ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেক্সিটের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি আজ

কর্তৃত্ব এমপিদের হাতে

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ২৭ মার্চ ২০১৯

কর্তৃত্ব এমপিদের হাতে

ব্রেক্সিট সঙ্কট নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে একদিনের জন্য পার্লামেন্টে আলোচ্যসূচীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিলেন ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা। ইইউ থেকে বিচ্ছেদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র পরিকল্পনা ফের প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর পার্লামেন্টে আলোচ্যসূচীর নিয়ন্ত্রণ নিলেন আইনপ্রণেতারা। এর ফলে ব্রেক্সিট সঙ্কট নিরসনে একটি উপায় বের হলো। আজ বুধবার আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টে ব্রেক্সিটের কয়েকটি উপায় বিষয়ে ভোটাভুটি করবেন। ব্রাসেলসের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার চুক্তি করতে সম্মত হওয়া যায় কি না এ বিষয়ে পার্লামেন্টকে দিকনির্দেশনার সুযোগ দিতেই এ ভোট হবে। এরপর সরকারকে সেদিকে ধাবিত করার চেষ্টা করা হবে। ২০১৬ সালের ইইউ গণভোটের প্রায় তিন বছর পর এবং ব্লক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবিত সময়সীমার মাত্র চারদিন আগেও এটা পরিষ্কার নয় যে, কখন কিংবা আদৌ ব্রেক্সিট হবে কি না। এ বিষয়ে পার্লামেন্ট এবং পুরো জাতি এখনও বিভক্ত। এই দিকনির্দেশনামূলক ভোটের পর প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে তাঁর নিজ দলের আইনপ্রণেতা এবং মন্ত্রীদের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। যদিও তিনি বলেছেন, তথাকথিত দিকনির্দেশনামূলক ভোটের ফল মানতে সরকার বাধ্য নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া বিষয়ক বিভাগের এক মুখপাত্র বলেন, সরকার সব সময় বাস্তবসম্মত আহ্বান জানাবে- কেবল ইইউর সঙ্গে সমঝোতামূলক কোন উপায়ই বিবেচনা করা উচিত। ব্রেক্সিটমন্ত্রী স্টিফেন বার্কলে রবিবার বলেন, পার্লামেন্ট যদি ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেয়, তাহলে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি সেটা সমর্থন করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মেও এটা পরিষ্কার বলে দিয়েছেন যে, তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারের পরিপন্থী কোন প্রস্তাব তিনি বাস্তবায়ন করবেন না। সোমবারের ভোটের বিষয়টি উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতা অলিভার লেটউইন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেন যে, দুই বছর ইইউর সঙ্গে আলোচনার পর তিনি যে চুক্তি করতে সম্মত হয়েছেন, সেটা পাস করার মতো সমর্থন এখনও হয়নি। তবে তাঁর পরিকল্পনা এ সপ্তাহেই তৃতীয়বারের মতো পার্লামেন্টে পেশ করার বিষয়টি বাতিল করেননি তিনি। আর বৃহস্পতিবারই সেটা পার্লামেন্টে পেশ করা হতে পারে। দ্য সান প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, রবিবার তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তাঁর দলের সংশয়বাদীরা যদি তাঁর চুক্তির সমর্থন করেন, তবে তিনি পদত্যাগ করতে পারেন। তাঁর দলের কিছু কিছু আইনপ্রণেতা ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে তাঁর পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। সরকারের অবস্থান চ্যালেঞ্জ করে জুনিয়র তিন মন্ত্রী পদত্যাগ করায় পার্লামেন্টে লেটউইনের প্রস্তাব ধারণার চেয়েও বেশি ভোটে পাস হয়েছে। লেটউইনের প্রস্তাব ৩২৯ ভোটের ৩০২ ভোটে পাস হয়। ব্রেক্সিট বিভাগের মুখপাত্র বলেন, সংশোধনীটি... আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে ভারসাম্য বিনষ্ট করবে এবং ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক ও অকল্পনীয় উদাহরণ সৃষ্টি করবে। ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বলেন, কোন একটি বিষয়ের ফল কী হতে পারে, সেটা যাচাই না করে, কোন সরকারই এর ফলের প্রতি পুরোপুরি সমর্থন দিতে পারে না। বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিন আইনপ্রণেতাদের সমর্থন করা যে যেকোন প্রস্তাব জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি উত্থাপন করেন। ভোটের পর পার্লামেন্টে তিনি বলেন, ‘এই হাউসের এটা অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত কোন চুক্তি জনগণ সমর্থন করে কি না সেটা তাদের ওপর ছেড়ে দেয়া। আগের শর্ত অনুযায়ী ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে ব্রিটেনকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছিল। ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থার কারণে গত সপ্তাহে ইইউ এ সময়সীমা কিছুদিন বৃদ্ধি করে। এ সপ্তাহে যদি প্রধানমন্ত্রী মের চুক্তি পার্লামেন্টে পাস হয়, তবে ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবে আগামী ২২ মে। আর যদি সেটা না হয়, তবে আগামী ১২ এপ্রিলের আগে নতুন পরিকল্পনা পেশ করতে হবে। গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাস্ক বলেন, ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে ব্রিটেনের জন্য আগামী ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সব রকমের উপায়ই উন্মুক্ত রয়েছে। সেটা হতে পারে কোন চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে যাওয়া, আরও দীর্ঘ সময় বৃদ্ধি করা কিংবা আর্টিকেল ৫০ রদ করে ইইউতেই থেকে যাওয়া। এর আগে ১২ মার্চ ১৪৯ ভোটে এবং ১৫ জানুয়ারি ২৩০ ভোটে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের পরিকল্পনা পার্লামেন্টে হয়।-এএফপি, বিবিসি ও গার্ডিয়ান
×