ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আমাদের লক্ষ্য জাতি হিসেবে মর্যাদা ফিরে পাবার

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ২৬ মার্চ ২০১৯

আমাদের লক্ষ্য জাতি হিসেবে মর্যাদা ফিরে পাবার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বাধীনতার সুফল দেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে তার সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার সুফল যেন বাংলার মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারি এবং আর্থসামাজিকভাবে যেন আমরা উন্নত হতে পারি, উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে যেন আমরা একটা মর্যাদা ফিরে পেতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশবাসী তার সুফল পাচ্ছে। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্ববাসী বাংলাদেশের নাম শুনলে এখন সম্মানের চোখে দেখে। এটুকুই আমার তৃপ্তি। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী যারা দেশের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের খুঁজে বের করে পুরস্কৃত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজকের বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, এক্ষেত্রে যাদের অবদান রয়েছে তারা গ্রাম বাংলায় ছড়িয়ে আছে। আপনারা দেখবেন অনেকে তাদের ক্ষুদ্র অল্প একটু সম্পদ নিয়েও হাজারো মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাদের সহযোগিতা করে। এ ধরনের যারা অবদান রাখে দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে, মানুষের জন্য, আমি মনে করি তাদের খুঁজে খুঁজে বের করা প্রয়োজন। তারা যে মানব কল্যাণে অবদান রেখেছেন সেজন্য তারা পুরস্কারপ্রাপ্তির যোগ্য। আমি নিজেকে ধন্য মনে করি যে, গুণীজনদের আমরা সম্মান দিতে পেরেছি। তারপরও আমরা জানি, অনেকজন রয়ে গেছেন তাদের আমরা দিতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে দেশের ১৩ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে গৌরবময় ও অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯ এ ভূষিত করেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক নাগরিক সম্মাননা বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সফিউল আলম। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে থেকে অনুভূতি ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক গৃহায়নমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। প্রধানমন্ত্রী টানা দুই মেয়াদে দেশের ব্যাপক উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে গিয়ে আরও বলেন, গত এক দশকে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশকে বিশ্ববাসী একসময় বলত, দুর্ভিক্ষের দেশ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ মনে করে অবহেলার চোখে দেখত। সত্যি কথা বলতে কি আমাদের খুব কষ্ট লাগত। এই স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ যে সংগ্রাম জাতির পিতা করেছেন বা আমরাও ভুক্তভোগী। আমাদেরও চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে জীবন গেছে। আমরাও রাজপথে অনেক আন্দোলনসংগ্রাম করেছি। যারা মুক্তিযুদ্ধের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করে দেশকে স্বাধীন করেছেন, নিজের জীবন অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন, খুব স্বাভাবিকভাবে সেই দেশটাকে নিয়ে কেউ যদি সম্মানের চোখে না দেখে, সেই দেশটাকে যদি অসম্মানের সঙ্গে দেখে- সেটা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের জন্য কষ্টের কারণ ছিল। তিনি বলেন, সেই কারণেই আমরা যখনই সরকারে এসেছি, চেষ্টা চালিয়েছি, কত দ্রুত দেশকে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নতি করা যায়, উন্নত দেশ হিসাবে বিশ্বে একটা মর্যাদা অর্জন করা যায়। আজকের বাংলাদেশ অন্তত আমাদের এক দশকের প্রচেষ্টার ফলে এখন এই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগ অর্জন করতে যাচ্ছে। আমাদের মাথাপিছু আয় যেখানে এক হাজার ৭১১ মার্কিন ডলার অর্জন করেছিলাম সেটা আমরা ১ হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলার অর্জন করতে যাচ্ছি। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে, উন্নয়নের রোল মডেল। আজকে বাংলাদেশের কথা শুনলে মানুষ সম্মানের চোখে দেখে। এইটুকুই আমার তৃপ্তি যে অন্ততপক্ষে বাংলাদেশটাকে এ মর্যাদা পর্যন্ত আমরা নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন, বিশ্বাস রেখেছেন। আমাদের ভোট দিয়ে আবার তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন এবং সামনে আরও কিছুদিন আমরা সময় পাচ্ছি, এই দেশটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। স্বাধীনতার সুফল আমরা দেশের প্রতিটি জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি। রাজনৈতিক জীবনে সঙ্কটময় নানা ঘটনা পেরিয়ে আসার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে বলেন, আমাদের চলার পথও খুব সহজ ছিল না। একটা দৃষ্টান্ত দিতে পারি। একটা পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে যখন দুর্নীতির অভিযোগ আমার ওপর আনা হলো বা আমার পরিবারের ওপর আনা হলো, অন্তত এইটুকু মানসিক শক্তি আমাদের ছিল। এটাকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। দুর্নীতি কোথায় হয়েছে তা প্রমাণ করতে বিশ্বব্যাংকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। বিশ্বব্যাংক কিন্তু সেটা প্রমাণ করতে পারেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছিল। কাজেই আমি একটা কথাই বলব, সততাই হচ্ছে সবথেকে বড় শক্তি। আর আমাদের এই সততার শক্তি ছিল বলেই এটা মোকাবেলা করতে পেরেছিলাম। অনেকভাবে বাধা দেয়া হয়েছিল। আজকে আমরা এই একটা সিদ্ধান্তের পর অন্তত বলতে পারি, আমরা লোন (ঋণ) নিতাম কিন্তু সেটাকে অনুদান হিসাবে করুণার চোখে দেখা হতো। এই অন্তত তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এখন পাল্টে গেছে। তারাও বুঝেছে বাংলাদেশও পারে। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস যাতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় সেটার জন্য বাংলাদেশকে প্রচেষ্টা চালিয়ে দেতে হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকার তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, একেবারে গ্রামের প্রতিটি মানুষের ঘরে যেন স্বাধীনতার সুফল পৌঁছায়, প্রতিটি মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়। দেশের একটি মানুষও ক্ষুধার্ত থাকবে না, গৃহহারা থাকবে না, বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না। তাদের জীবনটা অর্থবহ হবে। সুন্দর হবে, উন্নত হবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন উদযাপনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ইনশা আল্লাহ এর মধ্যেই এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছবে, প্রতিটি মানুষ উন্নত সুন্দর জীবন পাবে। বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, ইনশা আল্লাহ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। ইনশা আল্লাহ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরে তাঁর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবোই। বাকশাল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ॥ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাকশাল প্রসঙ্গে বলেন, দেশের উন্নয়ন বৃদ্ধি এবং দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার চিন্তা থেকেই বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করা হয়েছিল। জাতির পিতা যে পদ্ধতিটা নিয়েছিলেন এটা যদি কার্যকর করা যেত তাহলে বাংলাদেশে আর কখনো জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ খেলতে পারত না। জনগণ তার মনমতো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারত। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে জাতির পিতার কর্মসূচী এবং ওই সময় দেশী-বিদেশী নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনই একটি অবস্থার মাঝে জাতির পিতা সিদ্ধান্ত নেন, যে করেই হোক আমাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। দেশের উন্নয়ন বাড়াতে হবে এবং দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই তিনি বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করেন। যেটাকে সংক্ষিপ্ত আকারে (বাকশাল) নামে পরিচিত করা হয়েছিল। বাকশাল গঠনের পর এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু সব দলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ করে রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির অর্জনটা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্য নিয়ে তিনি স্থানীয় সরকারগুলো শক্তিশালী করার জন্য যতগুলো মহকুমা ছিল সেগুলোকে জেলায় রূপান্তর করেন। ১৯ জেলার স্থলে ৬০টি জেলা করা হয়। যাতে ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রিকরণ করে তৃণমূল মানুষের কাছে ক্ষমতা পৌঁছে দেয়া এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করা, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা, এটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। একাত্তরে পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধীদের দোসরসহ আন্তর্জাতিকভাবে একটা বিরাট চক্রান্ত কাজ করছিল দাবি করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যখন তারা (ষড়যন্ত্রকারী) দেখল এর ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে, স্বাবলম্বী হবে আর বাংলাদেশকে কখনও থামিয়ে রাখা যাবে- ঠিক তখনই তাদের চক্রান্ত শুরু হলো। কারণ জাতির পিতার উদ্যোগটা ছিল, ‘বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক লীগ গঠন করে সকল দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে অপপ্রচার চালানো শুরু হয়েছিল। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের বাইরে ৯টা সিট আওয়ামী লীগের বাইরে অন্যদের পাওয়ার দিকটি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, অন্যান্য যে রাজনৈতিক দলগুলো যারা কখনও নির্বাচনে হয়তো জয়ী হতে পারে না, তাদের সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতা বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ নামক একটি প্লাটফরম তৈরি করেন, যেখানে জাতীয় ঐক্য হবে। যে ঐক্যের মধ্য দিয়ে সকলে দেশের উন্নয়নে কাজ করবে এবং সেখানে সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে সকলকে এক জায়গায় নিয়ে এসে একটা প্লাটফরমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পক্ষে কাজ করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। বাকশালে ভোটের অধিকারের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সেসময় নির্বাচনের যে পদ্ধতি করেছিলেন সে অনুযায়ী যার যার নির্বাচন সে সে করতে পারবে। নির্বাচনের খরচ প্রতিটি প্রার্থীকে দিয়ে দেয়া হবে রাষ্ট্রের তরফ থেকে। প্রতি আসনের জন্য পৃথক একটি করে পোস্টারে সকল প্রার্থীর নাম ছাপিয়ে দেয়া হবে। জনগণের সঙ্গে যার যোগাযোগ আছে, সম্পৃক্ততা আছে তারা নির্বাচিত হবেন। অর্থাৎ ভোটের অধিকার তৃণমূল পর্যায়ের কাছে যাতে পৌঁছে, তারা যেন স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারেন সেই সুযোগই বঙ্গবন্ধু করে দিয়েছিলেন। বাকশাল পদ্ধতিতে সেই সময় অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচনের উদাহারণ টেনে তিনি বলেন, দুইটা নির্বাচন হয়েছিল। একটা কিশোরগঞ্জে। সেখানে আমাদের তখনকার ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। আর কয়েকজন সাধারণ মানুষ এবং স্কুল মাস্টার। কিন্তু সেই স্কুল মাস্টার নির্বাচনে জয়ী হয়। অর্থাৎ জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার যে অধিকারটা তা সুনিশ্চিত হয়েছিল, এটিই তার প্রমাণ। কো-অপারেটিভের মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ বাকশালে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, বাংলাদেশ ৫/৭ বছরের মধ্যেই উন্নত, সমৃদ্ধশালী হতে পারত। ২১ বছর পর যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে আমরা জাতির পিতার বিভিন্ন অনুসৃত বিভিন্ন পথ অনুসরণ করে তাঁর অর্থনৈতিক নীতিমালা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, গ্রামপর্যায় থেকে গড়ে তোলার এবং তৃণমূল থেকে যাতে অর্থনৈতিক উন্নতিটা হয় সেইভাবে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রথম খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছিল। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছিল। মানুষের মাঝে একটা আস্থা বিশ্বাস ফিরে এসেছিল। কিন্তু ২০০১ সালে আর সরকারে আসতে পারলাম না। জনগণের ভোট বেশি পেয়েছিলাম কিন্তু আমরা কম সিট পেলাম। সেখানেও একটা চক্রান্ত ছিল। কারণ দেশের সম্পদ অন্যের কাছে বিক্রি করতে চাইনি বলেই আমাদের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র হয়। যেসব গুণীজন পুরস্কার পেলেন ॥ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন। দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক নাগরিক সম্মাননা তাদের হাতে তুলে দেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণীজনরা হলেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এটিএম জাফর আলম (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক, সাবেক গৃহায়নমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী মিসবাহুন নাহার, আব্দুল খালেক (মরণোত্তর), অধ্যাপক মোহাম্মাদ খালেদ (মরণোত্তর), ব্যারিস্টার শওকত আলী খান (মরণোত্তর), চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজ সেবায় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচারকে (বিআইএনএ) এ পুরস্কারে ভূষিত করেন প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কার হিসেবে ৩ লাখ টাকার চেক, ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি পদক এবং সনদপত্র প্রদান করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর (মরণোত্তর) পক্ষে তার ছেলে তানভীর শোভন হায়দার চৌধুরী, শহীদ এটিএম জাফর আলমের (মরণোত্তর) পক্ষ থেকে তার ভাই অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলম, আবদুল খালেকের (মরণোত্তর) পক্ষে তার সহধর্মিণী সাবিনা খালেক, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের পক্ষে (মরণোত্তর) তার ছেলে মোহাম্মদ জহির, ব্যারিস্টার শওকত আলী খানের (মরণোত্তর) পক্ষে তার দৌহিত্র রায়হান হোসেন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষে থেকে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক অধ্যাপক বীরেশ কুমার গোস্বামী স্বাধীনতা পুরস্কার গ্রহণ করেন। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ সফিউল আলম। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, বিচারপতিবৃন্দ, জাতীয় সংসদের সদসবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, বিদেশী কূটনিতিকবৃন্দ, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিবর্গসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
×