সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ, ২৪ মার্চ ॥ উপজেলার একটি গ্রামীণ সড়কে সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে ঘোষপালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঘোষপালা ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ কয়েক গ্রামের সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী সড়ক তৈরির মাধ্যমে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানালেও অদ্যবধি কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, পৌর মহল্লার সীমানা ঘেঁষে চ-ীপাশা ইউনিয়নের দশালিয়া গ্রামে একটি খালের ওপর জিরাফের মতো সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে। বিগত তিন যুগ আগে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কে চলাচলের জন্য এই সেতুটি তৈরি করা হয়। তখন সেতুর দু’পাশে সংযোগ সড়ক ছিল। পরবর্তীতে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ময়মনসিংহ হতে কিশোরগঞ্জ যাতায়াতের জন্য এ সড়কটি পরিবর্তন করে নতুন সড়ক নির্মাণ করে। ফলে সড়কটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ঘোষপালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোষপালা ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ দশালিয়া, ডাংরী, চ-ীপাশা, ঝাউগড়া, সুতারাটিয়া, ঘোষপালা এলাকার মানুষ এই রাস্তাটি দিয়েই চলাচল অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে প্রায় দুই যুগের বেশি সময় ধরে সড়কটিতে কোন সংস্কার না হওয়ায় ধীরে ধীরে মাটি ক্ষয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
শনিবার সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘোষপালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে সেতুটিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রথমে একজন সেতুতে উঠে অন্যদের টেনে তুলছে। সেতু পার হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সকলেই এক সঙ্গে বলে, এভাবেই প্রতিদিন পার হতে হয় তাদের। ষাটউর্ধ স্থানীয় বাসিন্দা রহমত আলী জানায়, সড়কবিহীন সেতুটি ধান শুকানো ও মারাই ছাড়া এখন কোন কাজে আসে না। অথচ সেতুটি তৈরির সময় এখানে সংযোগ সড়ক ছিল। তিনি আরও বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার করে সেতুটি চলাচল উপযোগী করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বার-বার অনুরোধ জানালেও কেউ কর্ণপাত করেনি। ঘোষপালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রিনা আক্তার বলেন, পানি আর ফসলি জমির মধ্যে ভাসছে সেতুটি। সেতুর এপার ওপার হতে চাইলে কষ্ট করে উঠে লাফ দিয়ে নামতে হয়। এভাবে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আট শতাধিক শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসে। অনেক সময় লাফ দিয়ে নামতে গিয়ে মাটিতে পড়ে হাত-পা ভাঙ্গার ঘটনাও ঘটে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, জনপ্রতিনিধিরা যদি সংযোগ সড়কের জন্য প্রস্তাব দেন তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চ-ীপাশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এমদাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, দশালিয়া গ্রামের এই সড়কটি দ্রুত চালু করে সেতুটি কার্যকরী করার ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাদ্দেক মেহদী ইমামকে অবহিত করা হলে তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস দেন।