ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় প্রত্যাশা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২৬ মার্চ ২০১৯

শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় প্রত্যাশা বাংলাদেশের

রুমেল খান ॥ ‘গত দুই ম্যাচে ছেলেরা যথেষ্ট ভাল খেলেছে। তারা দেখিয়েছে নিজেদের চেয়ে কয়েকগুণ শক্তিশালী দলের বিপক্ষে কিভাবে খেলতে হয়। তারা যেভাবে খেলেছে তাতে আমি খুশি। ভাগ্য সহায় হয়নি বলে আমরা দুটি ম্যাচেই অল্প ব্যবধানে হেরেছি। ইতোমধ্যেই আমরা টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছি। কিন্তু আমাদের এখনও সুযোগ আছে শেষ ম্যাচে জয় দিয়ে শেষ করার। সেই সামর্থ্য ছেলেদের আছে। আমরা শেষ ম্যাচে জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।’ কথাগুলো জেমি ডের। বাংলাদেশ অনুর্ধ-২৩ জাতীয় ফুটবল দলের ব্রিটিশ এই কোচ চান তার শিষ্যরা আজ মঙ্গলবার যেন বাহরাইনের ইসা টাউনের খলিফা স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭টায় প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কাকে হারানোর লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামে। আর সেটা সম্ভব হলেই এএফসি অনুর্ধ ২৩ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে কিছুটা তৃপ্তি নিয়ে হলেও দেশে ফিরতে পারবে তারা। লঙ্কানদের হারানো লক্ষ্যে সোমবার অনুশীলন করে বাংলার যুবারা। রিকভারি সেশন হিসেবে এদিন তারা কেবল জিম করে এবং পুলে গিয়ে সাঁতার কাটে। এই আসরে বাংলাদেশ কখনই বাছাইপর্বে গ্রুপ পর্বের গ-ি পেরুতে পারেনি। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। তবে আগের আসরগুলোর ব্যর্থতার চেয়ে এবারের ব্যর্থতার আকাশ-পাতাল তফাত আছে। আগের আসরগুলো লাল-সবুজরা অসহায় আত্মসমপর্ণ করে বিদায় নিয়েছিল। অথচ এবার তারা বিদায় নিয়ে কঠিন লড়াই ও প্রতিরোধ করে, গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে। লঙ্কার বিপক্ষে প্রথম জয়টি তুলে নেয়ার একটা সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে বাংলাদেশের সামনে। পরিসংখ্যান বলছে বাংলাদেশের জন্য সহজ প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। সিনিয়র পর্যায়ে দু’দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ১৭ বার। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ১১ ম্যাচে। ড্র করেছে ২টি এবং হেরেছে ৪টিতে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে লাল-সবুজরাই। যেখানে বাংলাদেশ আছে ১৯২তম অবস্থানে। সেখানে শ্রীলঙ্কা আছে ২০১ নম্বরে। এবারের বাছাইপর্বে ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ মধ্যপ্র্রাচ্যের দুই দেশ বাহরাইন এবং ফিলিস্তিনের সঙ্গে ১-০ গোলে হেরেছে। আর এই দু’দলের কাছেই লঙ্কানরা হেরেছে ৯-০ গোলে। হারার আগেই হার না মানার যে মানসিকতার বীজ শিষ্যদের মধ্যে বুনে দিয়েছেন কোচ জেমি ডে, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। বাহরাইন এবং ফিলিস্তিনের কাছে লড়াকু হারই তার প্রমাণ। এই দুই ম্যাচ এবং সাম্প্রতিক সময়ে খেলা প্রস্তুতি ম্যাচগুলোই বলে দিচ্ছে বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবল। আত্মবিশ্বাসী ভর করে এএফসি অনুর্ধ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম জয়টা অর্জন করে নতুন ইতিহাস রচনা করতেই পারেন সুফিল-মতিন মিয়ারা। বাছাইপর্বে ‘বি’ গ্রুপের অন্য দল ফিলিস্তিন ও বাহরাইন ইতোমধ্যে ২ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পৌঁছে গেছে গ্রুপের শীর্ষে। আর এই গ্রুপ থেকে তাই চূড়ান্ত পর্বের টিকেট পাওয়াটা এই দুই দলেরই অনেকটা নিশ্চিত। পয়েন্টশূন্য বাংলাদেশ কম গোল হজম করায় টেবিলে শ্রীলঙ্কা থেকে ওপরে। তারা আছে তৃতীয় স্থানে। টেবিলের সর্বনি¤œ স্থানে আছে লঙ্কানরা। পরপর দুই ম্যাচ হেরে যাওয়াতে যেমন চূড়ান্ত পর্বের স্বপ্নটা প্রায় শেষ বাংলাদেশের। সেই সঙ্গে অলিম্পিক ফুটবল খেলতে টোকিওর টিকেট পাওয়ার আশাও শেষ। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অন্তত জয় নিয়ে দেশে ফেরার প্রত্যাশা টিম বাংলাদেশের। এএফসির এই যুব টুর্নামেন্ট হয়ে আসছে ২০১২ সাল থেকে। কিন্তু বাংলাদেশ কখনই গ্রুপ পর্বটা পেরুতে পারেনি। মোট ১১ ম্যাচ খেলে একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করতে পারাটাই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সব থেকে বড় সাফল্য। আজ শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারলে এই টুর্নামেন্টে প্রথম জয়ের ইতিহাস রচনা করতে পারবে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, এশিয়ার ৪৭ দেশের মধ্যে পাকিস্তান, ভুটান, গুয়াম ও নর্দান মারিয়ানা ছাড়া সবাই অংশ নিচ্ছে অলিম্পিক ফুটবলের বাছাইয়ে। ১১ গ্রুপে ভাগ হয়ে বাছাইপর্ব খেলার পর প্রতি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন, সেরা ৪ রানার্সআপ দল ও আয়োজক থাইল্যান্ড খেলবে চূড়ান্ত পর্বে। আগামী বছর ৮-২৬ জানুয়ারি থাইল্যান্ডে হবে চূড়ান্ত পর্ব। সেখান থেকে শীর্ষ তিনটি দল পাবে টোকিও অলিম্পিকের ছাড়পত্র। বাহরাইন যাওয়ার আগে কম্বোডিয়াকে হারানো ম্যাচের জাতীয় দলে ১১ খেলোয়াড় আছেন অলিম্পিক দলে। কাতারে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে যুবারা ১-০ গোলে হারিয়েছে আল-শাহানিয়াকে এবং ১-১ গোলে ড্র করে আল-এ্যারাবিয়ার সঙ্গে।
×