ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২৬ মার্চ ২০১৯

ঢাকার দিনরাত

‘জয় বাংলা’! এক আশ্চর্য মন্ত্র! একাত্তরের মার্চের কথা স্মরণ করুন, প্রিয় পাঠক। এই মন্ত্র ছিল সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর হৃদয়ের কবিতা। এর উচ্চারণে অজান্তেই মুষ্টিবদ্ধ হতো হাত প্রতিজ্ঞায় অঙ্গীকারে; আর চোখে খেলে যেত এক অভূতপূর্ব ঝিলিক। সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ! কালে কালে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অপপ্রচারে একাত্তরের স্লোগানকে একটি দলের স্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলেছে। তা সত্ত্বেও আজকের অনেক তরুণ দেশের সুসংবাদে, ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক আসরে বিজয়ের উপলক্ষ পেলে বজ্র থেকে শক্তি ধার করে কণ্ঠে গৌরবদীপ্ত অহঙ্কারের স্বরভঙ্গিতে উচ্চারণ করে- জয় বাংলা। আজ স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করি স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে। এক সাগর রক্তের বিনিময়েই যে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীনতা, সেকথা যেন সব সময় আমরা স্মরণে রাখি। একাত্তরের মার্চ মাসেই শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ডাকে ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলন। এই মার্চের ২৬ তারিখে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এটা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। প্রকৃত স্বাধীনতা ঘোষিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের সাতই মার্চ তারিখেই। রমনার উদ্যানে যেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।’ বললে ভুল হবে না যে, আমাদের স্বাধীনতা ঘোষণার দিন দু’টি। একটি অনানুষ্ঠানিক ঘোষণার এবং আরেকটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। অনানুষ্ঠানিক ঘোষণাটি দেওয়া হয় সাতই মার্চ। আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটি দেওয়া হয় ছাব্বিশে মার্চ। যে দিবসটিকে আমরা এখন স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করি। সাতই মার্চ তারিখেই পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ আর পূর্ব পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশ। মার্চ মাসের সাত তারিখের এই ভাষণের পরই স্বাধীনতার আন্দোলন দুর্বার হয়ে ওঠে। ২৩ মার্চ ছিল পাকিস্তান দিবস। ওই দিন ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া ঢাকা শহরের কোথাও পাকিস্তানের পতাকা ওড়েনি। উড়েছে স্বাধীন বাংলার সূর্য ও মানচিত্র খচিত পতাকা। তবে ছাব্বিশে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ করার আগে আমরা ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করি পঁচিশে মার্চে গণহত্যা দিবস এবং কালরাত। পঁচিশে মার্চ, সেই ভয়াল কালরাতের স্মৃতি এখনো আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। এই রাতেই ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালিদের ওপর ট্যাংক, কামান, মেশিনগান নিয়ে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল রাতভর। সেই রাতে তারা ঢাকায় যে গণহত্যা শুরু করেছিল, মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস সারা দেশেই তা চালিয়ে গেছে। ৩০ লাখ বাঙালির প্রাণ গেছে সেই গণহত্যায়। তিন লাখ নারী সম্ভ্রম হারিয়েছে। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে জামায়াতে ইসলামী নামের রাজনৈতিক দলটির নেতাকর্মীরা, যারা বাঙালি নামের কলঙ্ক হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে অগণিত বাড়িঘর। এ সবই মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ। তাদেও সেই অপরাধের অসংখ্য প্রমাণও রয়েছে। সারা বিশ্বে সেদিন প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। বহু বিশ্বনেতা সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। এইসব কথা আমাদের বারবার বলে যেতে হবে। নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। সড়কে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আরেকটি প্রতিবাদ গত সপ্তাহে ঢাকাবাসী সড়ক-নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আরেকটি জোরালো ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেছে। বুধবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটও পালিত হয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার বেপরোয়া বাসের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। বাসটি আগেই একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল বলে চালকের তাড়া ছিল পালানোর। পরে বাসচালক এবং ওই সু-প্রভাত কোম্পানির রুট সম্পর্কে তথ্য পেয়ে হতবাক হয়ে পড়তে হয়। চালকের লাইসেন্স না থাকা এবং সু-প্রভাত কোম্পানির বাসসমূহের অনির্ধারিত রুটে অবৈধভাবে বছরের পর বছর ধরে চলার বিষয়টি আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে আরেকবার দেখিয়ে দিল কী নৈরাজ্য চলছে পরিবহন খাতে। অনিয়ম দেখভালের দায়িত্ব যাদের তারা যে সঠিকভাবে কর্তব্য পালন করছেন না এবং ক্ষেত্রবিশেষে উৎকোচের বিনিময়ে এইসব অবৈধ কর্মকা- চলতে দিচ্ছেন- সেটি পরিষ্কার। স্বয়ং ডিএমপি পুলিশ কমিশনার বিস্মিত হয়েছেন ওই বাস কোম্পানির অবৈধভাবে ভিন্ন রুটে চলার বিষয়টি জেনে। জনকণ্ঠের সমাজ ভাবনার চলতি সপ্তাহের বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে- সড়কে বিশৃঙ্খলা। এ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে আমরা এত লিখছি, মানুষ এত কথা বলছেন, হাজারো অভিযোগ উঠছে, তবু পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না। পরিবহন খাতের চলমান অনিয়মগুলো নিয়ে সাংবাদিকরা ক্রমাগত লিখে চলেছেন। মনে হচ্ছে এ জন্য বড় ধরনের সামাজিক আন্দোলন দরকার। প্রতিদিনই যদি ডিজিটাল মাধ্যমে এসব অন্যায় ও অনিয়মের ভিডিও আপলোড করা হয় এবং তার হাজার হাজার শেয়ার দেয়া হয় তা হলে যদি তাদের টনক নড়ে। ট্রাফিক পুলিশ চাইলেই সড়ক নৈরাজ্যের অবসান হতে পারে- এটা মানুষ বিশ্বাস করে। ঢাকা মহানগরীর কিছু নেতিবাচক পয়েন্ট রয়েছে। যেগুলোর জন্য মানুষ বিপন্ন ও বিপর্যস্ত, তার ভেতর গণপরিবহন একটি প্রধান বিষয়। সড়কে শৃঙ্খলা না ফিরলে ঢাকার দুর্নাম ঘুচবে না, ঢাকাবাসী শান্তি পাবেন না। শহীদুল জহির স্মরণ লেখককে স্মরণের উৎকৃষ্ট উপায় তাঁর লেখা পড়া, লেখা নিয়ে কথা বলা। আর সেই লেখা যদি শিল্পের ভিন্ন কোনো মাধ্যমে রূপান্তরের প্রয়াস দেখা যায়, তাহলে ভক্তপাঠক আনন্দিত হন। অকালপ্রয়াত মেধাবী লেখক শহীদুল জহিরের মৃত্যুবার্ষিকী পালন তাৎপর্যপূর্ণ হলো তাঁর উপন্যাস নিয়ে নির্মিত মঞ্চনাটকের বিশেষ প্রদর্শনীর উপযোগে। পুরনো ঢাকার একটি বিশেষ মহল্লা ঘুরেফিরে আসে তাঁর লেখায়। বলাবাহুল্য সেই জনপদ হয়ে ওঠে গোটা স্বদেশেরই প্রতীক। ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ লেখকের প্রথম উপন্যাস; আয়তনে ক্ষীণকায়, যদিও আবেদনে বিস্তৃত। নাট্যনির্দেশক সৈয়দ জামিল আহমেদ ইতোমধ্যে নাট্যাঙ্গনে সমীহজাগানো এক নামে পরিণত হয়েছেন। তাঁর নতুন এ মিশনটিকেও যথেষ্ট সফল বলতে হবে। তাঁর নিজস্বতা দৃষ্টি কাড়বার মতোই। শিল্পকলা একাডেমির মূল মঞ্চটি এমনিতেই প্রশস্ত, তারপরও তিনি পেছনের রূপসজ্জার পরিসরটিকেও মঞ্চের সঙ্গে একীভূত করে নিয়েছেন। ফলে মঞ্চটিকে যদি বিশাল ক্যানভাস ধরি, তবে বলতে হবে তার বিভিন্ন কোণে আলো ফেলে ফেলে ছবি আঁকা এবং পরে তা মুছে ফেলে আবার ভিন্নতর ছবি আঁকার প্রয়াস লক্ষণীয়। নান্দনিকতার প্রশ্নে তিনি সার্থক। মুক্তিযুদ্ধের সময় খানসেনা ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নৃশংস তা-ব এবং স্বাধীনতার বহু বছর বাদে আবারও রাজাকারদের উত্থানকালে একাত্তরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মনোজগতে বিপন্নতার অনুভব এবং একজন আবদুল মজিদের নিজ বাসভূম ত্যাগের বাস্তবতা নিয়ে লেখা ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ উপন্যাসটির নাট্যায়ন দর্শকদের মনে গেঁথে রইবে। ‘স্পর্ধা’ প্রযোজিত নাটকটি সম্পর্কে সমকালীন লেখক ইমতিয়ার শামীমের অভিমত ভেবে দেখার মতো। তিনি বলছেন, ‘বিশাল মঞ্চকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর যে প্রবণতা ও দক্ষতা জামিলের রয়েছে তা শেষ পর্যন্ত ভালো দৃশ্যায়নের মেজাজ তৈরি করতে পারলেও পুরো নাটকে উঁচু লয়ের সংলাপ প্রক্ষেপণ আর বিরতিহীন ছুটোছুটি থেকে আমার প্রায়ই মনে হচ্ছিল, ধর্মসভার কোলাহলে বসে আছি। জহিরের উপন্যাসে ‘সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়’ ধরনের যে মনোমুগ্ধকর আত্মগত পুনরাবৃত্তি ঘটে, জামিল তাকে প্রোথিত করেছেন বিরক্তিকর উচ্চ লয়ের বৃন্দ সংলাপ উচ্চারণের কাঠামোতে। এইভাবে কোনো অভিনেতা অভিনেত্রীর একক উচ্চ লয়ের অভিনয় উঠে আসার সম্ভাবনাকেও তিনি ব্যাহত করেছেন।’ আমি দেখেছি সাহিত্য থেকে নাটক বা চলচ্চিত্র নির্মিত হলে সাহিত্য পাঠকদের ভেতর এক ধরনের অস্বস্তিও অনেক সময় কাজ করে। শিল্পমাধ্যমগত ব্যবধান মেনে নিলে এবং রূপান্তরিত মাধ্যমের ভাষা ও ব্যকরণকে গ্রহ্য করলে দুটোই (সাহিত্য ও তার রূপান্তর) উপভোগ্য হয়ে ওঠায় বাধা থাকে না। হ্যাঁ, মানছি সমবেত সংলাপের পুনরাবৃত্তি অনাবশ্যক একঘেয়েমি বলে মনে হওয়াটাও সংগত। নাট্যায়নে দেখা যায় যিনি ন্যারেটর, পরমুহূর্তে তিনিই আবার কুশীলব। এখানে অভিনয়শিল্পীদের দক্ষতা আবশ্যক। লন্ডনে থিয়েটারে দেখেছিলাম নাট্যাভিনয়ের সমান্তরালে মঞ্চের এক কোনে স্থাপিত ডিজিটাল পর্দায় পাত্র-পাত্রীর সংলাপ প্রদর্শিত হচ্ছিল। অনেকটা সিনেমার সাবটাইটেল দেওয়ার আঙ্গিকে। শহীদুল জহিরের উপন্যাসটি যিনি পড়েননি, তিনি এই নাটকের সংলাপ কতোটা শুনতে ও বুঝতে পারবেন, তা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। তাছাড়া সৈয়দ জামিল সংগীত চয়নও করেছেন এশিয়া-ইওরোপ-আমেরিকার সংগীতভা-ার থেকে (৩৩টি ভুক্তি দিয়েছেন তিনি), এর একটি পিসও এ দেশীয় সংগীত থেকে নেননি। এটি কি অসচেতনভাবে ঘটলো? বিড়ালছানা নিয়ে তুলকালাম ঢাকায় এমনটি অভিনবই মনে হলো। বিড়ালছানাকে মেরে ফেলার জন্য মানুষ গ্রেফতার এবং পরে জামিনে মুক্তি। হ্যাঁ ঘটনাটির ভেতর অসুস্থতা রয়েছে, আছে অমানবিকতাও। বিড়ালছানাকে কয়েক টুকরো করার দৃশ্যটি ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিাজটি করেছেন অল্প বয়সী এক তরুণী। প্রসঙ্গটি নিয়ে আরও কিছু বলার আগে সাত বছর পেছনে ফিরে যেতে চাই। সেটিও গণমাধ্যমে প্রচারিত। তবে আমাদের সংস্কৃতি বলে কথা। নেতিবাচক খবরই বেশি প্রচার পায়, একেবারে ‘আলোড়ন’ তুলে ফেলে। সে তুলনায় ওই ইতিবাচক ঘটনা তেমন আলোচিত হয়নি। ঘটনাটি হলো : মেছো বিড়ালের তিন ছানা বন থেকে লোকালয়ে বের হয়ে ধরা পড়ে। গ্রামের লোকজন খাঁচাবন্দী করে ধানক্ষেতে নিয়ে পিটিয়ে মারছিলেন। মানুষের এমন নির্দয় আচরণ দেখে খাঁচাসুদ্ধ একটি মেছো বিড়ালকে উদ্ধার করেন সিলেট মদনমোহন কলেজের ছাত্রী জুয়েনা আক্তার। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দেয়া হয়। বন বিভাগের হেফাজতে সিলেটের সংরক্ষিত বনাঞ্চল খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেয়া হয় প্রাণীটিকে। ক্লিনিক থেকে ফেরার পথে খালপাড়ের ধানক্ষেতে কিছু লোকের হৈচৈ শুনে এগিয়ে গিয়েছিলেন জুয়েনা। কাছে গিয়ে মেছো বিড়াল হত্যার আয়োজন দেখে শিউরে ওঠেন। ততক্ষণে অবশ্য তিনটির মধ্যে দুটি বিড়ালকে মেরে ফেলা হয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রাণী হত্যার বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের জানালে তারা খাঁচায় থাকা বিড়ালটি জুয়েনার হাতে তুলে দেন এবং নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। ঢাকার মুগদাপাড়ার বিড়ালছানা হত্যাকারী যদি ফেসবুকে ছবি আপলোড না করতেন, তা হলে কারও জানার উপায় ছিল না সেটি। তাই গ্রেফতারের প্রশ্নও উঠত না। তবে প্রাণীর কল্যাণে কাজ করা একটি সংগঠন (এনজিও কি?) উদ্যোগী হয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ তৎপর হয়। ঘটনাটি একেবারে উপেক্ষা করে যাওয়ার মতো নয়। বিড়ালের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কাছের। গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে বিড়াল সারা বিশ্বেই আদরে থাকে। আদরকাতর এই প্রাণী নিঃসঙ্গ মানুষের সময় ভরিয়ে দেয়। আমি নিজে অবশ্য বিড়াল মোটেই পছন্দ করতাম না। একটা ঘিনঘিনে ভাব হতো। গৃহিণী পথ থেকে বিড়ালছানা কুড়িয়ে আনার পর ক’দিন বিরক্ত ও শঙ্কিত থেকেছি। যদিও পরে ছানাটি আমার খুবই প্রিয় হয়ে ওঠে। অকাতরে তাকে স্নেহ দিতে শুরু করি। সকাল-সন্ধ্যা তার মল পরিষ্কার করতেও আমার এতটুকু বিরক্তি আসত না। কথা হলো ফ্ল্যাটবাড়িতে বিড়াল পোষা একটু বিড়ম্বনার বৈকি। বিড়াল একটু বড় হলে বাইরে যাবেই, অন্য ফ্ল্যাটবাসীর বিরক্তির কারণও হবে। সেই বিরক্তি থেকে কেউ যদি বিড়াল মেরে ফেলার মতো ঘটনা ঘটায় তা হলে পশুপ্রেমীরা নিশ্চয়ই মন খারাপ করবেন। অথচ দেখুন, মানবজীবনই হলো কোন না কোন প্রাণী হত্যা এবং তা কেটেকুটে রান্না করে খাওয়ার নিয়তি। তার পরও শিক্ষা ও সভ্যতা আমাদের বিরত রাখে পোষা প্রাণীকে নির্মমভাবে হত্যা করা থেকে। ঢাকার যে তরুণী বিড়ালছানা হত্যা করলেন এবং তার ফলস্বরূপ আইনী যে প্রক্রিয়া শুরু হলো- এসব পর্যবেক্ষণ করলে এই নিষ্ঠুর শহরের স্বার্থপর মানুষ বুঝবেন, যে কোন পোষা প্রাণী হত্যাই গর্হিত অপরাধ। এমনকি নির্যাতন করা হলেও। এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পথ খোলা আছে। সুতরাং সাবধান। ২৪ মার্চ ২০১৯ [email protected]
×