ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যশোর রেজিস্ট্রি অফিসে ভোগান্তি চরমে

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ২৬ মার্চ ২০১৯

যশোর রেজিস্ট্রি অফিসে ভোগান্তি চরমে

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বালাম বই সররবাহ বন্ধ। অলস বসে আছে নকলনবিসরা। ঝুলে আছে প্রায় দুই লাখ দলিলের নকল কাজ। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জমির মালিকরা। যশোর জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের চিত্র এটি। শুধু বালাম বই নয়, সরকারী দফতরের বিভিন্ন ফর্ম সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে দাফতরিক কাজ করতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। কবে নাগাদ সঙ্কট নিরসন হবে সেটিও নিশ্চিত নয় সংশ্লিষ্টরা। দ্রুত সমাধান না হলে ভোগান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। জেলা রেজিস্ট্রি অফিস সূত্র জানায়, যশোর জেলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ১ লাখ ৯২ হাজার ৩০৩টি দলিল নকলের জন্য বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে যশোর সদরে ৫৬ হাজার ৬৭৩টি, ঝিকরগাছায় ১২ হাজার ৯৪৫টি, শার্শায় ৩৩ হাজার ৯১৬টি, মনিরামপুরে ৪২ হাজার ৬৪৯টি, কেশবপুরে ১১হাজার ৬৪৭টি, নওয়াপাড়ায় ১৮হাজার ৯২৪টি, বাঘারপাড়ায় ৮ হাজার ৪৮৭টি ও চৌগাছায় ৬ হাজার ৬২টি দলিল নকল বকেয়া রয়েছে। এজন্য প্রায় সাত হাজার পিস বইয়ের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সরবরাহ নেই বালাম বই। এছাড়া সরকারী দফতরের বিভিন্ন ফর্ম সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। রসিদ বই, ক্যাশ বই, রেজিস্টার ফি বই, নকলনবিসদের এনএন ফি বই না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বালাম বই সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রায় ৩শ’ নকলনবিস অলস বসে আছে। দিন দিন দলিলের সংখ্যা বাড়লেও বালাম এন্ট্রি করা যাচ্ছে না। জট কাটিয়ে উঠতে কঠিন হবে। কবে নাগাদ এই সমস্যার সমাধান হবে সেটি নিশ্চিত নয়। যশোরের ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, ঋণ নিতে অনেকে মর্টগেজ হিসেবে দলিল জমা দেন। সেই দলিল রেজিস্ট্রি অফিসে যাচাই করতে গিয়ে পাচ্ছি না। কারণ, এখনও নকল (এন্ট্রি) হয়নি। এতে দলিলের মালিকানা যাচাইয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কারণ, ৪ বছর আগের দলিলও নকল করা হয়নি। এরমধ্যে আবার হাত বদল হয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আমরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান হওয়া জরুরী। যশোর জেলা ও সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মবিনুর রহমান বলেন, বালাম বই সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। দলিল এন্ট্রি হচ্ছে না। এজন্য ৩/৪ বছর ধরে দলিল ডেলিভারি হচ্ছে না। এতে দলিলের জট বাড়ছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে, জমা দলিলের নকল কাজ শেষ করতে অনেক সময় লেগে যাবে। দলিল নকলের কাজ না হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মালিকরা। জমির মালিকরা রেজিস্ট্রি অফিসে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। জরুরী প্রয়োজনে সার্টিফায়েড কপি দিয়ে কাজ সারছেন। জেলা রেজিস্ট্রার শাহ্জাহান সরদার বলেন, প্রায় সাত হাজার বালাম বইয়ের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সরবরাহ নেই। এজন্য নকলনবিসরাও অলস বসে আছে। সাধারণ মানুষও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বালাম বই সঙ্কটের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। বেসরকারী টেন্ডারের মাধ্যমে বালাম বই সরবরাহ করলে দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। মন্ত্রীর সঙ্গে সভায়ও বিষয়টি তুলে ধরেছি। এছাড়া দাফতরিক বিভিন্ন ফর্ম সরবরাহ না থাকায় কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। ফর্ম ফটোকপি করে বিকল্পভাবে কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
×