ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিমিয়ার ক্রিকেটে আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ আজ

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ২৫ মার্চ ২০১৯

প্রিমিয়ার ক্রিকেটে আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ আজ

মিথুন আশরাফ ॥ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াই। ক্রিকেটে এ কথাটি যেন উধাও হয়ে গেছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল বলতে আবাহনী ও মোহামেডানের মধ্যকার লড়াইকেই বোঝাত। কিন্তু এখন এই দুই দলের লড়াইয়ে সেই আমেজ নেই। আর তাই আজ যে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে আবাহনী ও মোহামেডান পরস্পরের বিপক্ষে লড়াই করবে, সেই লড়াইকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর উত্তেজনায় রাখা যাচ্ছে না। এ দুই দলের ম্যাচটি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সকাল নয়টায় শুরু হবে। এই ম্যাচকে ঘিরে আগে কত উত্তেজনা ছড়াত। কত লড়াইয়ের আমেজ থাকত। সবার মধ্যেই স্নায়ুচাপ থাকত। সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়াত। কর্মকর্তাদের মধ্যে সবসময়ই চিন্তা কাজ করত। হারলেই বিপদ। এমন ভাব সবসময়ই দেখা যেত। ক্রিকেটাররা খেলা শুরুর আগেরদিন থেকেই থাকতেন স্নায়ুচাপে। অথচ এখন এ দুই দলের ম্যাচকে ঘিরে যেন ম্যাড়মেড়ে ভাব এসে গেছে। দুই দলের কর্মকর্তারা এখন আর ম্যাচকে ঘিরে চিন্তায় থাকেন না। তারা যে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) একই সারিতে থাকেন। একই সঙ্গে থাকেন। দর্শকদের মাঝেও সেই রকম উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায় না। ক্রিকেটারদের মাঝে শুধু পারফর্ম করার জেদ থাকে। এই ম্যাচটি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীতার ঝাঁজ হারালেও যে ক্রিকেটার বিশেষ নৈপুণ্য দেখাতে পারেন, তিনি যে নজরে চলে আসেন। তাই ক্রিকেটারদের মাঝে এখনও কিছু করে দেখানোর আমেজই ম্যাচটিতে এনে দেয়। এখন লীগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দল গড়ে আবাহনী লিমিটেড। আর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবতো চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভুলেই গেছে। তারা সেরা ছয় দলের একটিতে থাকতে পারলেই খুশি। এখানেই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর তাই আবাহনীর সঙ্গে এখন মোহামেডান কুলিয়েও উঠতে পারে না। দুই দলের মধ্যকার হওয়া সর্বশেষ চার ম্যাচের একটিতেও যেমন জিততে পারেনি মোহামেডান। এবারতো মোহামেডানের জেতা আরও কঠিন। আবাহনী দলটিতে জাতীয় দলের ক্রিকেটারে ভরপুর। জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ মিঠুন, জহুরুল ইসলাম অমি, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাব্বির রহমান রুম্মন, সানজামুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম অপু রয়েছেন। একজন বিদেশী ক্রিকেটার রয়েছেন ওয়াসিম জাফর। ভারতের মুম্বাইয়ের এ ব্যাটসম্যানও জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। জাতীয় দলের হয়ে খেলা সব ক্রিকেটারই আবাহনীতে আছেন। সেই তুলনায় মোহামেডানে শফিউল ইসলাম ছাড়া আর কেউই জাতীয় দলের সীমানায় নেই। আবাহনী আবার পাঁচ ম্যাচের মধ্যে টানা চার ম্যাচ জিতে সর্বশেষ ম্যাচটিতে হেরেছে। তবে শীর্ষস্থান অক্ষুণ্ণ রেখেছে। মোহামেডান টানা তিন ম্যাচ জেতার পর টানা দুই ম্যাচ হেরেছে। এই ম্যাচটির আগে আবার আবাহনীর মাশরাফি অনুশীলনে যোগ দিতে পারেননি। তার মেয়ে হুমায়রা মর্তুজা জ্বরে আক্রান্ত। আজ মাশরাফির ম্যাচ খেলা নিয়েও তাই আছে সংশয়। এরপরও হুমায়রা একটু সুস্থ হয়ে উঠলেই নিশ্চয়ই মাশরাফি খেলতে নেমে যাবেন? আবাহনীর মাশরাফি না থাকলেও দলটি জেতার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু মোহামেডান? দলের কোচ মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু বলছেন, আবাহনীকে হারানো সম্ভব। যদি দলীয় নৈপুণ্য দেখানো যায় তাহলে। তিনি বলেছেন, ‘আবাহনীর বিপক্ষে দল হিসেবে যদি খেলতে পারা যায়, তাহলে সেটাই হবে আমাদের শক্তির জায়গা।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আসলে পেছনে ফিরে তাকালে দলের জন্য ভাল হবে না। আমাদের গ্রাফ উর্ধমুখী ছিল। গত দুই ম্যাচে তা নিচের দিকে নেমেছে। কালকের (আজকের) ম্যাচটা আসলে গ্রাফ তৈরি করে দিবে না। পুরো টুর্নামেন্টের জন্য মাইলফলক হবে ম্যাচটি। আমরা ম্যাচ বাই প্ল্যান করছি। পেছনের ম্যাচগুলো ওতটা সমস্যা সৃষ্টি করবে না।’ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভাব। সেই উত্তেজনা না থাকলেও জেতার আগ্রহ দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে ভালভাবেই আছে। সেই আগ্রহই আজকের ম্যাচকে প্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলতে পারে।
×