ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সেমিনারে মন্ত্রীর বক্তব্য

মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা ও যুদ্ধাপরাধ পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্তির কাজ চলছে

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ২৫ মার্চ ২০১৯

 মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা ও যুদ্ধাপরাধ পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্তির কাজ চলছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের ভূমিকা ও যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত তথ্য পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ চলছে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার রাতে ঢাকায় আমেরিকান ও পাকিস্তানী দূতাবাস খোলা ছিল। এ রহস্য উদঘাটনের কাজ চলছে। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যা ও আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। জাতিসংঘে এ দাবি উপস্থাপন করলে যাতে কেউ বিরোধিতা না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতরা সেই কাজ করছেন। এ দাবি আদায়ে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক খ্যাতনামা নাট্যব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহীদ বুদ্ধিজীবীর কন্যা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডাঃ নুজহাত চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী সিকদার, বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সদস্য ও সাবেক সচিব কবি আসাদ মান্নান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান বীরপ্রতীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর গণহত্যা, ধর্ষণ নতুন প্রজন্ম যেন ভুলে না যায়, সেজন্য তাদের স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকা- পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা গণহত্যার সংখ্যা নিয়ে বিরোধিতা করে তারা স্বাধীনতা মানে না। যারা সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচার হওয়া দরকার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার গতিশীল করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, রাজাকারদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই বিচার আরও ব্যাপকভাবে করা হবে। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত যারা করে তাদের সন্তানদের সরকারী চাকরি দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে কাজ করছে সরকার। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, খুনী জিয়াউর রহমানের যুদ্ধ করা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্ক আছে আরেক খুনী খন্দকার মোশতাক আহমেদের ভূমিকা নিয়েও। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার সময় (১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট) সারারাত আমেরিকান দূতাবাস ও পাকিস্তানী দূতাবাস খোলা ছিল, এটা রহস্যজনক। এটা নিয়ে গবেষণার কাজ চলছে, এটার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের পরে দীর্ঘ সময় স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় ছিল, এজন্য ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ঘুমন্ত জাতির ওপর আক্রমণ করা কাপুরুষোচিত, বর্বরোচিত। কতটা অমানবিক-নিষ্ঠুর কাজ করতে পারে মানুষ, সেটা ১৯৭১ সালের পাকিস্তানীদের দেখলে বোঝা যায়।
×