ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বাধীনতার সুখ, লাল-সবুজের আদর

প্রকাশিত: ১১:১০, ২৬ মার্চ ২০১৯

স্বাধীনতার সুখ, লাল-সবুজের আদর

মোরসালিন মিজান ॥ স্বাধীনতা দিবস। আহা, স্বাধীনতা! বাঙালী জীবনের পরম প্রাপ্তির দিনে অনিন্দ্য সুন্দর রূপে সেজেছে বাংলা মা। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই লাল-সবুজ। এখানে ওখানে উড়ছে স্বাধীনতার পতাকা। শহর ঢাকার বহুতল ভবনে জ্বলছে মরিচবাতি। কী যে ভাল লাগছে দেখে! মার্চের প্রথম দিন থেকেই বদলাতে শুরু করে রাজধানীর সাজসজ্জা। মতিঝিল, কাওরান বাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনগুলো সুন্দর সেজেছে। সমস্ত সাজসজ্জা বাঙালীর মুক্তির আনন্দকে তুলে ধরছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকাও উৎসবে মুখরিত। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মূল ভবনটি মরিচবাতি দিয়ে চমৎকার সাজিয়ে নেয়া হয়েছে। আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে টিএসসিভিত্তিক বেশ কয়েকটি সংগঠন। আজ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হবে ‘শোক থেকে শক্তি’ শীর্ষক পদযাত্রা। ১৯৭১ সালে একদল অভিযাত্রী দেশমাতার মুক্তির অভিপ্রায়ে ‘বিশ্ব বিবেক জাগরণ পদযাত্রা’র আয়োজন করেছিলেন। বর্তমান প্রজন্মের আরেক দল অভিযাত্রী গত ছয় বছর ধরে একই ধরনের পদযাত্রার আয়োজন করছে। আজ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হবে এই পদযাত্রা। শেষ হবে সাভার স্মৃতিসৌধে গিয়ে। তারও আগে থেকে রাজধানীর বিভিন্ন মঞ্চে চলছে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। আয়োজন থেকে কথা, কবিতায়, গানে, নাচে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে একাত্তরকে। আরও নানা উৎসব অনুষ্ঠানে আজ মুখরিত থাকবে ঢাকা। শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। বরাবরের মতোই স্বাধীনতার উৎসবে যোগ দেবেন সব বয়সী মানুষ। মেয়েরা শাড়ি আর ছেলেরা বের হবেন পাঞ্জাবি পরে। সবার পোশাকে থাকবে প্রিয় লাল-সবুজ। আনন্দের পাশাপাশি আজ মনে পড়বে, স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লাখ প্রাণ বলি দিতে হয়েছিল। নির্বিচারে হত্যা করেছে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী। মায়েদের, মেয়েদের ওপর চালানো হয়েছে নির্মম নির্যাতন। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এভাবে সারা বাংলা পেয়েছিল শ্মশানের চেহারা। বাঙালী তবু মাথা নোয়াবার নয়। বিজয়ী হয়ে তবেই ফিরেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। আজ সেইসব স্মৃতি সামনে এসে দাঁড়াবে। প্রিয়জন হারানোর শোক নতুন করে বুক বিদীর্ণ করে বটে। ততোধিক সত্য হয়ে ধরা দেবে স্বাধীনতার আনন্দ। প্রাণপণ লড়ে স্বজাতির জন্য নতুন ভোর এনেছিলেন যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবে জাতি। তবে মনে রাখা জরুরী যে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমরা কি মহামূল্যবান কথাটি মনে রাখছি?
×