে চলছে এর আনুষ্ঠানিকতা। ফলে পুরো নগরীতেই লেগেছে সাংস্কৃতিক উৎসবের ছোঁয়া। এদিকে গ্রীনপ্লাজায় উৎসবের মূল মঞ্চে প্রতিদিন সকালের দিকে নানা প্রতিযোগিতা আর বিকেল ৫টা থেকে জমকালো ও বর্ণাঢ্যভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একই স্থানে চলছে বইমেলা। সেখানে রয়েছে ২৫টি স্টল। উৎসবের ষষ্ঠ দিন শুক্রবার মূল মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করে রাজশাহী বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী কর্মকর্তা পরিষদ। আবৃত্তি করে রাজশাহীর আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র সাংবাদিক ও কবি মিনার মনসুর এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি রুবী রহমান। তাদের সম্মাননা জানান সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। পরে অনুষ্ঠানে লোকসঙ্গীত পরিবশেন করে মাতাল বাউল দল। নাটক করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রুডা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন জানান, উৎসবের শেষ দিন আগামী ২৬ মার্চ সকাল ১০টায় মহান স্বাধীনতা দিবসে গণহত্যা এবং ২৫ মার্চ বিষয়ক প্রদর্শনী এবং বিকেল ৫টায় স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা। বিকেলে হিন্দোল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হলো সঙ্গীতানুষ্ঠান। একইদিন বিষয়ভিক্তিক আলোচনায় করেন গবেষক আবুল মোমেন। এছাড়া হাসান আরিফ ও মনিরা রহমান মিঠির আবৃত্তি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুশীলন নাট্যদলের পরিবেশনায় পথ নাটক। চট্টগ্রামের শিল্পীরা পরিবেশন করে গীতি আলেখ্য রক্তকরবী। শেষে পবিবেশিত হয় টাঙ্গাইলের মহাদেব সংযাত্রা দলের পরিবেশনায় যাত্রাপালা সংযাত্র। আজ সঙ্গীত পরিবেশন করবে ধ্রুব সখা। আলোচনা করবেন প্রখ্যাত সাংবাদিক কামাল লোহানী। রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শুভেন্দ্র মাইতির সঙ্গীত পরিবেশনা, মণিপুরী নৃত্য, আদিবাসী নৃত্য আর রংপুরের মোস্তাফিজুর রহমান ও তার দলের পরিবেশনা। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবের পৃষ্ঠপোষক এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীর সংস্কৃতি অঙ্গন অনেকটায় ঝিমিয়ে পড়ছিল। সেই ঝিমিয়ে পড়া সাংস্কৃতিক পরিম-লে গতিশীলতা ফিরিয়ে নিতে এ উৎসবের আয়োজন। এখানে প্রতিদিন সংস্কৃতির বলয় শুরু হয়েছে। মূলত, ৭ মার্চের পর থেকেই রাজশাহীতে সাংস্কৃতির উৎসবে যোগ হয়েছে নতুনমাত্রা। সারাদেশে এর বিস্তৃতি ঘটছে। মানুষ দল বেঁধে আসছেন সংস্কৃতির আলোয় উদ্ভাসিত হতে। উৎসবের নানা আয়োজনের মধ্যে রয়েছে শিশুবরণ, শিশু-কিশোর সমাবেশ, আন্তঃকলেজ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বইমেলা, গুণীজন সংবর্ধনা, কবিতা উৎসব, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক উৎসব।
×